Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দ. চীন সাগর সংকটের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার ডাক যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর সূত্র জানায়, উত্তেজনা না বাড়িয়ে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। চীনসহ ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনকে এমন পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ না থাকলে তা মোকাবেলায় তারাও প্রস্তুত আছে খবরে বলা হয়েছে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চীন সুর নরম করলেও সংঘাতের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, রায়টি ফিলিপাইনের পক্ষে এতটা জোরালোভাবে এসেছে যে, চীনের দর কষাকষির জায়গাও অনেক কমে এসেছে। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে যে কোনো সময় যুদ্ধও শুরু হয়ে যেতে পারে। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের আইন বিভাগের অধ্যাপক ওয়াং জিয়ানগাইয়ু বলেন, এতে চীনের মতো বিরাট দেশের জাতীয়তাবাদী মনোভাব আরো তুঙ্গে উঠবে। কার্যত এতে চীনের বহু মধ্যপন্থী লোকও রাতারাতি যুদ্ধবাজে পরিণত হবেন। ইউনিভার্সিটি অব সিডনির যুক্তরাষ্ট্র গবেষণা কেন্দ্রের রিসার্চ ফেলো অ্যাশলে টাউনশেন্ড বলেন, রায়টি যদি ফিলিপাইনের পক্ষে কম শক্তিশালী বিজয়ের হতো, তবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশটি এ ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ পেত। কিন্তু আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়টি বেইজিংয়ের বিপক্ষে দ্ব্যর্থহীন এবং এর জবাবে চীন বিশ্বের চোখে তার সুনাম বজায় রাখার চেষ্টা খুব একটা করবে বলে মনে হয় না। টাউনশেন্ড বলেন, যে নৌপথটি দিয়ে বছরে ৫ লাখ কোটি ডলারের পণ্য পরিবাহিত হয়, সেখানে বৈশ্বিক সংঘাত বাধিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র কারো স্বার্থই রক্ষা হবে না। এর মানে এই নয় যে, ঝুঁকি কম বলে যুক্তি দেয়া যায়, বরং ঝুঁকি বেশ উচ্চমাত্রার। তিনি বলেন, বিনা উসকানিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি সম্পর্কে চীন পুরোপুরি অবহিত। তবে তিনি বলছেন, রায়টি গলাধঃকরণ করা চীনের জন্য পীড়াদায়ক। আইএইচএসের এশিয়াবিষয়ক প্রিন্সিপাল অ্যান্টন আলিফান্দি বলেন, বড় যে দুশ্চিন্তা দেখা যাচ্ছে, তা হলো- চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মতো বড় শক্তিগুলোর মধ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যুদ্ধের আশংকা। তিনি বলেন, চীন উত্তেজনাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাইবে না যাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাঘাত করে এবং চীনকে হারাতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করে। তবে তিনি বলেন, এ ধরনের বিপদের ঝুঁকির ভুল হিসাবের সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো পক্ষ যদি যুদ্ধংদেহী নীতি অনুসরণ করে এবং মনে করে যে, অন্যপক্ষ পিছু হটবে, তবে পরিস্থিতি দ্রুত নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। সাংহাইয়ের ফুডান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক ইন্সটিটিউটের সহযোগী ডিন অধ্যাপক শেন ডিঙ্গলি বলেন, বিতর্কিত জলসীমায় সামরিক নৌবন্দর বানানো চীনের আচরণে সম্ভবত কোনো পরিবর্তন আসবে না। তিনি বলেন, রায়ের পর ফিলিপাইন সংযত আচরণ করছে এবং কোনো আগ্রাসী বিবৃতি দেয়নি। আলোচনার মাধ্যমে ভালো কিছু হতে পারে। এদিকে ওই সাগরে আধিপত্য বিস্তারের ইস্যুতে জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে, তা মেনে নেয়ার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফিলিপাইন। ট্রাইব্যুনালের রুল মানতে চীনের অস্বীকৃতি জানানোর পর ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। চীনও তার সুর অনেকটা নরম করেছে। দেশটি বলেছে, তারাও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে চায়। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের এক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়, ১৯৪০-এর দশকে দক্ষিণ চীন সাগরের বিশাল এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করে চীন যে নাইন ড্যাশ লাইন মানচিত্র এঁকেছিল, তার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। বিবিসি, এপি, এএফপি, গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দ. চীন সাগর সংকটের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার ডাক যুক্তরাষ্ট্রের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ