বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগীরা বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। প্রয়োজনীয় সার্পোট সরঞ্জাম বিহীন একটি জেনারেল হাসপাতাল যেন ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দারের দায়িত্ব পালন করছে। করোনার প্রার্দূভাব নিয়ে গেলে শুধুমাত্র রক্তের নমুনা সংগ্রহ ছাড়া প্রয়োজনীয় কোনো চিকিৎসাই মিলছেনা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে।
এমনই চিত্র দেখা গেলো সোমবার। পজেটিভ আর নেগেটিভের দোলাচলেই চলেগেলো একটি প্রাণ। জেলা শহরে প্রথমবারের মতো ৫৫ বছর বয়সী অসুস্থ এক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে থাকতে পারেন এমনটি আচঁ করতে পেরে উক্ত রোগিকে আইসুলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সর্দি কাশি ও গলা ব্যথা নিয়ে সংশ্লিষ্ট্য সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ৫৫ বছর বয়সী ঐ ব্যক্তি রাঙামাটি শহরের রূপনগর এলাকার বাসিন্দা। গত শনিবার তিনি হাসপাতালের সর্দি-কাশি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। রোববার সকালে তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে করোনা ভাইরাসের উপশম বুঝতে পেরে আইসুলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। এসময় রোগির শরীর থেকে দু’বার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় চট্টগ্রামে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, রোগির অবস্থা খারাপ দেখে তাকে আমরা চট্টগ্রাম রেফার্ড করে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এই ধরনের রোগির ক্ষেত্রে রেফার্ড করতে হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হয়। যথারীতি যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রামের দুইটি হাসপাতাল থেকেই আপাতত পরীক্ষার রিপোর্ঠ না আসা পর্যন্ত এই রোগিকে চট্টগ্রাম না পাঠাতে বলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রোববার দিবাগত রাত সোয়া দুইটার সময় রোগিটি মারা যায়।
রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগের করোনা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, উক্ত রোগিটি শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে মারা গেছে বলে আমরা ধারনা করছি। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত আমাদের পাঠানো রক্তের নমুনার রিপোর্ট আসেনি। রিপোর্ট আসার পর তিনি করোনা রোগি কিনা সেটা জানা যাবে।
এদিকে সোমবার রাত এগারোটার সময় যোগাযোগ করলে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও জানিয়েছেন, এখনো আমাদের হাতে রিপোর্ট আসেনি। এরআগে মারা যাওয়া রোগিকে করোনা আক্রান্তের মতোই বিশেষ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে কবরস্থ করেছে প্রশাসন।
রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, আইসোলশনে থাকা রোগিটির রিপোর্ট যদি পজেটিভ হয়, তাহলে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিট তাকে রিসিভ করবে। আর যদি নেগেটিভ রিপোর্ট আসে তাহলে উক্ত রোগিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ রিসিভ করবে। তাহলে তার সময়োপযোগি চিকিৎসা নিশ্চিতে যেকোন একটিতে স্থানান্তর করা যেত। শুধুমাত্র পরীক্ষার কারন দেখিয়ে চট্টগ্রামের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো সম্ভাব্য করোনা আক্রান্ত রোগিকে রাঙামাটি থেকে রেফার্ড করার অনুমতি প্রদান করেনি। পরবর্তী সময়ে যা হওয়ার তা-ই হলো। রাত সোয়া দুইটার দিকে সেই রোগিটি মারা গেলেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শুধুমাত্র অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য কোনো উপকরণই নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর সেবা দিতে হলে আইসিইউ ও পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর মেশিন থাকা প্রয়োজন। সেগুলোর কিছুই নেই।
কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ নাকরার শর্তে জানান, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জন্য আমরা উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানাতে জানাতে বিরক্ত হয়ে গেছি। বেশি কিছু বললে আমাদের বা আমাদের ইমিডিয়েট স্যারদের ধমকায় উদ্বর্তন কর্মকর্তারা। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরঞ্জামের অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ছাড়াই শুধু-মাত্র পজেটিভ-নেগেটিভের দোলাচলেই মারা গেলো রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা ৫৫ বছর বয়সী রোগিটি। নির্মম এই মৃত্যুর দ্বায় কে নেবে??
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।