বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সিগমা গ্রুপের একটি তৈরী পোশাক কারখানার ৭০৩জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ মূল ফটকের দেয়ালে নোটিশ লাগিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ।
মহামারী করোনা ভাইরাসের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আচমকা কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বিপাকে পরেছে অনেক শ্রমিকরা। তাৎক্ষনিক তারা কারখানার সামনে বিক্ষোভও করেছে।
শনিবার সকালে আশুলিয়ার ধনাইদ এলাকার সিগমা গ্রুপের ‘সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড’ কারখানাটির মুলফটকের দেয়ালে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নোটিশ ও নামের তালিকা লাগানো দেখতে পায় শ্রমিকরা। তবে নোটিশটিতে ১৮তারিখ লেখা রয়েছে।
শিল্প পুলিশ-১এর সহকারী পুলিশ সুপার জানে আলম খান বলেন, ৭০৩জন শ্রমিক ছাঁটাই করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, মহামারী করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সকল কারখানার মালিক পক্ষকে বলা হয়েছে তারা যেন কোন শ্রমিক ছাঁটাই না করে। তারপরও তারা শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। বিষয়টি মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমন্বয় করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্বাধীন বাংলা গামের্ন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আল কামরান জানান, রাতের যে কোন সময় কর্তৃপক্ষ শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের নোটিশ লাগিয়েছে। হঠাৎ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কারনে এই করোনার দূযোর্গের মধ্যে আরেকটি দূযোর্গ শ্রমিকদের মাথায়। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই দেশের বাড়িতে আছে। যারা এখানে রয়েছে তারা কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ করেছে।
তিনি বলেন, মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আশুলিয়া শিল্প পুলিশের একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে কলকারখানা পরিদর্শককেও। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পূনর্বহাল না করা পর্যন্ত আগামীকাল (রবিবার) থেকে কারখানার সামনে কর্মসূচীর মাধ্যমে আন্দোলন করার কথাও জানান এই শ্রমিক নেতা।
কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়- সারা বিশ্বজুরে মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) সংক্রমিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের সকল রপ্তানীজাত পণ্যের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সকল ক্রয়াদেশও বাতিল হয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই গত পহেলা এপ্রিল হতে ৩১মে পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১২ এবং ১৬ অনুযায়ী কারখানা লে-অফ ঘোষনা করা হয়।
এঅবস্থায় আগামী দিনগুলোতে কারখানা পূর্ণ মাত্রায় পরিচালনা করার সম্ভাবনা না থাকায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১২, ১৬ এবং ২০ অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল ’২০ অপরাহ্ন হতে ছাঁটাই করা হলো।
সরকারি ডাক বিভাগ খোলা সাপেক্ষে ছাটাইকৃত কর্মচারীর স্থায়ী ঠিকানায় ছাঁটাই সম্পর্কিত পত্র প্রেরনের কথাও বলা হয় নোটিশে।
করোনা পরিস্থিাত স্বাভাবিক হওয়া সাপেক্ষে ছাঁটাইকৃত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের আইনানুগ পাওনাদি ট্রাস্ট ব্যাংক এর মাধ্যমে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে ৭মের মধ্যে প্রদানের সিদ্ধান্তের কথাও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কারখানার সামনে উপস্থিত ছাঁটাইকৃত শ্রমিক শোভা, মনোয়ারা, সামছুন্নাহার, ফাতেমা, আশরাফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, কাজলী বেগমসহ একাধিক শ্রমিকরা বলেন, হঠাৎ করেই শ্রমিকদের সাথে আলোচনা ছাড়াই মালিকপক্ষ লে-অফ ঘোষনায় তারা হতবাক ও বিস্মিত হয়েছেন। কারখানাটিতে শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। ফলে শ্রমিকদের মাঝে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিবে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। চাকরি হারিয়ে কিভাবে চলবে তাদের সংসার এই চিন্তায় অনেক শ্রমিক কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
শ্রমিক ছাঁটাই প্রসঙ্গে সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মিজানুর রহমানের মুঠফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও সে ফোন রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।