বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মোর স্বামী নাই। মাইনসের বাড়িত কাম করি সংসার চালাং। এ্যালা তো ভাইরাস আসি কাম বন্ধ। কায়ো বাড়ির ভিতরত ঢুকবার দেয় না। দুই দিন থাকি খাবার না পায়ি উপাস আছু। ছোট ছাওয়া দুকনার মুকের পাকে তাকাবার পাও না। এদোন করি কি চলা যায়? হয় হামাক ত্রাণ দ্যান, না হয় মারি ফ্যালান। এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন নূরবানু।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর নগরীর লালবাগ রেলগেট এলাকায় ত্রাণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন অসহায় দুস্থ কর্মহীন মানুষরা। এতে অংশ নেয় নূরবানু সহ শত শত নারী-পুরুষ।
এ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে ত্রাণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তারা সরকারি কোনো ত্রাণ পাননি। ২১, ২২ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে যতটুকু ত্রাণ দেওয়া হয়েছে, তাতে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে।
লালবাগ রেলগেট এলাকার বৃদ্ধ তসলিম মিয়া বলেন, করোনা আসি কারো পৌষ মাস আর কারো সর্বনাশ হওচে। হামার পাকে কারো খোঁজ নাই। এই মহামারিতো হামরা ত্রাণ পাই না। আর নেতারা নিজের ভোটের হিস্যা ঠিক করা নিয়্যা ব্যস্ত।
এদিকে রংপুর মহানগরীর তাজহাট গলাকাটা মোড়, মোল্লাপাড়া ঢাকাইয়াপাড়া, নিসবেতগঞ্জ নজিরেরহাট, সরেয়ারতলসহ বেশ কিছু এলাকায় সরকারি সহায়তা বঞ্চিত কর্মহীন অতিদরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
প্রাণঘাতী করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া নি¤œ আয়ের এসব মানুষ সবচেয়ে বেশি খাদ্য সংকটে পড়েছেন। কাজ না থাকায় ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল বহু মানুষ এখন ঘর ছেড়ে বাইরে বের হয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের গাড়ি বিক্ষুব্ধদের বাধার সম্মুখীন হয়।
দ্রুত সরকারি ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা করা না হলে অনাহারী অসহায় দরিদ্র এসব মানুষ ক্ষুধার জ্বালা নিবারণে লকডাউন অমান্য করে রাস্তায় নামারও হুঁশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর জেলা প্রাশাসক আহসান হাবিব বলেন, সম্প্রতি লালবাগ রেলগেট এলাকার দুটি বস্তিতে ৬৫০ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরে এগারো লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। যাদের মধ্যে দিনমজুর, শ্রমিক, দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষই বেশি। সম্প্রতি নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে সাড়ে ১৬ হাজার পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ দেওয়া চাল বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে এই সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়। এছাড়াও মেয়র ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিন সহস্রাধিক মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।