Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেড় বছরে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে অত্যাধুনিক দশতলা ভবন

প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ কয়েকবার দলীয় কার্যালয় পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর আশির দশকের শুরু থেকেই ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত এ ভবনটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘদিনের পুরনো এ ভবনটি ভেঙে এবার নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
গতকাল রোববার সকালে নতুন ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে দীর্ঘদিনের দলীয় এই পুরনো ভবনটি ভাঙ্গার কাজ উদ্বোধন করেন দলের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এ সময় তিনি বলেন, বহুতল ও দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত দলীয় কার্যালয় নির্মাণের স্বার্থেই ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে। পুরনো এ বিল্ডিং ভেঙ্গে নতুন দশতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অত্যাধুনিক করার প্রক্রিয়া আজ শুরু হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো যেন তাদের কার্যক্রম একই ভবন থেকে পরিচালিত করতে পারে আমরা এমন একটি ভবন খুঁজছি। আশা করি খুব শিগগিরই এর সমাধান হবে।
এ সময় উপস্থিত দলের সভাপতিমÐলীর সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ভবন নির্মাণের বিষয়ে বলেন, নতুন এ ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি টাকা এবং সময় লাগবে দেড় বছর। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় গড়ে তোলা হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিস¤পন্ন বহুতল ভবন। দশতলা এ ভবনে থাকবে ৬-৭ তলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়।
তিনি বলেন, ৬.৯ কাঠার উপর আমাদের নতুন ভবনটি নির্মাণ হবে। এটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন ১০তলা বিশিষ্ট হবে। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য আলাদা আলদা ফ্লোরের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও এ ভবনে একটি কনফারেন্স রুম করা হবে যার ধারণক্ষমতা হবে সাতশত থেকে এক হাজার।
এছাড়া এই অত্যাধুনিক ভবনটিতে থাকবে কনফারেন্স হল, সেমিনার রুম, ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, ক্যান্টিন ও সাংবাদিক লাউঞ্জ। থাকবে ডরমেটরি। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাধারণ স¤পাদকের জন্য বেশ পরিসরে পৃথক কক্ষ ও সাথে বেলকনি থাকছে। পুরো কার্যালয়টি করা হবে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ওয়াইফাই জোন। ইতিমধ্যে কার্যালয়ের নতুন ভবনের থ্রিডি নক্সা অনুমোদন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মোশারফ হোসেন আরও জানান, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরনো ভবনের সব অফিস আশপাশের ‘সুবিধামতো স্থানে’ সরে গেছে। শনিবার সব অফিসই খালি হয়ে যায়। রোববার সকালে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়েছে।
ভবন ভাঙার কাজ উদ্বোধন শেষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহŸান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাক সন্ত্রাসী বাঁচানোর জন্য এক ধরনের কৌশল মাত্র। আন্দোলনের টানা ৯০ দিন মানুষ পুড়িয়ে যে অপকর্ম করেছে সেটা ঢাকার জন্যই তারা এখন এ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
হানিফ বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইস্যুতে দেশবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রুখে দাঁড়িয়েছে। সেই সময় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে তার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই বিএনপির উচিত সরকারকে নৈতিকভাবে সহযোগিতা করা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান।
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার কেএম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর পালাক্রমে নেতৃস্থানীয় নেতাদের বাসায় বসে দল পরিচালনার নীতি-কর্মসূচি গ্রহণ করা হতো। কোনও অফিস ছিল না। তবে ১৯৫৩ সাল থেকে ৯ কানকুন বাড়ি লেনে অস্থায়ী একটি অফিস ব্যবহার করা হতো। ১৯৫৬ সালে পুরান ঢাকার ৫৬ সিমসন রোডে দলের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করার পর এর তৎকালীন সাধারণ স¤পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯১, নবাবপুর রোডে দলের অফিস নেন। এর কিছুদিন পর অস্থায়ীভাবে সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলের গলিতে কিছু দিন বসেন নেতারা। পরে পুরানা পল্টনে দু’টি স্থানে দীর্ঘদিন দলের অফিস ছিল। স্বাধীনতা-উত্তর ১২২, সার্কিট হাউস রোডে কিছুদিনের জন্য আওয়ামী লীগের অফিস ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আবারও পুরান ঢাকার নবাবপুরে অফিস স্থানান্তরিত হয়। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর বর্তমান অফিসটি ভাড়া নেয়া হয়। এ ভবনের দোতলায় তখন রেস্টুরেন্ট ছিল। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ওই রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিয়ে সেখানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও আরেক পাশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অফিস করা হয়। ভবনটিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় শুধু নয়, স্বেচ্ছসেবক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় অফিস রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দেড় বছরে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে অত্যাধুনিক দশতলা ভবন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ