বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মাঠে সাংবাদিকরা। তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পরিবারের সদস্যরাও। তাতেও পিছু হঠার সুযোগ নেই। দুর্যোগ দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে ঐতিহ্য তাতে কোন হেরফের নেই। অদম্য সাংবাদিকরা ছুটছেন দিনরাত।
বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টানাছুটিতে ঘরবন্দি মানুষ। মরণব্যাধিতে কাবু গোটা বিশ্ব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্যের সাথে ভাসছে হরেক গুজব। আতঙ্ক উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিশেহারা মানুষের শেষ ভরসা গণমাধ্যম।
ঘরে বসেই মানুষ জানতে চায় সর্বশেষ পরিস্থিতি, অগ্রগতি, সুখবর-খবরের আদ্যপান্ত। গণমাধ্যমের প্রাণশক্তি সেই জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছে দিতে তাই নিরন্তর ছুটে চলা সাংবাদিকদের।
অতীতের যেকোন দুর্যোগে সাংবাদিকরা যেভাবে মাঠে ছিলেন এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মহামারী থেকে নিজেদের সুরক্ষায় নানা উদ্যোগের পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহের ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আসলেও খবরের সাথেই থাকতে হচ্ছে তাদের। যখন যেখানে খবর সেখানে ছুটে যাচ্ছেন তারা। সর্বশেষ অগ্রগতি পাঠক দর্শকদের জানাতে মরিয়া সবাই। ঢাকায় এক সাংবাদিকের শরীরে করোনা সংক্রমণের খবরে চট্টগ্রামে উৎকন্ঠা বেড়েছে।
নিজেদের ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে নিজ উদ্যোগেই নেওয়া হচ্ছে সুরক্ষা ব্যবস্থা। আর সাংবাদিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগেও কর্মরত সাংবাদিক বিশেষ করে রিপোর্টার ও ফটো সাংবাদিকদের সুরক্ষা সরঞ্জাম জোগাড় করে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয়, স্থানীয় সংবাদপত্রের কার্যালয়, ব্যুরো, আঞ্চলিক অফিস, বেসিরকারি টিভি চ্যানেল, রেডিও, অনলাইন এবং বার্তা সংস্থার অফিসগুলোতেও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবাদপত্র এবং টিভির ফটোসাংবাদিকদের কেউ কেউ পিপিই পরে সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত আছেন।
জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রের চতূর্থ স্তম্ভ সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকায় রাখে। করোনা দুর্যোগেও সংবাদমর্কীরা সে ঐতিহ্য ধরে দুর্বার গতিতে কাজ করছেন। নতুনের সাথে চলা, আর নতুন নতুন তথ্য পাঠক দর্শকদের পরিবেশন করাই সাংবাদিকতার বৈচিত্র্য। নতুন এই মহামারীর নতুন নতুন সব তথ্য আপডেট জানতেও ঘাম ঝড়াচ্ছেন সাংবাদিকরা। মিডিয়ার জগতে এসেছে আমূল পরিবর্তন।
ডিজিট্যাল যুগের সাথে পুরোপুরি তাল মিলিয়ে চলছে সবাই। টেলিভিশন, অনলাইনের মতো সংবাদপত্রের পাঠকরাও যাতে যখন খবর তখনই জানতে পারেন সে ব্যবস্থাও আছে। সংবাদপত্রের অনলাইন ভারসন এখন দারুন জনপ্রিয়। অনলাইনের সুবাধে করোনায় কাহিল দেশ-বিদেশের কোথায় কী ঘটছে তা দ্রুতই জানা যাচ্ছে। এতে সংবাদকর্মীদের দায়িত্বও বেড়েছে। আগের মতো কাজের ফাঁকে প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ের অফিস কিংবা চেরাগী পাহাড়ের মোড়ের আড্ডা নেই সাংবাদিকদের। সার্বক্ষনিক খবরের পেছনে ছুটতে হচ্ছে। কিছু কিছু মিডিয়া তাদের কর্মীদের শিফটে দায়িত্বপালনের ব্যবস্থা করেছে। স্থানীয় সংবাদপত্রে কর্মরতদের সবাই একসাথে অফিসে এসে ভিড় করে ঝুুঁকি না বাড়িয়ে কেউ কেউ বাসা থেকেই সংবাদ পাঠাচ্ছেন।
চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণের চীফ রিপোর্টার নওশের আলী খান বলেন, দুঃসময়ে সাংবাদিকরা মানুষের পাশে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ঝুুঁকি আছে জেনেই আমরা এই পেশায়। পাঠকের কাছে সঠিক খবর পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। নিজেদের যতটুকু সুরক্ষা করা যায় তা নিশ্চিত করে আমরা কাজ করছি।
দৈনিক আজাদী সিনিয়র সহ-সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় থেকে জাতির দুঃসময়ে পিছু হঠার কোন সুযোগ নেই। কারণ মানুষের শেষ ভরসা সংবাদপত্র। ঝুঁকি থাকলেও আমরা বিবেকের তাড়নায় এখন দায়িত্ব পালনে আরো বেশি আন্তরিক।
বাংলা নিউজের উপ-সম্পাদক তপন চক্রবর্তী বলেন, অনলাইন মিডিয়া হিসাবে আমরা আগে থেকেই মোবাইলে সংবাদ প্রেরণের অভিজ্ঞতা রপ্ত করি। এখন তা কাজে আসছে, অফিসে না এসে যে যেখানে আছি সেখান থেকে সংবাদ পাঠাতে পারছি, এতে ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমছে।
দৈনিক আজাদীর চীফ রিপোর্টার হাসান আকবর বলেন, দুর্যোগ দুঃসময়ে মানুষ আসল তথ্য জানতে চায়। সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি। রিপোর্টারদের কাজ ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে তারা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে সংবাদ সংগ্রহ করছেন।
চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের চট্টগ্রাম রিজিওনাল এডিটর কামাল পারভেজ বলেন, যখনই খবর তখনই তা দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে হচ্ছে। ঘরবন্দি মানুষও সর্বশেষ খবর জানতে চায়। সেটা বিবেচনায় নিয়ে আমরা কাজ করছি।
দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুযোর্গে মানুষ যখন ঘরে ডুকে তখনও সাংবাদিকরা মাঠে থাকে। শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালন নয়, করোনাদুর্যোগের মধ্যে মানুষের কাছে থাকার তাগিদ থেকেই কাজ করছি।
দৈনিক পূর্বকোণের সিনিয়র সাবএডিটর ডেইজি মওদুদ বলেন, ভয় আতঙ্ক আছে তবুও কাজ করতে হচ্ছে। দুঃসময়ে ঘরে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই।
চ্যানেল আই চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ বলেন, নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই আমরা দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। তবুও ঝুঁকি থেকে যায়, তবে পাঠক দর্শকদের কথা ভেবে কাজ করতেই হবে।
দৈনিক সমকালের বিশেষ সংবাদদাতা ও চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান সরোয়ার সুমন বলেন, যতটুকু পারা যায় ঝুঁকিমূক্ত থেকে আমরা কাজ করছি। নিজেদের মধ্যে কাজ ভাগাভাগি করে দুঃসময়ের মোকাবেলা করে যাচ্ছি। এখন সাংবাদিকতার ধরণও হঠাৎ পাল্টে গেছে।
সারাবাংলার বিশেষ সংবাদদাতা রমেন দাশগুপ্ত বলেন, সব খবর দিতে হচ্ছে, তবে আগের মতো অফিসে যাওয়া হচ্ছে না। যখন যে আপডেট পাচ্ছি তা পরিবেশন করছি।
সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার কমল দে বলেন, সবদুর্যোগের মতো করোনায়ও মানুষের পাশে আছি, সর্বশেষ খবর দেওয়ার চেষ্টা করছি।
দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার মাসুদ মিলাদ বলেন, আগের মতোই কাজ করছি, তবে ধরনটা কিছুটা পাল্টেছে। তথ্য সংগ্রহের কাজটা পুরোপুরি টেলিফোনে সারতে হচ্ছে। দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক রাজেশ চক্রবর্তী বলেন, সংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থাকলেও সেরকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না। এটি বিবেচনায় আনা জরুরি। বাংলা নিউজের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক সোহেল সরোয়ার বলেন, ঝুঁকি জেনেও পাঠকদের সর্বশেষ তথ্য জানাতে আমরা কাজ করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।