Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারফিউ ভেঙে কাশ্মিরে বিক্ষোভ নিহতের সংখ্যা ৩২ জনে বৃদ্ধি

প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে চারদিনের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২। এর মধ্যে ৩১ জন বিক্ষোভকারী ও একজন পুলিশকর্মী। আহত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার। কাশ্মিরের ১০টি জেলায় কারফিউ জারি রয়েছে। এই বিক্ষোভের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তার সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিও যে উদ্বিগ্ন সে বিষয় জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মুফতিকে। অন্যদিকে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুতে ভারতের নিন্দা করেছে পাকিস্তান। দেশটির মতে, বিচার বহির্ভূতভাবে বুরহান ওয়ানিকে হত্যা করেছে ভারত। এ হত্যাকা- ঘটিয়ে ভারত কাশ্মিরিদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে। পাকিস্তানের এসব অভিযোগের অবশ্য কোনো জবাব দেয়নি ভারত। বরং বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে উপরি পাওনা বলে জানাচ্ছেন ভারতের গোয়েন্দারা।
গত শুক্রবারের এনকাউন্টারে আদৌ বুরহানের উপস্থিতি সম্পর্কে গোয়েন্দাদের কাছে নাকি কোনো তথ্যই ছিল না। ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের এক শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, কোকেরনাগে কয়েকজন হিজবুল জঙ্গি আত্মগোপন করে রয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর ছিল। ওদের মধ্যে সরতাজ আহমেদ থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত ছিল। তবে বুরহান ওয়ানিকে পেয়ে যাওয়া আমাদের কাছে বোনাস পাওয়ার মতো। কাশ্মিরের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাশ্মির স্ক্যান জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ৭৫০ জন বেসামরিক কাশ্মিরি। এর মধ্যে দুই শতাধিক আহতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ জানিয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন। মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬৫ জনেরও বেশি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওষুধের কোনো সংকট নেই। আহতদের বেশ কয়েকজন চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। প্যালেটের আঘাতে অন্তত ১৯ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, অন্তত ৯২ জনের চোখে সার্জারি করা হয়েছে। এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন কাশ্মিরের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. সাজ্জাদ খানদায়। পুলিশের দাবি, এখনও কুলগাম থেকে নিখোঁজ তিন পুলিশ সদস্যের কোনও খোঁজ তারা পাননি। তাদের ধারণা, ওই তিন পুলিশ সদস্যকে অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে। গত সোমবারও কাশ্মিরের নানা প্রান্তে থানা, সেনা শিবির ও নিরাপত্তাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে জনতা। পুলিশের দাবি, জওয়ানদের ওপরে হামলার পাশাপাশি অস্ত্রশস্ত্র লুটেরও চেষ্টা করা হয়। অনন্তনাগে পুলিশের একটি সাঁজোয়া গাড়ি ঝিলাম নদীতে ডুবিয়ে দিলে তার চালক ফিরোজ আহমেদের মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সেনা ও পুলিশ যৌথ অভিযানে বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। হিজবুল কমান্ডার নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় তার বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে বুরহান নিহত হন বলে দাবি করে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের আংশিক অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউর আওতায় আসে আশে-পাশের আরও বেশকিছু অঞ্চল।
অপর এক খবরে বলা হয়, কারফিউয়ের কারণে কাশ্মিরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কাশ্মিরি মুজাহিদদের খ-যুদ্ধ হয়েছে। হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির নিহতের পর রাজ্যটিতে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১০ সালের পর কাশ্মিরে এই প্রথম কোনো ঘটনায় এতো লোক নিহত হয়েছে। ২০১০ সালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১২ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, কাশ্মির স্ক্যান, এনডিটিভি, জিনিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কারফিউ ভেঙে কাশ্মিরে বিক্ষোভ নিহতের সংখ্যা ৩২ জনে বৃদ্ধি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ