বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘরবন্দি মানুষের যাপিত জীবনে আসছে নানা বৈচিত্র্য। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হচ্ছে। প্রবীণ সদস্যদের প্রতি বাড়ছে আন্তরিকতা। বিপদের এ সময়ে খোদাভীতিতে সহনশীলতা বাড়ছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সমাজে। কোথাও আবার উল্টো চিত্রও আছে। একটি শ্রেণি এ দুঃসময়েও নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিবেশী কিংবা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ নেই তাদের।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে অঘোষিত লকডাউনে চট্টগ্রাম নগরীর ৭০ লাখ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ছক বদলে গেছে। দিবারাত্রী ঘরবন্দি থেকেই কীভাবে প্রাণবন্ত এবং সেই সাথে সুস্থ থাকা যাবে তার উপায় বের করছেন অনেকে। যাদের একান্ত প্রয়োজনে বের হতে হচ্ছে তারাও নানা সতর্কতা অবলম্বন করছেন। ঘরে ঘরে দৈনন্দিন জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। একঘেয়েমি কাটাতে নানা কৌশল নিচ্ছেন।
বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, আমি ঘরেই থাকছি। পড়ছি, বিকেলে হালকা ব্যায়াম করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার খোঁজ খবর রাখছি। সবার ঘরেই থাকা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন এ জন্য প্রয়োজন হলে বলপ্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনকে ভূমিকা রাখতে হবে। লোক দেখানো কর্মকা- বাদ দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানান প্রবীণ এ শিক্ষক।
নগরীর বাকলিয়ার গৃহিণী রোজিনা ফারুক নিরু সংসার সামলাতে এখন দারুন ব্যস্ত। জানালেন বৃদ্ধা শাশুড়ির দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হচ্ছে এ সময়ে। স্বামী সন্তানসহ সবার খাবার সেই সাথে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হচ্ছে। আত্মীয় স্বজন যে যেখানে আছেন তাদের খবর নেওয়া, দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টাও করেন তিনি। সর্বোপরি মহান আল্লাহ্ দরবারে মহামারী থেকে রক্ষায় বেশি করে পানাহ চাইতে হচ্ছে।
কাজীর দেউড়ী এলাকার গৃহবধূ ফাতেমা ফেরদৌস বলেন, করোনায় ভয়ভীতি তো আছেই। এই পরিস্থিতিতে বাসার বাইরে যাচ্ছি না, প্রতিবেশীদের সাথেও দেখা হয় না। সাংসারিক কাজের ঝামেলা বেড়েছে, গৃহকর্মী আসছেন না। রান্না বান্না, ঘর-দোর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া ইত্যাদি কাজে দিন রাত কাটছে। ওয়াক্ত মতো নামাজ আদায়, অবসর সময় কোরআন শরীফ ও অজিফা পড়ি। পত্রিকা পড়ে দেশ বিদেশে করোনায় কী অবস্থা তা জানার চেষ্টা করি। প্রতিদিনই ফোন করে আমার বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ শয্যাশায়ী আব্বার অবস্থা এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের খোঁজ নিই।
বাওয়া স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া বেগম বলেন, স্কুল ছুটি থাকায় বাসায় পুরো সময় দিতে পারছি। রান্না-বান্নসহ ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার বিষয়টি দেখা শুনা করছি। যতটুকু পারি সবার খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। আসকারদীঘির পাড়ের নববধূকে প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া সামাল দিচ্ছেন শ্বশুরবাড়ির সবকিছু। বিশেষ করে সবাইকে ঘরে রাখা, স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন তিনি। আলফালাহ গলির বাসিন্দা ডা. মুন্নি আক্তার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন। নিয়মিতই তাকে বাসা থেকে বের হতো হয়। নিজে চিকিৎসক তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বাসা এবং বাইরে সবাইকে এ সম্পর্কে সচেতনও করছেন তিনি।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সহ-সভাপতি সাংবাদিক মো. খোরশেদ আলম বলেন, পেশগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করি। চিকিৎসকের সাথে সুস্পর্ক আছে এটাকে কাজে লাগিয়ে রোগীদের সহযোগিতা করছি। করোনা আতঙ্কে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে, এ অবস্থায় অসুস্থ্য হলেও অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না। চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করে রোগী দেখার ব্যবস্থা করতে পারছি। এসময় সবাকেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।