বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছেনা অস্বচ্ছল পরিবারের জন্য নেয়া সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীতে। স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কানেকশনে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় প্রায় চার হাজার ভুয়া কার্ডের চাল দীর্ঘদিন ধরে কালো বাজারে বিক্রীর অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ওই চার হাজার ভুয়া কার্ড বাতিল করে স্থানীয় প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিষয়ে কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, তা স্পষ্ট করেনি প্রশাসন। তবে উপজেলার ১২ ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির প্রায় তিন হাজার আট শ’ ২৪ কার্ড বাতিল করে অস্বচ্ছল পরিবারের সদস্যদের নামে নতুন কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।
জানা যায়, সরকারের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ২০ হাজার ১৫৩ কার্ডধারী সুবিধাভোগীর মধ্যে প্রায় চার হাজার ভুয়া কার্ড তৈরির মাধ্যমে ডিলারসহ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে এ সংক্রান্ত কমিটি যাচাই বাছাইয়ের নির্দেশ দিলে এপরিমান কার্ড সংশোধন করা হয়েছে। এরপরও অধিতকর যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষে সংশোধিত তালিকা সকল ইউনিয়নের ডিলার এবং ইউনিয়ন পরিষদে টানিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপরও বর্তমান তালিকায় আরও শতকরা কমপক্ষে ১০ ভাগ নাম রয়েছে যারা স্বচ্ছল, বিত্তশালী, মেম্বর, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী।
খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩৫৭টি, টিয়াখালীর ৮৭৮টি, লালুয়ায় ৬৩৩টি, মিঠাগঞ্জে ৩৭৪টি, নীলগঞ্জে ৩৫২টি, মহিপুরে ৯৬টি, লতাচাপলী ২৪৯টি, ধানখালীতে ১২৯টি, ধুলাসারে ৩১টি, বালিয়াতলী ২৪৬টি, ডালবুগঞ্জ ২৫৯টি এবং চম্পাপুরে ২২০ টি কার্ড সংশোধন করা হয়েছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এ কার্ডধারীরা বছরের মার্চ, এপ্রিল ও সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর পাঁচ মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল নির্দিষ্ট ডিলারদের কাছ থেকে ক্রয়ের সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনা রয়েছে গ্রামে বসবাসরত সবচেয়ে হতদরিদ্র পরিবার, ভূমিহীন, কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, উপার্জনে অক্ষম, বিধবা/তালাকপ্রাপ্তা/স্বামী পরিত্যাক্তা/অসচ্ছ্বল বয়স্ক নারী প্রধান পরিবার এবং যেসব দুঃস্থ পরিবারে শিশু বা প্রতিবন্ধী রয়েছে তারা এ তালিকায় অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু অধিকাংশ কার্ডধারীর বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এছাড়া একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করা যাবেনা। ভিজিডি, ভিজিএফ সহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্তদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না। কিন্তু এসব তালিকায় সরকারি নির্দেশনা না মেনে জনপ্রতিনিধিরা ডিলারদের হট কানেকশনে তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করে ফেয়ার প্রাইস কার্ডভুক্ত করেছেন। প্রভাবশালী, অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের একাধিক বক্তির নামও রয়েছে এ তালিকায়।
এর আগে হাজারো ব্যক্তির নাম মিলেছে যারা নিজেরাই জানেন না তাদের নাম খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির তালিকায় রয়েছে। তিন সহস্রাধিক ভুয়া নামের চাল ডিলাররা খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করে দীর্ঘদিন যাবৎ কালো বাজারে বিক্রী করে অনেকটা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে।
কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর সংশোধিত তালিকা প্রতি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পরিষদ সহ ডিলারদের দোকানে ঝুলিয়ে রাখার জন্য বলা হয়েছে। সংশোধিত তালিকায় নীতিমালা বহির্ভূতভাবে কারও নাম পাওয়া যায় সেটি সংশোধন করা হবে। তবে দীর্ঘদিন প্রায় চার হাজার ভুয়া কার্ডে চাল উত্তোলন করে কালো বাজারে বিক্রীর সাথে জড়িতদের বিষয়ে কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।