পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কৃষি সেক্টরের বিরাট সম্ভাবনাময় একটি খাত তুলা। খাতটি বহুদিন ধরেই রয়েছে পিছিয়ে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেই। বাড়ছে না তুলা আবাদ ও উৎপাদন। অথচ তুলা উন্নয়নে বিশাল একটি বোর্ড রয়েছে দেশে। রয়েছে গবেষণাগার ও বোর্ডের হাজার হাজার একর বীজবর্ধন খামার। গবেষণারগুলোতে মূল্যবান যন্ত্রপাতি পড়ে থেকে মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে, ব্যবহার নেই। জোরদার পরিকল্পনাও নেই বোর্ডটিকে এগিয়ে নেয়ার। ভারত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণা কার্যক্রমের ফর্মুলা কাজে লাগিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পুরণ করেও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করছে। যে সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে বাংলাদেশেও।
দেশে ৪শ’ ৬০টি স্পিনিং মিলের কাঁচামালসহ সর্বমোট তুলার চাহিদা রয়েছে বছরে ৮০ লাখ বেল। এর বিপরীতে গড়ে উৎপাদিত হয় মাত্র ২ লাখ বেল। বাকি ৭৮ লাখ বেল তুলা হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে আমদানি করতে হয়। তুলা আবাদ ও উৎপাদনে একসময় রেকর্ড সৃষ্টির বাংলাদেশ একেবারেই পিছিয়ে রয়েছে। যদিও বর্তমানে ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) সহায়তায় তুরস্ক ১৩টি জাতের গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে দেশে আবাদ ও উৎপাদন বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাপ্রকাশ করেছেন।
গবেষণার দুর্বলতা এবং তুলা আবাদ ও উৎপাদনে নানা সমস্যার কথা স্বীকার করে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ফরিদ উদ্দীন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, খাদ্য উৎপাদনের দিকে বহুগুণে জোর দেওয়ার কারনে তুলা উৎপাদনের জন্য ফ্রি ল্যান্ড পাওয়া মুশকিল। তারপরেও আমি আশাবাদী দেশে অন্তত ১৫লাখ বেল তুলা উৎপাদন করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছি। তিনি জানান, গবেষণার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠছি। চেষ্টা চলছে কিভাবে তুলা আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বোর্ডটিকে এগিয়ে নেওয়া যায়। জনবল সংকটে নতুন নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রমতে, তুলা শুধুমাত্র বস্ত্রশিল্পের জন্যই নয়, অন্তত ৪শ’ রকমের পণ্য তৈরি হয়। বাংলাদেশেও তুলার বীচি থেকে সাবান ফ্যাক্টরির ক্রুড অয়েল তৈরি হয়। আবার ক্রুড অয়েল রঞ্জন পদার্থ ‘গোসিপোল’ থাকে যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর বিধায় রিফাইন করে ভোজ্য তেল তৈরি করা হচ্ছে। তুলা বীচির খৈল ব্যবহৃত হয় চিংড়ি ঘেরেও। তুলার বীচি ভাঙানো ও তেল-খৈল তৈরির জন্য দেশে বেশ কিছু ক্ষুদ্র্র প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ তুলা আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হলে খুলবে বহুমুখী সম্ভাবনার দ্বার ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মাটি তুলা আবাদ ও উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী এটি পরীক্ষিত। প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. কুতুব উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে তুলার ফলন বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বেশ ক্ষতি করে দেয়। তিনি জানান, উপক‚লীয় অঞ্চলে লবণাক্ততায় মোটামুটি উঁচু জমিতে তুলা স¤প্রসারণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তুলা অনেকটা লবন সহিঞ্চু।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ৪টি রিজিয়ন (আঞ্চলিক) রয়েছে। এটি আবার ভাগ করে ১৩টি জোনে বিভক্ত করা হয়েছিল। যার আওতায় ছিল ১শ’ ৫৬টি তুলা উন্নয়ন ইউনিট। নিত্যনতুন বীজ উদ্ভাবন, তুলা চাষ স¤প্রসারণ, উন্নয়ন, পরিকল্পনা ও গবেষণা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা চলছে। বিশাল বিশাল মাঠ রয়েছে বীজবর্ধণ খামারের জন্য। আছে গবেষণাগার। কিন্তু নেই গবেষক ও বিশেষজ্ঞ। রংপুরের মাহিগঞ্জে আছে ১শ’টি ‘জার্মপ্লাজম’। যেখানে গবেষণা করে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দক্ষ গবেষক ও বৈজ্ঞানিকের অভাবে তা হচ্ছে না।
সুত্র জানায়, যশোরের চৌগাছার জগদীশপুর, দিনাজপুরের সদরপুর, গাজীপুরের শ্রীপুর ও রংপুরের মাহিগঞ্জের গবেষণাগারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। গবেষণাগারগুলোতে যা বিজ্ঞানী দরকার কোথাও কোথাও শতকরা ৫ভাগও নেই। তুলা উন্নয়ন বোর্ড দাবি করেছে, তুলা আবাদে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের কথা, গবেষণাগারগুলোতে স্বল্পকালীন নতুন জাত উদ্ভাবন করলে তুলার সুদিন ফিরবে, সম্ভব হবে সাফল্য অর্জন। গবেষণার উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার, তুলা চাষীদের প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেওয়া, সহজ শর্তে ঋণ, স্বল্পমেয়াদী উন্নতমানের বীজ সরবরাহ, অলাভজনক ফসলের পরিবর্তে তুলা চাষ স¤প্রসারণ এবং উন্নয়ন ও পরিকল্পনা করা হলে তুলা উৎপাদনে রীতিমতো বিপ্লব ঘটবে বলে সংশ্লিষ্ট মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দাবি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।