বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য চট্টগ্রামবাসীর মাঝে মনোবল ও আশা জাগরুক করেছে। সাধারণ মানুষজনের কথাবার্তায় সন্তুষ্টির একটা প্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনা দুর্যোগের শত দুঃসহ ভয়-কষ্ট-ভীতির মাঝেও একটা স্বস্তির আবহ আছে জনসাধারণের আলাপচারিতায়। বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমিতে একটু শান্তির সুবাতাস যেন। কেউ কেউ বললেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের বিপদাপদ মুসিবতে পাশে আছেন, থাকার প্রত্যয় আছে- তাই তো মনে হলো।
প্রধানমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণভবন থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে চাটগাঁবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন। সমগ্র প্রশাসনকে দিলেন গাইডলাইন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ‘সবাই দোয়া করবেন। এবারের শবে বরাতে আল্লাহ যেন লেখেন যে- করোনা থেকে আমরা মুক্তি পাই। আল্লাহ অন্তত বাংলাদেশটা যেন রক্ষা করেন।’
সেই সাথে চলতি এপ্রিল মাসে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ‘সামনে শবে বরাত। মসজিদে না গিয়ে সবাইকে ঘরে বসে ইবাদত করবেন। আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে হবে’।
চট্টগ্রামের মানুষ ধর্মপ্রাণ। গভীর ধর্মানুরাগী দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আজকের বক্তব্য থেকে চট্টলবাসী ধর্মীয় মনোবল আরও চাঙ্গা ও মজবুত করে নিংড়ে নিয়েছেন যেন। এমনটি মনে হলো সচেতন নাগরিকদের কথাবার্তা প্রতিক্রিয়ায়।
পবিত্র শবে বরাতে আল্লাহতায়ালার কাছে দুই হাত তুলে ঘরে ঘরে মানুষজন ইবাদত বন্দেগী পালন এবং দোয়া মোনাজাতের প্রস্তুতির এখনই সময়। তাই চলছে প্রতিটি বাড়িঘরে। আর তখন প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে তাগিদ এসেছে আল্লাহর কাছে করোনাভাইরাস মহামারী থেকে মুক্তি-পানাহ লাভের জন্য আকুল দোয়া নিবেদনের।
বৃহত্তর চট্টগ্রামটি দেশের প্রধান প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি চট্টগ্রাম জেলার কর্মকর্তাদের নিকট করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চেয়ে বলছিলেন, কোনভাবেই সংক্রমণ বাড়তে দেওয়া যাবে না। চট্টগ্রামে অনেক প্রবাসী আছেন তারা যাতে এখন দেশে না আসেন। যারা এসেছেন তারাও যাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সীমান্ত দিয়ে (ভারত থেকে ) কেউ যাতে আসতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
মসজিদে না গিয়ে নিজ বাড়িঘরে নামাজ আদায় করাই এখন সমীচীন। তা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে পুনরায় উঠে এলো। চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে- মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফ এখন বন্ধ। সেখানে কারফিউ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফেই যখন এ অবস্থা সেখানে মসজিদে গিয়ে অনেক লোক একসঙ্গে জমায়েত হওয়া, এটাতে কিন্তু সংক্রমণ হওয়ার একটা ভয় থাকে।’
বৈশি^ক মহামারী পরিস্থিতিতে মসজিদে যাওয়া কেন নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী তা স্পষ্ট করলেন আবারও। যাতে কারো মনে কোনো রকম অমূলক ভ্রান্তি-সংশয় কিংবা অতিমাত্রায় ভাবাবেগ অবশিষ্ট না থাকে।
তিনি বলেছেন, ‘সামনে শবে বরাত। সবাই যাতে ঘরে বসে ইবাদত করেন। আল্লাহকে যে কোনো জায়গা থেকেই ডাকা যায়। সবাই আল্লাহকে ডাকুন’।
এর পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতি চট্টগ্রামে কেমন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্যক অবগত তাই বোঝা গেল। তিনি সতর্ক করে বললেন, চট্টগ্রামে ১৬২ জনের টেস্ট করা হয়েছে। ২ জনের করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আর যাতে কারও এটা না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমি অনুরোধ করবো চট্টগ্রামবাসীকে- এখানে প্রবাসী যেহেতু একটু বেশি, তারা যেন আত্মীয়-স্বজনদের বলে দেন এখন না আসার জন্য।
আব বাইরে থেকে যারাই আসে, এসেছে- তাদের যেন ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হয়। বিষয়টা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
চট্টগ্রামবাসীর নিকট প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যগুলোর মধ্যদিয়ে সার্বিক সতর্কতা, সচেতনতা, করণীয় এবং একই সঙ্গে ধর্মীয় আবেগ-অনুরাগের কাক্সিক্ষত বহিঃপ্রকাশ হিসেবে একটা স্বস্তিদায়ক এবং আশাবাদের আবহ তৈরি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।