Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আনন্দমুখর জনতার ভিড়ে সহসা উৎসব পরিণত হলো আতঙ্কের রাতে

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে বিশেষ করে ইরাক-সিরিয়ায় রুশ-মার্কিন হামলার ছত্রছায়ায় ইরাক ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জিহাদি সংগঠন আইএসের পাল্টা হামলার পরিধি বিস্তৃত হয়েছে বিশ্বের অন্য এলাকাগুলোতে। বার্তা সংস্থা এপি’র এক খবরে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়া আইএস-এর জিহাদিদের হামলা পরিকল্পনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর গুরুত্ব বেড়েছে। এর পাশাপাশি তুরস্ক থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশেও হামলা বিস্তৃত হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ফ্রান্সের মতো সুরক্ষিত এই ইউরোপীয় দেশে পরপর দুই দফায় হামলা হলো। প্রথম হামলাটি হয় গত বছর ১৩ নভেম্বর। ওই সময় প্যারিসের ছয়টি স্থানে প্রায় একই সময়ে আত্মঘাতী বোমা ও বন্দুকধারীদের হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়। আহত হয় আরো শতাধিক মানুষ। এর আট মাস একদিনের মাথায় ফের রক্তাক্ত হলো ফ্রান্সে ভূমধ্যসাগরীয় শহর নিস। এতে প্রাণ হারিয়ে অন্তত ৮৪ জন। নিহতের এই সংখ্যা একশ’র কাছাকাছি চলে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। আহত হয়েছে আরো শতাধিক লোক। ফ্রান্সে এ ধরনের আরো হামলা হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় নিস শহরে বাস্তিল দিবসের আতশবাজির উৎসবে এই ভয়ঙ্কর হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে,আকাশ আলো করা আতশবাজির প্রদর্শনীর পর উচ্চ লয়ের সঙ্গীত আর আনন্দমুখর জনতার ভিড়ে হঠাৎ ধেয়ে এলো বিশাল এক সাদা ট্রাক। ফ্রান্সের নিস শহরের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী বিখ্যাত প্রমেনেদ দেজাঙ্গলে পরিণত হল আতঙ্কের চত্বরে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা সেই মুহূর্তের ছবি আর ভিডিওতে ফুটে উঠেছে হামলার ভয়াবহতা। একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একটি বার্তা সংস্থাকে জানান, ওই ট্রাক মানুষকে পিষতে পিষতে অগ্রসর হাচ্ছিল, চারদিকে ছিটকে পড়ছিল মানুষ। এই হামলা যখন ঘটে হাজার হাজার নারী পুরুষ শিশু তখন সঙ্গীতমুখর পাম গাছে শোভিত চত্বর ধরে হাঁটছিলেন বিখ্যাত নেগ্রেসকো হোটেলের দিকে। ইউটিউবে আসা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ২৫ টনি ওই ট্রাক হামলে পড়ার পর বাদ্য-বাজনা ছাপিয়ে পুরো এলাকা ভরে ওঠে আতঙ্কিত মানুষের চিৎকার; সাহায্যের আশায় দিগি¦দিক ছুটতে শুরু করেন সবাই। ডমিনিক মলিনাকে নামে এক মার্কিন প্রত্যক্ষদর্শী সিএনএনকে জানিয়েছেন, ট্রাকটি ঘণ্টায় ২০ থেকে ৩০ মাইল গতিতে ছুটছিল। হামলার পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেছেন, এটা যে একটা সন্ত্রাসী হামরলা ছিল তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তিনি আরো বলেছেন, এই মাসের শেষের দিকে ফ্রান্সে জরুরি অবস্থায় যে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা আরো তিন মাস বাড়ানো হচ্ছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হামলায় আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেছেন তিনি। এ ধরনের হামলাকে বর্বর ও কাপুরুষোচিত আখ্যা দিয়ে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
হামলার ঘটনায় বিশ্বনেতারা নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারী তিউনিসীয় বংশোদ্ভূত। একই সঙ্গে সে ফ্রান্স ও তিউনিসিয়ার দ্বৈত নাগরিক (ডুয়াল সিটিজেনশিপ)। তার বয়স ৩১। জানা যায়, জনতার ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেয়ার পর বেপরোয়া চালক ঘটনাস্থল থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে থাকা নারী-পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এসময় সেখানে মোতায়েন পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি চালালে বন্দুকধারী চালক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। ২৫ টন ট্রাকটিতে বিস্ফোরক, গ্রেনেড ও অস্ত্র ছিল। বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা, ফক্স নিউজ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আনন্দমুখর জনতার ভিড়ে সহসা উৎসব পরিণত হলো আতঙ্কের রাতে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ