বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
থামানো যাচ্ছেই না ঘোরাঘুরি আড্ডা জটলা। অলিগলি রাস্তাঘাটে ফুটপাতে হাঁটতে গেলেই গায়ে গা-টোকাটুকির অবস্থা। কাঁচাবাজারে ভিড় লেগেই আছে। যদিও মূল সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। বাইরে যাদের কাজে বের হতে হয় তাদের বিষয়টা আলাদা। কিন্তু কাজ ছাড়াই অযথা ঘোরাঘুরি, আড্ডা, জটলার কেন এই হুজুগেপনা? এ অবস্থাটা চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ও বিস্তারের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করছে। ঝুঁকি বাড়ছেই। এমনিতেই চট্টগ্রাম অঞ্চল করোনায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে দাঁড়িয়ে। ইতোমধ্যে আক্রান্তের হারও বাড়তির দিকে চলে গেছে। চাটগাঁবাসী উদ্বিগ্ন।
শাটডাউন ও টানা ছুটি এবং কোন কোন এলাকায় লকডাউন অবস্থা চলছে চট্টগ্রামে। অথচ তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অনেকেই দিব্যি ঘুরছেন। জটলা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। মানছেন না তারা সামাজিক বিচ্ছিন্নতার জন্য নিজেদের বাড়িঘরে থাকার নির্দেশ। পথেঘাটে ভিক্ষুকের জটলা। ত্রাণ সামগ্রীর খবর পেয়ে সেখানে মানুষের ভিড় জমছে।
এ নিয়ে মহানগর পুলিশ (সিএমপি), জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগসহ চট্টগ্রামের গোটা প্রশাসন অস্থির। ত্যক্ত-বিরক্ত। পুলিশ জটলাবাজ ও আড্ডাখোরদের ধরতে ড্রোন পর্যন্ত উড়িয়ে চলেছে। বলতে গেলে বিফল। আড্ডাখোর, জটলাবাজদের সঙ্গে মহানগরীর এখানে সেখানে চোর-পুলিশ খেলা চোখে পড়ছে।
সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, জটলা ও ঘোরাঘুরি বন্ধের জন্য পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সাধারণ মানুষজন ঘরেই থাকছেন। কিন্তু একশ্রেণির কাণ্ডজ্ঞানহীন লোকজন অহেতুক বাড়িঘর ছেড়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করছে। তারা পুলিশ আসতে দেখলেই গলিপথে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুলিশ চলে গেলে আবার ফিরে আসে। এদের ঘরে থাকতে বাধ্য করার জন্য আরও কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, কাজকর্ম ছাড়াই যারা অযথা নিজ বাড়িঘরের বাইরে ঘোরাঘুরি, জটলা পাকাচ্ছে ওদের ঘরে ফেরা বাধ্য করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কেননা ওদের কারণে ওরা নিজেদের ক্ষতি এবং সবার জন্যই ক্ষতি ডেকে আনছে। ঘোরাঘুরি থামাতে প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে তৎপর থেকে সহযোগিতা দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যগণ।
আজ মঙ্গলবারও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে জটলা, ঘোরাঘুরি ও আড্ডাবাজদের ধাওয়া করে ঘরে ঢোকানোর চেষ্টাকালে প্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনীকে দেখা গেছে তৎপর। জটলাবাজরা মূল সড়ক এড়িয়ে জটলা পাকিয়ে ঘুরছেই। আর হন্যে হয়ে ছুটছে পুলিশ।
এদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে হোম কোয়ারেন্টাইন ফাঁকিদাতা বিদেশফেরত প্রচুর প্রবাসী নগরী ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছেন। তাছাড়া কর্মরত অনেক বিদেশি নাগরিক, প্রধান সমুদ্র বন্দরের অবস্থানসহ বিভিন্ন কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রাম। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন আগে থেকেই এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছে।
অথচ তা কানে নিচ্ছে না অনেকেই। যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি, আড্ডা, জটলা বন্ধ না হওয়ার কারণে করোনায় সামাজিক সংক্রমণের ঝুঁকির পর্যায়ে এখন চট্টগ্রাম। এতে করে চট্টগ্রামবাসী শঙ্কিত।
আজও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জটলা ঘোরাঘুরি চট্টগ্রামে চলমান এবং তা আপদ হয়ে নাগরিকদের ওপর চেপে আছে। নগরীর চকবাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাট, মোহরা, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, অলংকার, জিইসি, ষোলশহর, পতেঙ্গা, অক্সিজেন, হালিশহর, পাহাড়তলী, মাদারবাড়ি, রাজাখালী, চাক্তাই, বন্দর, ইপিজেড, কালুরঘাট, আমানবাজার, ফতেয়াবাদসহ অধিকাংশ স্থানে কাঁচাবাজারে কেনাকাটায় প্রায় গমগম অবস্থা। সবখানে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। তাছাড়া অলিগলি, ফুটপাত, ঝুপড়ি-বস্তি এলাকা, পাহাড়-টিলার পাদদেশে জটলা, জমিয়ে আড্ডা-গালগল্প চলছে। সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কোনো তোয়াক্কাই সেখানে নেই। পুলিশ দেখলে গলিপথে সটকে পড়ছে। ওরা ফিরে আসছে আবারও।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে সন্ধ্যা ৬টার পর বাড়িঘরের বাইরে অবস্থান না করতে গত ১০ এপ্রিল সরকারি নির্দেশনা জারি করে। অথচ অনেকেই তা লঙ্ঘন করেই চলেছে। বন্ধ হচ্ছে না বাইরের আড্ডা ঘোরাঘুরি, জটলা, কাঁচাবাজার ও দোকানপাটে ভিড়। যা করোনা মহামারী সংক্রমণের ক্ষেত্রে বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা কঠোর হাতে বন্ধ হোক তাই দৃশ্যমান চান চট্টগ্রামবাসী। এবং তা করা হোক দ্রুত।
এদিকে গতকাল মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা একটি কার্গো জাহাজ থেকে নৌকায় নেমে নগরীর পতেঙ্গা সৈকতের বাজারে ঘোরাঘুরি করার দায়ে ৩ জন জাহাজী কর্মচারীকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ। তিনি জানান, আর কেউ জাহাজ থেকে নেমে লোকালয়ে ঢুকলেই কঠোর ব্যবস্থা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।