Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গৌরনদীতে ১২টি খেয়াঘাট লকডাউন, কোয়ারেন্টাইনে ৩৩ প্রবাস ফেরত

গৌরনদী (বরিশাল) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২০, ১০:০২ পিএম

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলা ও বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী পালরদী নদীর ১২টি খেয়াঘাট লকডাউন করেছে গৌরনদী উপজেলা প্রশাসন। মাদারীপুর জেলা করোনার ঝুকিতে থাকায় সেখানকার লোকজন যাতে নৌ-রুটে গৌরনদীতে আসতে না পারে সে জন্য গতকাল শনিবার সকাল থেকে পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ দিবারাত খেয়াঘাট পাহারা দিচ্ছে। পালরদী নদীর উপর টরকী বন্দর ও নতুন টরকীর সংযোগ ব্রিজেও পুলিশ পাহারায় রয়েছে।
উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের জহের জাহান ফকির বলেন, আমার প্রতিবেশী হাফিজুল ফকির ওরফে হাফিজ ফকির (২৫) কয়েকদিন পূর্বে ওম্যান থেকে বাড়িতে এসে হাট-বাজার ও এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এর কয়েকদিন পর হাফিজ জ্বর, কাশি ও সর্দিতে আক্রান্ত হলে গৌরনদী হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে এসে আত্মগোপন করেছে। ওইদিন থানার এসআই আসাদুজ্জামান খান হাফিজের বাড়িতে এসে তাকে না পেয়ে তার পরিবারের ৬ সদস্যকে ১৪দিন ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়ে যান। সেই দিন থেকে হাফিজ আত্মগোপণে থাকলেও তার পরিবারের সদস্যরা ঘরের ভেতরই থাকছেন। বিদেশ ফেরতরা হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে অবাধে ঘোরাফেরা করার কারণে আমাদের মধ্যে করোনার আতঙ্ক বিরাজ করছে।।
টরকী বন্দর খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি রাকিব হাওলাদার বলেন, পালরদী নদীতে আমরা প্রতিদিন ৩টি খেয়া নৌাকায় করে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষকে পারাপার করে আসছিলাম। প্রতিদিন কালকিনি উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ২ সহ¯্রাধিক মানুষকে ও মালামাল পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। করোনা বিস্তার রোধের জন্য গতকাল শনিবার সকালে থানা পুলিশ খেয়াঘাটে এসে খেয়া নৌকায় মাণুষ পারাপার বন্ধ করে দেয়। আমরা খেয়া নৌকার ৩ মাঝির পরিবার কিভাবে বাঁচব?
গৌরনদী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লোকজন দিবারাতে গৌরনদীতে অবাধে যাতায়াত করে আসছে। তাই করোনা সংক্রমণ রোধের জন্য গতকাল শনিবার সকাল থেকে টরকী বন্দরে পালরদী নদীর ওপর ব্রিজে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। একই সময় গৌরনদীর সীমান্তবর্তী পালরদী নদী ও ভূরঘাটা- বাকাই খালের ১২টি জায়গায় খেয়া নৌকায় লোকজন পারাপার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যাতে মাদারীপুরের বিভিন্ন উপজেলার মানুষ গৌরনদীতে আসতে না পারে। এ জন্য টরকী বন্দর, গৌরনদী বন্দর, গৌরনদী মাঝের খেয়াঘাট, পিঙ্গলাকাঠি বাজার, হোসনাবাদ বাজার, কয়ারিয়া, কুতুবপুর খেয়াঘাট ও ভূরঘাটা- বাকাই খালের বাকাই বাজার, মেদাকুল বাজার, সালতা খেয়াঘাটসহ ১২টি খেয়াঘাটে নৌকায় কালকিনিবাসীকে পারাপার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গৌরনদীর মানুষকে সচেতনতার জন্য উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভায় শুক্রবার সকাল খেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৮টি মাইক দিয়ে মাইকিং করা হয়েছে বলে ইন্সপেক্টর মোঃ মাহাবুবুর রহমান জানান।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৫০৫ জন গৌরনদীতে এসেছেন। এদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে ৩৩ প্রবাসী রয়েছে। ভারত থেকে বেড়ানা শেষে শতাধিক বাসিন্দা তাদের বাড়িতে ফিরে এসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ শষ্যা বিশিষ্ট একটি আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ রোববার এক হাজার মাস্ক বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া করোনা বিস্তার রোধের জন্য উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভায় ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালরকে আইসোলেশন হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। করোনা বিস্তার রোধের জন্য প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে ইউএনও জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ