চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে বাড়তি ফজিলত ও গুরুত্ব রয়েছে। ইহার বিশেষত্ব হয়তো আমরা অনেকে পুরোপুরি জানিনা। যদি মানুষ নামাজের মধ্যে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর ফজিলত সম্পর্কে পুরোপুরি জানতো, তাহলে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো, দেখা যেতো শেষ পর্যন্ত প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর জন্য লটারী করতে হতো। নামাজের মধ্যে যে বা যারা প্রথম কাতারে দাঁড়ায়, হযরত রাসূল (সা:) তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন। যাদের জন্য স্বয়ং হযরত রাসূল (সা:) মাগফিরাত কামনা করেন, তার বা তাদের জন্যে পরকালীন জীবন নিঃসন্দেহে সুখময় হবে। আজাব গজবের কোনো ভয়-ভীতি থাকবে না। হযরত ইরযাব ইবনে সারিয়া (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, হযরত রাসূল (সা:) প্রথম সারির জন্য তিনবার মাগফিরাত চাইতেন এবং দ্বিতীয় সারির জন্য একবার মাগফিরাত চাইতেন। (ইবনে মাজাহ:১/৯৯৬)।
আল্লাহ রাহমানু রাহিম। আল্লাহতায়ালার দয়া রহমত সর্বত্রই রয়েছে। তাঁর দয়া রহমতের বাহিরে কেউ নেই। তবে যারা নামাজ আদায় করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহতায়ালার রহমত তাদের নিকবর্তী থাকে। আর নামাজের মধ্যে যে বা যারা প্রথম কাতারে দাঁড়ায়, তাদের উপর আল্লাহতায়ালা বেশি বেশি রহমত বর্ষণ করতে থাকেন। তাই নামাজ আদায়ের সময় প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে। হযরত বারা ইবনে আযিব (রা:) বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা:) কে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তাঁর ফেরেশেতারা প্রথম সারির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ:১/৯৯৭)।
যেহেতু নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে মাগফিরাত ও আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত রয়েছে। তাই আজানের ধ্বনি কানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে কাল বিলম্ব না করে মসজিদে গিয়ে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। তাহলে আল্লাহর রহমত বরকত আমাদের নিকটবর্তী থাকবে। হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) বলেছেন, লোকেরা যদি প্রথম সারিতে কী আছে তা জানতো, তবে এ জন্য তারা লটারী করতো। ( ইবনে মাজাহ: ১/৯৯৮)।
নামাজ আদায়ের সময় প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কোন অবহেলা করা যাবে না। কোন প্রকার আলস্য প্রদর্শন করা যাবে না। আমরা যদি নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অবহেলা বা আলস্য প্রদর্শন করি, তাহলে আখিরাতে আমাদেরকে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মূখীন হতে হবে। নামাজে আলস্য প্রদর্শন করা মুনাফিকের কাজ। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে, তিনি তাদের ধোকায় ফেলে শাস্তি দেন এবং তারা যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন আলস্য ভাবে দাড়াঁয়, লোক দেখানোর জন্য, তারা আল্লাহকে অল্পই শ্নরন করে।’ (সূরা নিসা: ১৪২)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,‘অতত্রব দুর্ভোগ সেসব সালাত আদায়কারীর যারা নিজেদের সালাত আদায়ে অমনোযোগী।’ (সুরা মাউনের ৪-৫)। নামাজে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর জন্য আমাদেরকে আরো মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুক। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।