Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেনারেল হাসপাতাল করোনা ডেডিকেটেড করার প্রস্তাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ৪:৫৪ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালটিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত গ্রহনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউজে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি জানাজানির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতেই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। জেলা শহরের মাঝখানে অবস্থিত এই হাসপাতালটিকে কোন বিবেচনায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেলার নাগরিক সমাজও। জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে এসংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেলে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এর ফলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হবে। আর সদর হাসপাতালের কার্যক্রম জেলা সদরের ঘাটুরাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ওই সভায়। এই খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরের মানুষের মধ্যে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালের আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ওষধ দোকানীরা। হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভেতরে রয়েছে নার্সিং ইনষ্টিটিউট। তাছাড়া হাসপাতাল লাগোয়া সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা, আবাসিক এলাকা, বাজার, মসজিদ, ব্যাংক, একাধিক মার্কেটসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে হাসপাতালের সীমানা ঘেঁষে। সচেতন নাগরিক কমিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারী অর্ডার আছে এই ব্যবস্থা নেয়ার। কিন্তু এটি সারাদেশের জন্যে একটি জেনারেল অর্ডার। পার্টিকুলাররা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পজিশন তারা জানেনা। বিকল্প জায়গা না থাকলে এটা করা যেতো। কিন্তু বিকল্প জায়গাতো রয়েছে। জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল একটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এই হাসপাতালটির সামনে এবং আশপাশে লকডাউনের পরও প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। তাছাড়া হাসপাতালটি শহরের একমাত্র প্রধান সড়কের পাশে। ফলে সহজেই করুনা সংক্রমনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। শহরতলীতে যখন আরেকটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ রয়েছে সেখানে এ ব্যবস্থা করলে মঙ্গল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী বলেন, বিকল্প থাকার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল কেন বাছাই করা হলো তা বোধগম্য নয়। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এবং বেসরকারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এই কাজে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। এ দুটি হাসপাতালকে বাছাই করা সমীচিন হবে। জেলার সিভিল সার্জন মোঃ একরামুল্লাহ প্রস্তাব পাঠানোর স্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে জেলা পর্যায়ের সরকারী হাসপাতালগুলো করোনা ডেডিকেটেড করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই আলোকে আমরা তথ্য উপাত্ত পাঠিয়েছি। এখানে বিকল্প সরকারী কোন হাসপাতাল নেই। তবে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেসরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিকল্প চিন্তায় রেখেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেলা সদর হাসপাতালটিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা কেন্দ্র করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য সদর হাসপাতালের কার্যক্রম আমার এখানে স্থানান্তরের ব্যাপারে আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আমার আর্থিক ক্ষতি হবে জেনেও সবদিক বিবেচনা করে প্রস্তাবে রাজি হয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ