মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে লাফিয়ে-লাফিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে চীন, ইতালির পরে ট্রাম্পের দেশ মারণ ভাইরাসের নতুন ভরকেন্দ্র হতে পারে বলে সতর্ক করে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমরা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে দেখছি। তা থেকে আশঙ্কা করা যায় যুক্তরাষ্ট্র এই ভাইরাসের নতুন ভরকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।’ যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারিকে পাত্তাই দিতে চাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বরং সগর্বে তিনি বলেছেন, ‘শাটডাউনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সৃষ্টি হয়নি। মার্কিন নাগরিকরা লকডাউন কি জিনিস তা জানেন না।’
অ্যামেরিকায় এর মধ্যেই করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭৮২ জনের। আক্রান্ত প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ। দেশের প্রতিটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। লকডাউন ঘোষণা হয়েছে বেশ কিছু অঞ্চলে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এখনও সম্পূর্ণ লকডাউনের রাস্তায় যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে চীন এবং ইটালির চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে অ্যামেরিকায়। বস্তুত চীন এবং ইটালি দু'টি দেশই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার পরে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সংক্রমণ ছড়ানোর মুহূর্তেই যদি তাকে আটকে দেওয়া যেত, তাহলে সম্ভবত পরিস্থিতি খানিকটা হলেও সামলানো যেত।
ইটালির ছবি এতটুকুও বদলায়নি। সোম এবং মঙ্গলবার মৃত্যুর হার খানিকটা কমলেও বুধবার ফের তা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৭৪৩ জনের। যার জেরে এখনও পর্যন্ত শুধু ইটালিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ছয় হাজার ৮২০। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত গোটা পৃথিবীতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা চার লক্ষ ১৮ হাজার। এর মধ্যে এক লক্ষের সামান্য কিছু মানুষ সুস্থও হয়ে উঠেছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ৬০০ জনের।
ভয়াবহ পরিস্থিতি স্পেনেও। বস্তুত বিশ্ব স্বাস্থ্য যা-ই বলুক, বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলতে শুরু করেছেন যে, ইটালির পরে স্পেনই হতে চলেছে করোনা ভাইরাসের পরবর্তী কেন্দ্রবিন্দু। শুধু মঙ্গলবারই স্পেনে মৃত্যু হয়েছে ৫১৪ জনের। এখনও পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে প্রায় দুই হাজার ৭০০ জনের। আক্রান্ত প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। স্পেনের প্রশাসন করোনা মোকাবিলার জন্য ন্যাটোর সাহায্য চেয়েছে।
ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার রাত থেকে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন। যদিও গত রবিবার থেকেই দেশের অধিকাংশ রাজ্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সংক্রমণ ছড়ানোর আগেই ভারতের এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত নিউজিল্যান্ডও গোটা দেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী একমাস এই লকডাউন বলবৎ থাকবে। অস্ট্রেলিয়াও আরও কড়া পদক্ষেপ নেবে বলে সেখানকার প্রশাসন জানিয়েছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল জি২০ বৈঠকে বসছেন বিশ্ব নেতারা। সেখানে উপস্থিত থাকবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও। বুধবার টুইট করে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়েই মূলত আলোচনা হবে এই ভার্চুয়াল বৈঠকে। আলোচনা হতে পারে করোনার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা নিয়েও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।