বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়া বৃদ্ধকে বুকে টেনে নিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ হামিদুল হক। আজ শনিবার সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকের পাতায় এ ছবি ব্যপকভাবে ভাইরাল হয়ে যায়।
জানা গেছে, রাজশাহীর তানোরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা কাগজ কুড়াচ্ছিলেন ৬১ বছরের এক বৃদ্ধ। তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামিদুল হক। ডিসির সঙ্গে ছিলেন তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও থানার ওসি।
হঠাৎ ওই বৃদ্ধের দিকে এগিয়ে যান ডিসি। এগিয়ে যান অন্যরাও। বিষয়টি দেখে ভয় পেয়ে যান বৃদ্ধ। ভয় পেয়ে হাতজোড় করে বৃদ্ধ ভয় পেয়ে হাতজোড় করে ডিসিকে বৃদ্ধ বলেন, ‘বাবা আমার যদি কোনও ভুল হয়, মাফ করে দেন, আমি আর বাজারে আসব না।’ বৃদ্ধের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে আবেগাপ্লুত হন ডিসি। পরে অফিসে ডেকে বুকে জড়িয়ে নেন ওই বৃদ্ধকে।
তাৎক্ষণিকভাবে ওই বৃদ্ধকে আর্থিক কিছু সহায়তা করেন ডিসি। সেখান থেকে ফিরে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ডিসি হামিদুল হক।
ফেসবুকে স্ট্যাটাসে ডিসি হামিদুল হক লিখেছেন, অকারণে যেসব লোকজন বাজারে ছিলেন, তাদের বাজার থেকে সরিয়ে দিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে উপজেলার দিকে যাই। এ সময় ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ মানুষকে রাস্তার পাশে কিছু পুরোনো, ছেঁড়া কাগজ কুড়াতে দেখে কাছে যাই। আমরা কাছে যেতেই এবং সঙ্গে পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে যান বৃদ্ধ।
লোকটি দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বাবা আমার যদি কোনও ভুল হয়, মাফ করে দেন, আমি আর বাজারে আসব না।’ আমি সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধকে বললাম বাবা, এটি কোনও ভুল না। ভীষণ মায়া লাগলো বৃদ্ধ লোকটিকে দেখে। এ বয়সে তার ঘরে থাকার কথা। নাতিপুতিদের সঙ্গে খেলা করার কথা তার। কিন্তু হায় দারিদ্র্য; তুমি তাকে এই চৈত্রের প্রখর রোদে ক’টি টাকার জন্য, সামান্য চাল কেনার অর্থের জন্য কিছু ছেঁড়া কাগজ কুড়াতে বাধ্য করেছো। তার ওপর বিশ্ব কাঁপানো করোনা। কিন্তু এই বৃদ্ধের দারিদ্র্যকে করোনা পরাজিত করতে পারেনি। তাকে আটকে রাখতে পারেনি ঘরে। বৃদ্ধকে বুকে টেনে নিয়ে সামান্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে বললাম, আপনি কিছু চাল-ডাল কিনে বাড়ি চলে যান। কিছুদিন আর বাজারে আাসবেন না।
তিনি বললেন, বাবা আর আসব না। মনটা খারাপ হয়ে গেল।। জানি না তার বাড়িটি কেমন, তার বাড়িতে কে কে আছেন?
ডিসি আরও লিখেছেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বৃদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিতে বললাম। হায় করোনা, তুমি সবাইকে একটু দয়া করো। অন্তত নাম না জানা এই বৃদ্ধের কোনো ক্ষতি করো না। এই মিনতি করি। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে ভালো রাখুন। সারা বিশ্ব হোক করোনামুক্ত। ভালো থেকো বৃদ্ধ বাবা। আমি তোমার খবর রাখব নিশ্চয়। ডিসির এই স্ট্যাটাস মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। প্রশংসায় ভাসতে থাকেন তিনি।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে লোকজনের বাড়িতে অবস্থান পর্যবেক্ষণে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে জেলার তানোর উপজেলায় আসেন জেলা প্রশাসক। এই ঘটনা এখানকার। শনিবার সকালে ফোন করে ওই বৃদ্ধের খোঁজ নিচ্ছিলেন জেলা প্রশাসক। আমরা তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।
প্রাথমিকভাবে যতটুকু জানা গেছে, তার বাড়ি তানোর সদরের কুঠিপাড়ায়। অনেকটা মানসিকভাবে অসুস্থ। শুক্রবার ও মঙ্গলবার তানোরে হাট বসে। এই দুদিন তিনি এসে কাগজ কুড়িয়ে নিয়ে যান। তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সাধ্যমতো সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।