Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অ্যাবেটাবাদে বদলে যাওয়া পাকিস্তান

প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ইংল্যান্ড সফরের আগে পাকিস্তানের অ্যাবোটৃাবাদে সামরিক ক্যাম্পে বিশেষ অনুশীলন করে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। প্রায় দুই মাসের ঐ ক্যাম্পে নিজেদের আমূলে বদলে না ফেললেও ক্রিকেট মাঠে একটি যুদ্ধের আবহ ঠিকই আনতে পেরেছে মিসবাহ বাহিনী। লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনে প্রথমবারের মত খেলতে এসেই মিসবাহ’র সেঞ্চুরি উদযাপনের যে ধরণ দেখেছিলো বিশ্ব, সেই একই ভঙ্গিতে হল ২০ বছর পর পাকিস্তানের লর্ডস জয়োদযাপন। তবে এবার নেতৃত্বে পাক অধিনায়ক ছিলেন না, ছিলেন দলের আরেক ‘বুড়ো’ ইউনুস খান। তার নেতৃত্বেই হল সম্মিলিত সামরিক স্যালুট আর বুক ডন! তবে এটা যতটা না জয় উদযাপনের ভঙ্গি হিসাবে প্রকাশ পেল, তার চেয়েও বড় হয়ে ধরা দিল পাকিস্তান দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে! অনেদিন থেকেই দলের ভেতরকার দ্ব›দ্ব চাউর হচ্ছিলো সংবাদ মাধ্যমে। যার খেসারত হিসেবে টি-২০ বিশ্বকাপের গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় দলটি। নেতৃত্ব হারায় আফ্রিদী। তারপরও এমন ঘুরে দাঁড়ানো অনেকটাই একা হাতে সামলেছেন দলপতি মিসবাহ, সঙ্গে পেয়েনে নতুন গুরু মিকি আর্থারকে।
বয়স ৪২ পেরিয়েছে। এই বয়সেও এই যুগে দলে টিকে থাকা যেখানে বিস্ময়কর, সেখানে রীতিমত দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকেই। বুড়ো হাড়টা আরো একটু শানিয়ে নিতেই গিয়েছিলেন সেনা প্রশিক্ষনে। সেই স্মৃতি স্বরণেই তার এই উদযাপন। ম্যাচ শেষে মিসবাহ বলেন, ‘আমি যেটা করেছিলাম, পুরো দলই সেটা করতে চাইল। এটা আসলে সেই সব সামরিক কর্মিদের উদ্দেশ্যে আমাদের ছোট্ট নিবেদন, যারা আমাদের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করেছিল।’
সে উদযাপন মিসবাহ’রা যেভাবেই করুন না কেন ব্যপারটা নিশ্চয় ভালো লাগেনি অ্যালিস্টার কুকদের। চোখের সামনে প্রতিপক্ষেন বিজয় উল্লাস কারই বা ভালো লাগে। সেটা স্বীকারও করলেন কুক, ‘এতে আমরা মনে কষ্ট পায়নি, তবে সেই মানসিক উত্তেজনার সময় এটা দেখতে মোটেও ভালো লাগছিল না। আসলে আপনি যখন ম্যাচ হারবেন, প্রথম ২০ মিনিটের মধ্যে যদি এমনটা হয়, আপনার মোটেও ভালো লাগবে না।’ তবে বাস্তবতা মেনে কুক এও স্বীকার করেন, ‘পাকিস্তানের যা খুশি করার অধিকার ছিল। এটা তাদের অনেক ঐক্যবদ্ধ করেছে, বুঝেয়ে দিয়েছে আমরা কি চ্যালেঞ্জের মুখে ছিলাম।’ হারের ময়না তদন্তে কুক বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি বাজে শট খেলেছি। আশা করি ওল্ড ট্রাফোর্ডে সৃষ্টিকর্তা আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকাবেন।’ আগামী ২২ জুলাই ম্যানচেস্টারের শুরু হবে ৪ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।
ইয়াসিরের কীর্তি গাঁথা
# লর্ডসে ১০ উইকেট নেওয়া প্রথম লেগ স্পিনার ইয়াসির।
# লর্ডসে ১০ উইকেট পাওয়া প্রথম পাকিস্তানি বোলার ইয়াসির। আগের সেরা ছিল ওয়াকার ইউনিসের (১৫৪ রানে ৮ উইকেট)। ১৯৯৬ সালের সেই টেস্টই ছিল লর্ডসে পাকদের শেষ জয়।
# শুধু নিজ দেশই নয়, লর্ডসে ১০ উইকেট পাওয়া প্রথম এশিয়ান বোলারও ইয়াসির!
ইয়াসিরের আগে লর্ডসে সবশেষ কোনো স্পিনারের ১০ উইকেট ছিল সেই ১৯৭৪ সালে। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনে ৭১ রানে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ডেরেক আন্ডারউড।
# বিদেশী স্পিনারদের মধ্যে এর আগে লর্ডসে ১০ উইকেট পাওয়ার একমাত্র কীর্তি ছিল সনি রামাধিনের। ১৯৫০ সালে ১৫২ রানে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অফ স্পিনার।
# ১৩ টেস্টে ইয়াসিরের নামের পাশে ৮৬ উইকেট। সমসংখ্যক টেস্টে তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পারেননি কেউই।
এখন তার সামনে উঁকি দিচ্ছে ১২০ বছরের পুরোনো এক রেকর্ডÑ দ্রæততম ১০০ টেস্ট উইকেট। ইংলিশ বোলার জর্জ লোহম্যান ১৮৯৬ সালে ১৬ টেস্টে গড়েছিলেন এই কীর্তি। কে জানে ইংল্যান্ড সফরের বাকি ৩ টেস্টের মধ্যেই রেকর্ডটি গড়ে ফেলেন কি না ইয়াসির!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অ্যাবেটাবাদে বদলে যাওয়া পাকিস্তান
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ