নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : অবাক করা তথ্য হচ্ছে ব্রাজিলে আসন্ন রিও অলিম্পিক গেমসের অ্যাথলেটিক্স ডিসিপ্লিনে অংশ নিতে পারছেন না বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেট। এই প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। কারণ ১৯৮৪ সালে প্রথম অংশগ্রহণের সময় থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতিটি অলিম্পিক গেমসেই বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। এবারই প্রথম তারা বাদ পড়লেন। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) কাছ থেকে পেলেন না রিও’তে খেলার ছাড়পত্র। ফলে ব্রাজিলে যাওয়া হচ্ছে না বাংলাদেশের দ্রæততম মানব মেজবাহ আহমেদ ও মানবী শিরিন আক্তারের। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রটি জানায়, রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স ওয়াইল্ড কার্ড পাবে কি নাÑএ বিষয়ে বিওএ’র জানার শেষ সময় ছিলো বৃহস্পতিবার। এদিনই বাংলাদেশের অলিম্পিক সংস্থাকে আইওসির জানানোর কথা ছিল, রিও’তে লাল-সবুজের অ্যাথলেটরা অংশ নিতে পারবেন কিনা। কিন্তু তারা গতকাল অবদি কিছুই জানায়নি। ফলে বিওএর কর্মকর্তার ধরে নিয়েছেন এবারের অলিম্পিকে বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স উপেক্ষিত হয়েছে। এই ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশ অংশ নিতে পারছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস বলেন, ‘ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে কিভাবে অ্যাথলেটদের রিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ করে দেয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে গেল দু’মাস ধরেই আইওসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিওএ। আর এ কারণেই ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ব অলিম্পিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। দু’মাস আগেই মেজবাহ, শিরিন ও কোচ কাম ম্যানেজার শাহ আলমের পাসপোর্ট, ছবি ও ফর্ম পূরণ করে জমা দেয়া হয়েছে বিওএতে। এখন কেন ওয়াইল্ড কার্ড আসলো না এটা কেবলমাত্র তারাই বলতে পারবে।’
১৯৮৪ সালে প্রথম অংশগ্রহণের বছর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতিটি অলিম্পিক গেমসেই বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। গেমসের কোন কোন আসরে লাল-সবুজের দুইয়ের অধিক অ্যাথলেট খেলার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। কিন্তু এবার একজনেরও সেই সুযোগ নেই।
১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে অ্যাথলেট সাইদুর রহমান ডন ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১১.২৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৮২তম হয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে সিউল অলিম্পিকে বাংলাদেশের চারজন অ্যাথলেট পাঁচটি ইভেন্টে অংশ নেন। এর মধ্যে দেশের তৎকালীন দ্রæততম মানব শাহ আলম ১০০ মিটারে ১০.৯৪ সেকেন্ডে ৭৯তম ও ২০০ মিটারে ২২. ৫২ সেকেন্ডে ৬৫তম, মিলজার হোসেন ৪০০ মিটারে ৪৮.৭৬ সেকেন্ডে ৫৮ ও ৮০০ মিটারে এক মিনিট ৫১.১৬ সেকেন্ডে ৪৯তম এবং শাহ আলম, মিলজাল হোসেন, শাহানুদ্দিন চৌধুরী ও শাহ জালাল চার গুনিতক একশ’ মিটার রীলেতে ৪১.৭৮ সেকেন্ডে ২৫তম হন।
১৯৯২ সালের বার্সেলোনা অলিম্পিকে চার গুনিতক একশ’ মিটারে গোলাম আম্বিয়া, মেহেদী হাসান, শাহনুদ্দিন চৌধুরী ও শাহ জালাল ৪২.১৮ সেকেন্ডে ২১তম, পুরুষদের ১০০ মিটারে গোলাম আম্বিয়া ১১.৬ সেকেন্ডে ৫৫তম, শাহানুদ্দিন চৌধুরী ২১.৮৮ সেকেন্ডে ৬১তম ও মেহেদী হাসান ৪০০ মিটারে ৪৮.৬২ সেকেন্ডে ৬০তম হন। ১৯৯৬ আটলান্টা অলিম্পিকে পুরুষদের ১০০ মিটারে বিমল তরফদার ১০.৯৮ সেকেন্ডে ৭৪তম এবং মহিলাদের লংজাম্পে ৫.২৪ মিটার দূরত্বে লাফিয়ে ৩৬তম হন নিলুফার ইয়াসমিন। ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে মরহুম মাহবুবুল আলম ২০০ মিটার স্প্রিন্টে বাছাই পর্ব উতরাতে পারেননি। তবে মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ফৌজিয়া হুদা জুঁই ১২.৭৫ সেকেন্ডে ৭২তম হন। ২০০৪ সালে অ্যাথেন্স অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১১.১৩ সেকেন্ডে হিটে অষ্টম হন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন। ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১১.০৭ সেকেন্ডে বাছাই পর্বে অষ্টম হয়ে বিদায় নেন। এবং সর্বশেষ ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক গেমসে মোহন খান ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১১.২৫ সেকেন্ডে হিটে পঞ্চম হয়েই দৌড় শেষ করেন। কিন্তু এবার ব্রাজিলে রিও অলিম্পিক গেমসের ট্র্যাকে বাংলাদেশের কোন অ্যাথলেটকে দৌঁড়াতে দেখা যাবে না, যা সত্যিই হতাশার খবর দেশের অ্যাথলেটদের জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।