গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
তখন পশ্চিমের আকাশে প্রায় সূর্যটা ডুবতে বসেছে। কোথাও কেউ নেই। নীরবতা ভেঙ্গে পাঁচজন ব্যক্তি কবরস্থানের ঝিলপাড়ের প্রান্তে গিয়ে নেমেছেন। প্রত্যেকের পরনে ছিলো পিপিই। অ্যাম্বুলেন্স থেকে একটি স্ট্রেচারে করে সাদা কাফনে মোড়ানো নামানো হচ্ছে একটি লাশ। নেই স্বজনদের কান্না। নেই মানুষের ভিড়।
এই যেনো এক অচেনা পরিবেশ। এমন পরিবেশে কবরস্থানের ইমাম ও উপস্থিত আটজন মিলে পড়েন জানাজা । জানাজা শেষে স্ট্রেচারে করে লাশটি কবরের কাছে নেন তারা।
পরে পিপিই পরা তিনজন মিলে লাশটি কবরে নামান। কবরে দেহ নামানোর পর মাটি দেয়া হয়। লাশ নামানো, মাটি দেয়ার মূহুর্তে থম থমে পরিবেশ। কে লাশ ধরবে, কে নামাবে এমন সিদ্ধান্তহীনতা! এভাবেই দাফন করলেন স্ত্রীকে।
গত শনিবার মোহাম্মদপুরের নজরুল রোডে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান রাবেয়া আক্তার নামের ৫০বছর বয়সী এক নারী। জ্বর ও সর্দি থাকা এই নারীর মৃত্যুর পর তাকে রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তাকে দাফন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সিপাহীবাগের চারতলা গলির এক বাসিন্দা জানান, তখন সন্ধ্যা ছয়টা বাজবে। তালতলা কবরস্থানে দুটি অ্যাম্বুলেন্স আসে । অ্যাম্বুলেন্স দুটি কবরস্থানের শেষ মাথায় ঝিলপাড়ের শেষ প্রান্তে গিয়ে থামে। একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামেন পাঁচ ব্যক্তি।
তাদের প্রত্যেকের পরনে ছিল ব্যক্তিগত সুরক্ষার সরঞ্জাম । তারা প্রথম অ্যাম্বুলেন্স থেকে একটি স্ট্রেচারে করে সাদা কাফনে মোড়ানো লাশটি নামান। এরপর কবরস্থানের ইমাম ও উপস্থিত আটজন মিলে জানাজা পড়েন।
জানাগেছে, মৃত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয় বলে সন্দেহ করছেন স্বজনরা। তাই এমন দাফন করতে বাধ্য হয়েছে তারা।
প্রদক্ষদর্শীরা জানান, দাফনে অংশ নেয়া ওই পাঁচজন কবরস্থানের ঝিলের পাড়ে এসে পিপিই খুলে ফেলেন। পিপিইগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তা নষ্ট করেন তারা।
এর মধ্যেই ফেসবুকে এই দাফনের ৯ মিনিটের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায় পুরো দৃশ্যটি ধারণ করা ছিলো। নেটিজেনরা এই ভিডিও শেয়ার করে আবেগণ পোস্টও দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানের স্টাফ মো. ফেরদৌস জানান, ওই নারীর স্বামী ও সন্তানরা দাফনে উপস্থিত ছিলেন। দাফনের আগে তারা কয়েকজন জানাজা পড়েন। আমাদের কয়েকজন তাদের সহযোগিতা করেছে। বাশ ও অন্যান বিষয়গুলো তাদেরকে আমরা দিয়েছি। এই সময় আমাদের সমাজ কল্যান অফিসার স্যার উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।