Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাল ব্যবসায়ীদের চালবাজি

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

লালমনিরহাটে চাল নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যবসায়ীদের চালবাজি। ৭দিনের ব্যবধানে লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতি কেজিতে বাড়ছে ১০টাকা করে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে নিত্যপণ্য দ্রব্যমূল্য বাজার মনিটরিং কমিটির সভায় এ আলোচনা উঠে। সভায় চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূলের দাম বাড়ায় উদ্বেক প্রকাশ করা হয়। এসময় জেলার শীর্ষ চাল ব্যবসায়ীগণ ও জেলা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়। চাউল ও নিত্যপণ্য দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্ব ট্রাস্ট ফোর্স বাজারে ভ্রম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে।

জানা গেছে, হঠাৎ করে লালমনিরহাটের বিভিন্ন হাট বাজার ও শহরের বাজার গুলোতে চালের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ৭দিনের ব্যবধানে সকল প্রকার চাল কেজিতে ৭টাকা হতে ১০ টাকা খুচরা মূল্য বেড়েছে। কিন্তু সেই হিসেবে ধানের দাম বাড়েনি। এখনো লালমনিরহাটের হাট বাজারে ভালোমানের ধান ৮শত হতে ৯১০ টাকা মনে বিক্রি হচ্ছে। সরকার সরকারিভাবে ধান কিনছে এক হাজার ৪০ টাকা মন দরে। চাউল কিনছে প্রতিকেজি ৩৬ টাকা দরে। এবছর ধানের মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দুই লাখ মে.টন ধান বেশি উৎপাদন হয়ে ছিল। কৃষক সাড়ে ৪শত হতে সাড়ে ৫শত টাকায় বাজারে ধান বিক্রি করেছে। তাতে কৃষকের ধান চাষের উৎপাদন খরচ উঠেনি। বর্তমানে কৃষকের ঘরে ধান নেই। সব ধান মিল, চালাত মালিক ও মজুরদারদের গোডাউনে রয়েছে। একটি কালোবাজারি চাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃষকের ঘরে ধান না থাকার সুযোগে হঠাৎ বাজারের ধানের দাম বেড়ে দিয়েছে। এছাড়াও মিল মালিক ও চালের মহাজনরা করোনাভাইরাসের সুযোগে চালের বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

জেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৭টি সরকারি গোডাউনে প্রায় ১৪ হাজার ২০ মে.টন চাল মজুদ রয়েছে। ধান মজুদ রয়েছে ৩ হাজর ৪৫৬ মে.টন। এই ধান সরকারি ভাবে ভাঙ্গানোর জন্য মিলভাড়া করা হয়েছে। এ থেকে প্রায় ২হাজার ২৯৬ মে.টন চাল পাওয়া যাবে। দেশে এই মূহূর্তে চালের কোন সঙ্কট নেই। দরিদ্র জনগোষ্ঠির খাদ্য নিরপপত্তা নিশ্চিত করতে জেলায় মার্চ ও এপ্রিল মাসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলছে। সেখানে ৫৯ হাজার ৪৬৪ জন দরিদ্র মানুষকে ১০ টাকা দরে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এতে প্রতিমাসে চাল প্রয়োজন ১৭শত ৮৪ মেঃটন।

লালমনিরহাটের বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একেক বাজারের একই চালের দাম কেজিপ্রতি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। শহরের নবাবেরহাট বাজারের চালের খুচরা বিক্রেতারা ৭দিন আগে স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি বিক্রি করেছে ৩০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি করছে, ৩৬ টাকা, আটাইশ চাল পূর্বের বাজার ছিল ৩৪ টাকা, বর্তমান বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, পায়জন চাল পূর্বে ছিল ৩৪ টাকা, ৭দিনের ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা।

লালমনিরহাট জেলার চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মো. সিরাজুল হক জানান, ব্যবসায়ীয় নেতাদের সাথে জেলা প্রশাসকের বৈঠক হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতিতে চালেল বাজার নিয়ন্ত্রনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। বাজারে বাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটগণ ঘুরবেন। এই ট্রাস্টফোর্সসে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিও রয়েছে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, নিত্যদ্রব্য পন্য বাজার মনিটরিং কমিটির মিটিংয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে বাজার নিয়ন্ত্রনে ট্র্স্ট ফোর্স গঠন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। মাঠে কাজ করবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালবাজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ