Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন করোনা প্রতিষেধকে ১৫ রোগীর জীবন রক্ষা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, একটি পরীক্ষাম‚লক ওষুধের মাধ্যমে করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। মোট ১৫ গুরুতর রোগীর উপরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানা গেছে।

করোনায় আক্রান্ত এক মার্কিন মহিলার উপরে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রতিষেধক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ওই মহিলার শরীরে গত ফেব্রæয়ারি মাসের ২৬ তারিখে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। তার অবস্থা ছিল গুরুতর। এই প্রতিষেধকের গবেষণা দলে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিস মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন। গত শুক্রবার এক বিজ্ঞান ম্যাগাজিনে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানান, ‘আমরা ভেবেছিলাম তিনি মারা যাবেন, তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি।’ ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার ৩৬ ঘন্টা পরে, ডাক্তাররা তাকে রেমডেসিভির দিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই ওষুধ ‘আইভি’ বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি রক্তে প্রবেশ করানো হয়। এটি শরীরে থাকা ‘আরএনএ পলিমেরাজ’ নামের একটি এনজাইম বিকল করে দেয়। অনেক ভাইরাস নিজেদের অনুলিপি তৈরি করতে এই এনজাইম ব্যবহার করে।

রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা কোন ক্লিনিকাল ট্রায়াল ছাড়াই এই প্রতিষেধক ব্যবহারের জন্য এফডিএর কাছ থেকে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ ব্যবহারের অনুমতি পেতে সক্ষম হন। এটি প্রয়োগের পরে একদিনের মধ্যেই মহিলাটির শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ কমতে থাকে ও তার অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। গোপনীয়তার কারণে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ানো হয়েছে কিনা তা প্রকাশ করেননি ডাক্তার থম্পসন, তবে তিনি জানিয়েছেন যে, রোগী ভাল আছেন।

একইভাবে, ডায়মন্ড প্রিন্সেস ক্রুজ জাহাজে থাকা ১৪ যাত্রী, যাদের শরীরে করোনভাইরাস ধরা পড়েছিল, তাদের উপরেও এই ‘রেমডেসিভির’ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এ বিষয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসের সহকারী সার্জন জেনারেল এবং ফুসফুসের বিশেষজ্ঞ রিচার্ড চাইল্ডস শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন যে, জাপানের একটি হাসপাতালে পরীক্ষাম‚লকভাবে এই ওষুধ দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছিল। তিনি জানান, রোগীদের সবাই খুব গুরুতর অসুস্থ ছিলেন এবং তাদের গড় বয়স ছিল ৭৫ বছর। তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু, এই ওষুধ প্রয়োগের দু’সপ্তাহ পরে দেখা গেল কেউ মারা যায় নি এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এটা একেবারে আশ্চর্যজনক ঘটনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে, উভয় ডাক্তারই স্বীকার করেছেন যে, ‘রেমডেসিভির’র ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষা করা দরকার। এ বিষয়ে থম্পসন বলেন, ‘ওষুধটির কারণে নির্দিষ্ট কিছু রোগীর লিভারে বিষক্রিয়া হতে পারে এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোও আরও কিছু পরীক্ষাম‚লক ওষুধ নিয়ে এগিয়ে আসছে যা বেশি কার্যকর হতে পারে।’ অন্যদিকে, ডাক্তার চাইল্ডস ‘রেমডেসিভির’ সম্পর্কে বলেন, ‘ড্রাগের কোন ক্ষতিকর প্রভাব আছে কী না, তা নির্ধারণ করতে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে।’

যাই হোক, মার্কিন জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস-এর তথ্য অনুসারে, ‘রেমডেসিভির’ সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত কিছু হাসপাতালে ভর্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীদের উপরে ‘নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিকাল ট্রায়াল’ শুরু করেছে ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা। সূত্র : ডেইলি মেইল।



 

Show all comments
  • Shaneyaj Hossain Saju ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:১৩ এএম says : 0
    দেশের জনগনের স্বার্থে সরকার "কোয়ারেন্টি " বিষায়ে আরো কঠোর হওয়া দরকার, তানাহলে দেশে খুব শিঘ্রই মহা দুর্যোগ দেখা দেবে, তখন বাংলাদেশের মত এত ঘনবসতি দেশে করোনা সামলানো আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে
    Total Reply(0) Reply
  • Anjona Tripura ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:১৬ এএম says : 0
    এই ভাইরাস চীন এবং আমেরিকার আবিষ্কার, কোনো রাসায়নিক দ্রব্য থেকে। কোনো খাদ্যাভ্যাস থেকে নয়। এর আসল রহস্য একদিন উদঘাটন হবে অপেক্ষা রইলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nezam Uddin ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:১৭ এএম says : 0
    "করোনা" হলো মহান আল্লাহ তায়ালার একটা নিদর্শন। এ দুনিয়া ধ্বংশ করতে পারমাণবিক বোমার দরকার হবে না। সামান্য অদৃশ্য ভাইরাসেই টালমাটাল!! কোন দেশ কোন দেশের পাশে থাকবেনা। এমনকি পিতা পুত্র স্বামী স্ত্রীও দূরে চলে যাবে। উৎপাদন, যোগাযোগ এমনকি চিকিৎসকও দৌড়ের ওপর থাকবে। "করোনা" তার একটা অনন্য নজির। এ মহাবিশ্বে যা কিছুই হচ্ছে মহান আল্লাহ'র ইচ্ছায়। প্রকৃতি বলতে কোন কথা নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • আসাদুল্লাহ আসাদ ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    করোনায় হোক আর ডেংগুতে হোক। মরেন আর না মরেন। আল্লাহর দিকে ফিরে আসাই একমাত্র সমাধান। আল্লাহ ওয়ালা হয়ে বাচলেও লাভ, মরলেতো আরও লাভ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ