Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেসবুকে পোষ্ট দেখে এমপির নির্দেশে খাবার পাঠালেন উপজেলা চেয়ারম্যান

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ৬:৩৫ পিএম

করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন, দফায় দফায় সরকারী ছুটি বৃদ্ধি, ঘর থেকে বের হতে বারণ, ঘরে থাকুক নিরাপদে থাকুন, মানুষকে সচেতন করতে রাজশাহী ১ আসনের সংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম সরকার, সহকারী কমিশনার ভূমি মোহাম্মদ ইমরানুল হক, গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি মো: খাইরুল ইসলামসহ প্রশাসন, সেনাবাহনী, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবকগণ দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।

গরীব দুস্থ্য কর্মহীন মানুষের জন্য ওমর ফারুক চৌধুরী এমপির হটলাইনে কল কিংবা সংবাদ দিয়ে প্রতিদিন খাবার পাচ্ছেন শ শ মানুষ। উপজেলা চেয়ারম্যানসহ নেতা কর্মী, দলীয় স্বেচ্ছসেবক দল কঠোর পরিশ্রম করে অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন খাবার বিতরণ। অল্প বয়সে এক বিধবা নারী ত্রাণ পায়নি নিউজটি করব ভাব ছিলাম, কিন্তু চক্ষুলজ্জায় ওই নারীর নামও প্রকাশ করা যাবে না। তাই আমার আইডি থেকে পোষ্ট দিয়েছিলাম।
না খেয়ে থাকলেও বলতে পারেন না অল্প বয়সে বিধবা হওয়া এক নারী, আমি তার জন্য বলেছিলাম কিন্তু মেয়র, কাউন্সিলর, কোন তালিকায় নাম নেই।

বর্তমানে ওই নারী পরিবারে থাকেন ১ মেয়ে, ২ ছেলে, বৃদ্ধা শাশুড়ি, ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত তার মা।

এবার হটলাইন নয় ফেসবুক পোষ্ট দেয়ে এমপি মহোদয় ঠিক থাকতে পারেন নি, তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে নির্দেশ দেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এ প্রতিবেদকের সাথে মোবাইলে কথা বলেন, নারীর লোকেশন নিয়ে উনার গাড়ীতে করে চালক সারোয়ার ও সহকারী সাইবুর রহমানকে খাবার দিয়ে পাঠালেন। খাবারের মধ্যে ছিল ১৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ৩ কেজি আলু, ১ কেজি লবণ, তেলসহ শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার। খাবার পেয়ে ওই নারী ও তার ৯০ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়ির এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, উপজেলার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের জন্য আল্লাহর নিকট প্রাণ খুলে দোয়া করেন যেন উনারা সুস্থ্য থেকে গরীব, কর্মহীন দুস্থ্য মানুষের জন্য সেবা করে যেতে পারেন। উপজেলা চেয়ারম্যান দিন রাত ত্রাণের ফেরিওয়ালা হিসেবে ত্রাণের বস্তা নিয়ে উপজেলা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলেছেন। তার যেন ক্লান্তি নেই।

আমি প্রায় ওই নারীর সাহায্যের জন্য ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার মোফাজ্জুল হোসেন মোফাকে বলি, আওয়ামীলীগের ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমানকে বলি।

কিন্তু আজকে কোন একটি পারিবারিক সমস্যার জন্য আমার বাড়ী ওই নারী আসেন তখন জানতে পারি সে পৌরসভা থেকে প্রধান মন্ত্রীর উপহার ১০ কেজি চাউল পান নি এমন কি কোন ত্রাণ সাহায্য পাননি। ওই নারীর জন্য গোদাগাড়ী আফজি পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকও তদবির করেছিলেন। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল আমি বভিন্ন সময় ওই পারিবারটি সাহায্য করে থাকি। বাড়ী থেকে ৬ কেজি চাউল, ৪ কেজি আলু, দেড় ১ কেজি ছোলা, ১ হালি ডিম, পটল, করোলা দিয়ে উনাকে বাড়ী পাঠালাম। তারপর ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার মোফকে রিং করে জানতে পারলাম সে যাকে লিখতে দিয়ে ছিল সে ভুল করে উনার নাম ছেড়ে দিয়েছে। তাই পৌরসভায় গিয়ে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন দ্বিতীয় দফায়ও। তিনি আরও জানান, অবস্থাশালী লোকের তালিকায় নাম আছে, তালিকায় স্ত্রী ও স্বামী ২ জনের নাম আছে, আমার, মেয়র ও মহিলা কাউন্সিলর তালিকা এক জায়গায় করে দেখা যায় এক ব্যক্তি তিন জায়গা থেকে পেয়েছেন। এ গুলি সংশোধন করা প্রয়োজন কিন্তু মেয়র সাহেব আমূলে নিচ্ছেন না। তিনি আরও দাবী করেন আমার তালিকায় কোন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি হয় নি।
তবে ওই মহিলার পরিবার স্বীকার করেছেন কাউন্সিলর মোফা মাঝে মধ্যে বাজার করে দেন তাদের জন্য।
এসএম হাবিবুর রহমানকে মোবাইল করা হলে তিনি জানান, আগামীতে কোন সুয়োগ আসলে দেয়া হবে তবে এবার কোন সুযোগ নেই।
ওই নারীর শশুর আব্বা একজন নামকরা আলেম ছিলেন। তিনি অনেক বছর দেওপাড়া ইউনিয়নের রাজাবাড়ী এলাকায় মসজিদে ঈমামতি করতেন। উনা মৃত্যুর পর উনার ছেলে মহিলার স্বামীও ঈমামতি করতেন। কিন্তু কুকুরের কামড়ে স্বামী মারা যাবার পর সংসারে হাল হাল ধরেন মহিলা। কিন্তু বর্তমানে ওই মহিলা হার্টের রোগি। তার প্রতিজ্ঞা ছেলে মেয়েদের পড়া লিখা করাতে হবেই। স্বামীর অংশের বসত ভিটা বিক্রির টাকা দিয়ে কোন রকমে থাকার জন্য দুটি ঘর করেছেন। বড় ছেলেকে কোন ভাবে গোদাগাড়ী ইয়াতিম খানায় পাড়ার ব্যবস্থা করা হয়, ছাত্র হিসেবে সে কিন্তু খারপ ছিল না। সে জেদ করে ইয়াতিম খানা ছেড়ে দেয়। বাড়ীতে খারাপ ছেলেদের সাথে মিশে সে নষ্ট হয়ে যায়। এখন ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করে স্ত্রী নিয়ে বসবাস করে। পরিবারের সাথে যোগাযোগ নেই। ছোট ছেলেটা গোদাগাড়ীর আল ইসলা ইসলামী একাডেমী থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। সে বিকালে শুধু চা বিক্রি করে সংসার চালাত সেটা আবার লকডাউন থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে। মেয়েটি অভাবের সংসারে থেকেও গোদাগাড়ীর মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা থেকে এসএসসি পাস করেছে। আমি ওই বিদ্যালায়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ায় মেয়েটি বই, খাতা, কলম থেকে সব সুয়োগ সুবিধা পেয়েছিল। সে এবার গোদাগাড়ী মহিলা ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার শাশুড়ি থাকেন তার সাথে, অসুস্থ্য মাও থাকেন। এ করুন পরিবারে কষ্ট থেকে উনা থেন আল্লাহ সাহায্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ