Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চিলমারীর বাঁধে করোনায় গৃহবন্দি কর্মহীন মানুষেরা খাদ্য সংকটে, মিলছেনা সাহায্য

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৯ পিএম

জাহেনারা বেওয়া (৮০) স্বামী কসমুদ্দিনকে হারিয়েছেন ৭১’ সালে। এক মেয়ে এক ছেলে কে নিয়ে সংসার গড়েছিলেন। ছেলে মেয়ের বিয়ে হয়ে আলাদা। তিনি অন্ধ চলতেও পারেনা ঠিক মতো। নেই প্রতিবন্ধি কিংবা বয়স্ক ভাতার কার্ড, মেলেনি বিধাবা ভাতা। চিলমারী উপজেলার রমনা মিয়া পাড়া এলাকার বাঁধেই ছিল তার ছোট্ট সাজানো অভাবী সংসার। উচ্ছেদ অভিযানে সরিয়ে নেন ঘরটি কিন্তু নেই থাকার কোন স্থান তাই বাধ্য হয়েই বাঁধের পাশেই নালায় একটি ছোট্ট ছাপরা (ঘর) তুলে কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন যাপন। কষ্টের উপর কষ্ট এখন করোনার থাবা। করোনা ঝড়ে কাঁপছে সারা বিশ্ব নড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশ। আতঙ্ক এখন গ্রামে গ্রামে। বন্ধ হয়ে গেছে দিনমজুরদের আয় রোজগার। বেকার হয়ে গেছে জাহেনারার ছেলেও। অন্ধ এই বৃদ্ধা যদিও এবাড়ি ওবাড়ি ঘুরে কষ্ট করেই চলতো কিন্তু করোনা ভাইরাসের ভয়ে পারছেনা বাড়ি থেকে বেরুতে আবার অন্যের বাড়িতেও পারছেনা যেতে বিত্তবানরা যে বন্ধ করে দিয়েছে যাওয়ার রাস্তা। দিন যাচ্ছে বাড়ছে কষ্ট তবুও নেয়নি কেউ তার খবর। ভাগ্যে জোটেনি একটু সাহায্য। কষ্টভরা মন নিয়ে জাহারানা বলেন বাবারে হামরা গরীব মানুষ হামার দেহি কেডা দেহে, যামরা পায় তামরাই সব সময় পায়। একই এলাকার বোলা বেওয়া ৬ বছর আগে হারিয়েছে স্বামীকে নেই ছেলে মেয়ে। বাস করতো বাঁধের উপর তিনিও সরিয়ে নিয়েছেন থাকার ঘরটি রয়েছেন রাস্তার পাশে। হাত পেতেই চলতো হতো তাকে কিন্তু করোনায় ভয়ে বৃত্তবানরা গেটে দিয়েছে তালা বিপদে পড়েছে বোলো বেওয়াও পাচ্ছেনা বেরুতে পাচ্ছেনা খিটা মেটাতে। সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলেও বোলো বেওয়াও ভাগ্যে জোটেনি এক মুঠো চাল। মিনু বালার ভাগ্যে ১০ কেজি চাল জুটলেও এখনো জোটেনি থাকার একটি স্থান। কখনো রাস্তার ধারে কখনো এ পাড়ায় কখনো অন্যের বাড়িতে কাটছে মিনু বালার কষ্টের জীবন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু জাহেনারা, বোলা বেওয়াই কষ্টে নেই তাদের মতো বাঁধের নিচে আশ্রয় নেয়া শতশত মানুষ করোনার ভয়ে রয়েছে ভিত, রয়েছে বড় কষ্টে। করোনা রেখেছে গৃহবন্দি করে। গৃহবন্দি কর্মহীন মানুষের বাড়ছে কষ্ট তবুও মিলছেনা কোন সাহায্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ