দেশে
করোনা পরিস্থিতিতে জেলার কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে ধারাবাহিক ভিডিও কনফারেন্সের অংশ হিসেবে ২০ এপ্রিল, সোমবার সকালে ঢাকা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে কথা বলেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম । তাঁর বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্যে শিল্প শহর খ্যাত গাজীপুর মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায়
করোনা ভাইরাসের বিস্তার লাভের কারণ ও সঠিক তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহসের সাথে তুলে ধরেন।
ভিডিও কনফারেন্সে গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম জানান, গার্মেন্টস মালিকরা
করোনায় সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) তৈরির নামে অন্য পণ্য তৈরি করছেন, অন্য কাজ করছেন । শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন কিভাবে এই জেলায়
করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গাজীপুরের এসপি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জেলাটা ভালো ছিল। অনেক ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। কিন্তু গার্মেন্টস কারখানার সমন্বয়ের অভাবে আমাদের গাজীপুর জেলা আজ
করোনায় আক্রান্ত।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘বিজেএমইএ‘র সভাপতি রুবানা হক ২৫ এপ্রিলের পর চিঠি দিয়ে কিছু কারখানা খোলার কথা জানিয়েছেন এবং শ্রমিক পরিবহনে বাস চেয়েছেন।’
পরে পুলিশ সুপার বলেন, গাজীপুরে অনেক পোশাক শিল্প কারখানায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বানানোর কথা বলে অন্য পণ্য বানানো হচ্ছে। শ্রমিকদের ডেকে এনে কাজ করালেও তাদেরকে বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না। আগামীতে পোশাক কারখানা চালু করতে আরও শ্রমিকদের ডেকে আনা হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়তে পারে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করতে হবে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার বলেন, আমাদের জেলাটা ভালো ছিল। অনেক ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। কিন্তু গার্মেন্টস কারখানার সমন্বয়ের অভাবে আমাদের গাজীপুর জেলা আজ
করোনা আক্রান্ত। যখন গার্মেন্টস খুলে দিলো এবং সর্বত্র থেকে শ্রমিক আসতে শুরু করল এবং নারায়ণগঞ্জের বর্ডার কালিগঞ্জ এবং কাপাসিয়া ওই দিকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো। ওই এলাকাতেই প্রথম একজন শনাক্ত করি। গাজীপুরে
লকডাউন কার্যকর করার প্রধান সমস্যা এখন গার্মেন্টস কারখানা। এখানে অনেক মালিক বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা বলে দিচ্ছেন না। আবার অনেকেই পিপিই ও মাস্ক বানানোর নামে কারখানা খুলে অন্য কাজ করাচ্ছেন।
পুলিশ সুপারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব। আমি পরবর্তীতে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে বসব।
কনফারেন্সে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর গাজীপুর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নতুন করে শ্রমিক আনা ঠিক হবে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শ্রমিকদের থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিতে নির্দেশনা দেন।
এ দিকে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গাজীপুর জেলায়
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সঠিক কারণ, গার্মেন্টস মালিকদের ভূমিকা, শ্রমিকদের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য রাখায় জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।