Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বেলারুশ ফুটবলে ‘নকল’ দর্শক

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

মাঠে ফুটবল চলছে। করোনাকালে এটাই দুর্লভ দৃশ্য। সব সতর্কতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনো ফুটবল লিগটা চালু রেখেছে সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র বেলারুশ। ‘অদ্ভুত’ সেই দেশের ফুটবল মাঠ এবার উপহার দিল আরও অদ্ভুত দৃশ্য।
মাঠে খেলছে প্রিয় দল ডায়নামো ব্রেস্ত। গ্যালারির একাংশে হাজির জনা চল্লিশেক দর্শক। তাঁদের পরনে বিচিত্র সব জার্সি। তারা কেউ হাততালি দিচ্ছেন না, প্রিয় দলের স্লােগান তুলে গলাও ফাটাচ্ছেন না, এমনকি সেই দর্শকদের কেউ নড়াচড়াও করছেন না। করবেনই বা কীভাবে, আর যাই হোক কাডবোর্ডে তৈরি কিংবা ম্যানেকিন দর্শকের পক্ষে তো জীবন্ত মানুষের মতো আচরণ করা সম্ভব নয়।
বেলারুশ ফুটবল চালু রেখেছে ঠিকই। তবে দর্শকরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে মাঠে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ১৬টি ক্লাবের ১০টিরই সমর্থকেরা ঘোষণা দিয়েছেন তারা মাঠে আসবেন না। খালি মাঠে তো আর খেলা যায় না, সে কারণেই বেলারুশ লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ডায়নামো ব্রেস্ত কিছু ‘পুতুল’ দর্শক আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই সব পুতুল দর্শককে আবার অনলাইনে টিকিট কেটে তারপরই খেলা দেখতে হয়েছে।
কীভাবে? বিশ্বের আর সব দেশে ফুটবল বন্ধ। সেসব দেশের ফুটবল–পাগল দর্শক আকালের এই দিনে মনোযোগ দিয়েছেন বেলারুশ ফুটবলে। ব্রেস্ত সুযোগ নিয়েছে সেটিরই। অনলাইনে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করেছে। বিনিময়ে সেই সব দর্শকের কাটআউট ছবি প্রিন্ট দিয়ে কার্ডবোর্ডের সঙ্গে লাগিয়ে দিয়েছে। আবার ওই দর্শক বাস্তবে যে সব ক্লাবের সমর্থক সেই সব ক্লাবের জার্সিও তাই দেখা গেল ব্রেস্তের গ্যালারিতে।
গত বুধবার বেলারুশিয়ান কাপে ব্রেস্ত-শাখতিয়র সোলিগোরস্ক সেমিফাইনালে ম্যাচে তাই দেখা গেল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের জার্সি, ২০১৬–১৭ মৌসুমের রিয়াল মাদ্রিদের অ্যাওয়ে জার্সি, ১৯৯০ সালের অ্যাস্টন ভিলার জার্সি। অনেক জার্সির সঙ্গে টেপ দিয়ে লাগানো হয় দর্শকের মাথার ছবি। কিছু জার্সি পরানো হয় ম্যানেকিনের শরীরে। আরও কিছু জার্সি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছিল গ্যালারির আসনগুলোয়।
কেন এমন আয়োজন সেই ব্যাখ্যা দিলেন ব্রেস্তের জেনারেল সেক্রেটারি ভ্লাদিমির মাচুলস্কি, ‘এটি আমাদের সৃজনশীল চিন্তা। টেলিভিশনে ম্যাচটি যারা দেখেছে তারা এভাবে নিজেদের গ্যালারিতে দেখতে পেয়েছে। আমরা তো পুরো গ্যালারিতে এই কাজ করিনি। আমরা বুঝি দর্শক কেন খেলা দেখতে আসতে চাচ্ছে না। এমন যখন পরিস্থিতি আমরা সৃজনশীল কিছু করার সিদ্ধান্ত নিলাম।’ এভাবে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করে ভালোই লাভ করেছে ব্রেস্ত। আগামীকাল লিগের ম্যাচ আছে ক্লাবটির। সেটির একটি টিকিট ৬৭ বেলারুশিয়ান রুবল দরে বিক্রি করছে ক্লাবটি। যা কিনা ক্লাবটি সবচেয়ে দামি টিকিটেরও পাঁচগুণ বেশি। গত বুধবারের ম্যাচে এভাবে ১২টি টিকিট বিক্রি করেছিল ক্লাবটি। যুক্তরাষ্ট্র–কানাডাসহ ছয়টি দেশের মানুষ কিনেছে সেই সব টিকিট। তবে টিকিট বিক্রির টাকা করোনাভাইরাস তহবিলে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাবটি। ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে ব্রেস্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নকল-দর্শক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ