Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরণার্থীদের হাত বেঁধে পিটিয়েছে হাঙ্গেরির সেনারা

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শরণার্থী ও অভিবাসীরা নির্যাতনের শিকার হওয়া চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল : এইচআরডব্লিউ
ইনকিলাব ডেস্ক : হাঙ্গেরি সীমান্তে চলতি মাসে সেনা ও পুলিশের হাতে নির্মম শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শরণার্থী ও অভিবাসীরা যা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। এ অভিযোগ করেছে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী। তবে তাদের ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী হিউমেন রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গত বুধবার প্রকাশিত তাদের নতুন প্রতিবেদনে বলেছে, শরণার্থীদের সার্বিয়া সীমান্তে ফেরত পাঠানোর সময় তাদেরকে নির্মমভাবে মারধোর করেছে হাঙ্গেরির সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। চলতি মাসের ৫ তারিখে ওই অমানবিক ঘটনাটি ঘটে বলে প্রতিবেদনে তারা দাবি করেছে।
এইচআরডব্লিউ বলছে, ওই দিন শরণার্থীদের সার্বিয়া সীমান্তের ৮ কিলোমিটার ভিতরে কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায় ঠেলে দেয় হাঙ্গেরির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি শরণার্থী দলের ওপর চড়াও হয়েছিল হ্যাঙ্গেরির সেনা ও পুলিশ। ওই দলটিতে অনেক নারী ও শিশুও ছিল। সার্বিয়া ও হাঙ্গেরির মধ্যে ১৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে যা কাঁটাতারের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। শরণার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে হ্যাঙ্গেরি ওই বেষ্টনী নির্মাণ করেছিল। পুলিশ বলছে, হাঙ্গেরিতে নতুন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আইন গৃহীত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৬২১ জনকে সার্বিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। ওই দলটিকে সার্বিয়া সীমান্তে ফেরত পাঠানোর আগে হাঙ্গেরিতে দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল। আর ওই সময় তাদের নির্মমভাবে পেটায় সেনারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী ওই প্রতিবেদকে বলেন, আমাদের নিষ্ঠুরভাবে পেটানো হয়েছিল। আমি কোনো সিনেমাতেও এরকম প্রহার দেখিনি। ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরো বলেছেন,পাঁচ থেকে ছয়জন সেনা দীর্ঘ দু’ঘণ্টা ধরে আমাদের পালা করে পিটিয়েছে। প্রহারের আগে তারা আমাদের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে নিয়েছিল। তারা শুধু লাঠি দিয়ে পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সমানে ঘুষি আর লাথিও মেরেছে। ওই নির্যাতনের ফলে আমরা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলাম।
ওয়াহিদ খান নামের ২৪ বছরের এক আফগান শরণার্থী বলেছেন, আমি তিনবার হাঙ্গেরিতে ঢুকেছি। সেখানকার পুলিশ আমাকেও মেরেছে। হ্যাঙ্গেরির পুলিশ মানুষকে পেটায়। শুধু তাই নয়, তারা অনেকের ওপর টিয়ার গ্যাসও নিক্ষেপ করে থাকে। ৪১ জন শরণার্থী ও অভিবাসী, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার কর্মকর্তা এবং হ্যাঙ্গেরির পুলিশ ও অভিবাসী কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে এইচআরডব্লিউ। হাঙ্গেরির এই আচরণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইন, আন্তর্জাতিক অভিবাসনপ্রত্যাশী নীতিমালা এবং মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে এইচআরডব্লিউ’র এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে হাঙ্গেরির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলছে, হাঙ্গেরি সীমান্তে কোনো শরণার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। আইন মেনেই তাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে শরণার্থীদের হাঙ্গেরি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন মেনে চলারও আহ্বান জানান হয়েছে। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শরণার্থীদের হাত বেঁধে পিটিয়েছে হাঙ্গেরির সেনারা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ