Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহাখালী ঝিল থেকে ২০ ঘণ্টা পর শিশু সানজিদার লাশ উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মহাখালীর পয়োঃনিষ্কাশন নালার পানিতে পড়ে যাওয়া শিশু সানজিদা আক্তারকে ২০ ঘণ্টা পর গতকাল মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। নালাটিতে ঢাকনা না থাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় শিশুটি প্রাণ হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সেখানের বাসিন্দারা। গত বুধবার দুপুরে খেলতে গিয়ে নালায় পড়ে যাওয়া ৬ বছরের শিশু সানজিদা মহাখালীর ৭৩/১২ দক্ষিণ ঝিলপাড়ের বাসিন্দা শাহ আলম ও রুবি আক্তার দম্পতির ৪ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। শিশুটির মৃত্যুতে এলাকাবাসী শোকাহত।
 প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে সমবয়সি প্রতিবেশি শিশু তামিমের সঙ্গে বাসার পাশেই খেলতে যায়। এ সময় সানজিদা নালার পানিতে পড়ে যায়। শিশু তামিম তাকে হাত ধরে নালা থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তামিম দৌঁড়ে এসে নিজের মাকে বিষয়টি অবহিত করে। খবর পেয়ে শিশুটির বড় ভাই রুবেল ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান বোন সানজিদার স্যান্ডেল ভাসছে। পরে পানিতে ডুব দিয়ে সানজিদাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। স্থানীয় ব্যক্তিরাও তার সঙ্গে যোগ দেন। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টাতেও সানজিদাকে না পেয়ে তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। বেলা তিনটা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। রাত ১২টা পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আবর্জনা ও স্রোতের কারণে সমস্যা হওয়ায় রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। গতকাল সকালে দ্বিতীয় দফায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। প্রায় বিশ ঘণ্টা পর সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ডুবুরিরা।
যে পয়োঃনিষ্কাশন নালায় পড়ে শিশুটি মারা যায় সেটি আরজতপাড়া থেকে নিকেতন পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘ। নালাটি প্রস্থে অন্ততঃ ১০ ফুট। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পয়োঃনিষ্কাশন নালাটির মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের পেছন থেকে নিকেতন পর্যন্ত অংশে কোনো ঢাকনা নেই। নালাটিতে ঢাকনা থাকলে এ দুর্ঘটনা ঘটত না। ২০১২ সালের শেষ দিকে নালাটি তৈরির সময় বলা হয়েছিল ঢাকনা দেওয়া হবে। কিন্তু আজও তা হয়নি। নালার পানিতে পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। দেড় বছরে অন্তত পাঁচজন এই নালায় পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করায় প্রাণে বেঁচেছে। ঢাকনার জন্য স্থানীয় ব্যক্তিরা লিখিতভাবে একাধিকবার ওয়াসার কাছে দাবি জানিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই নালার পানি উপচে পড়ে।
এদিকে বুকের ধন সানজিদাকে হারিয়ে শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন বাবা শাহ আলম ও মা রুবি আক্তার। শাহ আলম ও রুবি আক্তারের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে। প্রায় ৩০ বছর আগে ঢাকায় এসেছেন শাহ আলম। এ দম্পতির চার সন্তান রুবেল, রাসেল ও শান্তা ও সানজিদা। গতকাল আদরের ছোট সন্তান সানজিদার লাশ উদ্ধারের পর বাবা-মায়ের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

সেবা খাত নিয়ে টিআইবি’র প্রতিবেদন মনগড়া -পাসপোর্ট অধিদপ্তর
স্টাফ রিপোর্টার : সেবা খাত নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন ও মনগড়া উল্লেখ করেছে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান মনে করেন, মাত্র ৪৮০ জন লোকের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, সেটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ অধিদপ্তরের কার্যপরিধি সম্পর্কে না জেনেই আমাদের তথা বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রয়াস চালিয়েছে টিআইবি।
এর আগে গত ২৯ জুন সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১৫ শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছে পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে। পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়াগুলোতে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে। এ সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে সেবা গ্রহণকারীদের ৭৬ শতাংশই বলেছেন, তাঁদের ঘুষ দিতে হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য অনিয়মের মধ্যে সময়ক্ষেপণ, প্রতারণা, স্বজনপ্রীতি ও আত্মসাতের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ রেজওয়ান জানান, ১১ জুলাই টিআইবির সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রতিবেদনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে টিআইবিকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘টিআইবির জরিপটি করা হয়েছে ১৫ হাজার পরিবার বা খানার ওপর। তারা ৩ দশমিক ২ শতাংশ অর্থাৎ ৪৮০ জন পাসপোর্ট নিয়ে ভোগান্তির কথা বলেছেন। অথচ আমরা এ পর্যন্ত ১ কোটি ৪৫ লাখ পাসপোর্ট দিয়েছি। মাত্র ৪৮০ জনের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে একটি পুরো খাত বা বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলা কতটা সমীচীন।
মাসুদ রেজওয়ান বলেন, আমরা টিআইবিকে বলেছি, পাসপোর্ট তৈরির সঙ্গে পুলিশ ভেরিফিকেশন, ব্যাংকে ফি জমা দেয়া, কাগজপত্র সত্যায়ন, জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহসহ আরও অনেক বিষয় জড়িত। আমার অফিসের বাইরে যেসব বিষয় নিয়ে দুর্ভোগ বা ভোগান্তি, তার দায় অধিদপ্তরের ওপর কোনোভাবেই বর্তায় না। পাসপোর্ট অফিস সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত কি না? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কোনোভাবেই বলব না যে দুর্নীতিমুক্ত। কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতির কারণে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পাসপোর্ট সেবা নিতে গিয়ে যেসব জায়গায় হয়রানির অভিযোগ শোনা যায়, সেগুলো নিরসনের জন্যও ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান মহাপরিচালক। এর মধ্যে রয়েছে অনলাইনে ব্যাংকিং, সোনালী ব্যাংক ছাড়াও পাঁচটি ব্যাংকে টাকা জমা নেয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাখালী ঝিল থেকে ২০ ঘণ্টা পর শিশু সানজিদার লাশ উদ্ধার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ