নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : টেস্টের দ্বিতীয় স্তর প্রবর্তনের আইডিয়াটা আইসিসির মাথায় ঢুকেছে গত এপ্রিলে। আগামী অক্টোবরে দ্বিস্তর টেস্ট কাঠামো অনুমোদনের জন্য লবিং শুরু করে দিয়েছে আইসিসি। সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভায় চিফ এক্সিকিউটিভ কমিটির সভায় (সিইসি) এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে আইসিসি’র পরিকল্পনায় বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে আইসিসির সঙ্গে বিসিবি যতই যুদ্ধ করুক না কেন, দ্বিতীয় স্তরের টেস্ট প্রবর্তনের আগেই কিন্তু বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে এই স্তরে গণ্য করছে আইসিসি। চলমান বছরে, এমনকি এ মাস থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মৌসুমে ফিউচার ট্যুর প্রজেক্টে (এফটিপি) এমনটাই এখন দৃশ্যমান। এ বছর হয়ে যাওয়া ৬ মাসে টেস্ট, ওয়ানডে ম্যাচের চিত্র সেটাই করেছে প্রকাশ। ২০১৬-১৭ মৌসুমে টেস্ট, ওয়ানডে খেলার সীমিত সুযোগও পূর্ণ সদস্য দেশের ক্রিকেটকে করে তুলেছে উদ্বিগ্ন।
গত বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে বিস্ময়কর উন্নতি, হোমে ৪টি সিরিজের সব ক’টিতে জয়, বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট, ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ৯ থেকে ৭-এ উন্নতিÑএতো কিছুর পরও ওই বছরটিতে কিন্তু পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ম্যাচের সংখ্যায় সবচেয়ে কম খেলেছে বাংলাদেশ বরং বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ে (বাংলাদেশ ১৮টি, জিম্বাবুয়ে ৩১টি)। কালে-ভদ্রে টেস্ট খেলার সুযোগকে নিয়তি বলেই ধরে নিয়েছে যেনো বিসিবি। তা না হলে গতবছর প্রথম ৯টি টেস্ট দলের মধ্যে সবচেয়ে কম (৫টি টেস্ট) খেলবে কেন বাংলাদেশ?
এ বছরের প্রথম ৬ মাসে যেখানে অস্ট্রেলিয়া ৩টি, ইংল্যান্ড ৭টি, নিউজিল্যান্ড ২টি, দ.আফ্রিকা ৩টি, শ্রীলংকা ৩টি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১টি টেস্ট খেলে ফেলেছে, সেখানে বাংলাদেশের ভাগ্যে জোটেনি একটিও টেস্ট! ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মৌসুমে ভারত যেখানে ১৭টি টেস্ট, পাকিস্তান ১৫টি, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ১৪টি করে, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০টি, শ্রীলংকা ৮টি টেস্ট খেলবে, সেখানে বাংলাদেশের ভাগ্যে ঝুলছে সর্বোচ্চ ৫টি, জিম্বাবুয়ের ৪টি টেস্ট!
ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রতিদ্ব›দ্বী দলের স্বীকৃতি পেয়েও এ বছর কিংবা এই মৌসুমে বলার মতো এক দিবসীয় ম্যাচ বরাদ্দ নেই বাংলাদেশের। বছরের পেরিয়ে যাওয়া ৬ মাসে একটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। অথচ, ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের নিচে থেকেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলে ফেলেছে ৭টি, পাকিস্তান ২টি এবং জিম্বাবুয়ে ৬টি ম্যাচ! ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মৌসুমে দুর্গতিটা আরো বেশিÑচ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদ দিলে এই মৌসুমে সর্বসাকুল্যে ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ! যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে ইংল্যান্ড খেলবে ২৪টি, নিউজিল্যান্ড ২০টি, অস্ট্রেলিয়া ১৬টি, পাকিস্তান ১৯টি, শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩টি ওয়ানডে।
টি-২০ বিশ্বকাপের বছরে গত ৬ মাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৬টি টি-২০ খেলায় অবশ্য গর্ব করতেই পারে মাশরাফিরা। তবে টেস্ট, ওয়ানডেতে এই গর্ব করার উপায় নেই। টেস্ট মর্যাদা পাবার পর লম্বা বিরতিতে টেস্ট খেলার আক্ষেপ নতুন নয়। ২০০৬ সালের এপ্রিলের পর ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিতে যেয়ে বড্ড বড় ভুল করে ফেলেছিল বিসিবি টানা ১৩ মাস টেস্টের বাইরে ক্রিকেটারদের রেখে। ২০১১’র ডিসেম্বরের পর পরবর্তী টেস্টের জন্য অপেক্ষায় থেকেছেন তামীম, মুশফিকুর, সাকিবরা ১১ মাস। টেস্টে লম্বা বিরতির রেকর্ড এবার সেই অতীতকে যাচ্ছে ছাড়িয়ে। ২০১৫’র ৩ আগস্ট দ. আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরবর্তী টেস্টের মাঝে বিরতি ১৪ মাস ১৭ দিন! এ ভাগ্যও আবার ঝুলছে ইসিবির সিদ্ধান্তের উপর!
টেস্টে লম্বা বিরতিতে ম্যাচ খেলা নিয়তি বলে মেনে নেয়া যায়। তবে ৫০ ওভারের ম্যাচে যে দলটির বিস্ময়কর উন্থানে বিস্মিত ক্রিকেট বিশ্ব, সেই বাংলাদেশ দলকে কেন এই ভার্সনের ক্রিকেটে পেতে হবে লম্বা বিরতি! অথচ, কি জানেন, গত ১১ নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচের পর এফটিপি অনুযায়ী বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ৭ অক্টোবরÑবিরতি প্রায় ১১ মাস! এখানেও কিন্তু সুযোগটি ঝুলছে ইসিবি’র সিদ্ধান্তের উপর! টেস্ট মর্যাদা পাবার পর ওয়ানডে ক্রিকেটে এতো লম্বা বিরতিতে এর আগে কখনো কাটেনি বাংলাদেশের!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।