Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইতিহাস গড়ে গর্বিত সিদ্দিকুর

প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জাহেদ খোকন : বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গণে ইতিহাস গড়লেন কৃতি গলফার সিদ্দিকুর রহমান। তিনি নিজ যোগ্যতা বলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসর ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত অলিম্পিক গেমসে সরাসরি খেলার সুযোগ পেলেন। বিশ্ব গলফ র‌্যাংকিংয়ে ৫৬তম অবস্থানে থেকে ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেন সিদ্দিকুর। গতকাল এ তথ্য দেশসেরা গলফার নিজেই ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেছেন। এবারের অলিম্পিকে ৬০ জন গলফার সরাসরি খেলতে পারবেন। যার মধ্যে অন্যতম সিদ্দিকুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া আসরে খেলার সুযোগ পেয়ে তিনিই হলেন প্রথম বাংলাদেশী যিনি ওয়াইল্ড কার্ড পেয়ে নয়, নিজ যোগ্যতায় সরাসরি অলিম্পিকে খেলার অনন্য রেকর্ড গড়লেন।
দীর্ঘ ৪৫ বছর আগে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও এমন কৃতিত্ব কেউ দেখাতে পারেননি। স্বাধীনতার পর সবক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও এগিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে সংখ্যায় কম হলেও লাল-সবুজের ক্রীড়াবিদরা সাফল্যের ধারাবাহিকতায় রয়েছেন। দাপটের সঙ্গেই দক্ষিণ এশীয় গেমস থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ গেমস পর্যন্ত সব আসরেই পদক জিতেছেন তারা। তবে অলিম্পিক গেমসে বরাবরই ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু সেই ধারা ভেঙ্গে এবার সরাসরি রিও অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন দেশসেরা গলফার সিদ্দিকুর রহমান। খবরটি পেয়ে উল্লসিত সিদ্দিকুর। আনন্দ-উচ্ছ¡াসে প্রায় বাকরুদ্ধ হবার যোগার। তারপরও মুঠোফোনে সিদ্দিকুর বলেন,‘এ সম্মান দেশের। আমি রিও অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে গর্বিত। চেষ্টা করবো সেরা পারফরমেন্স দেখিয়ে ব্রাজিলে দেশের মান বাড়াতে।’
দীর্ঘ দেড় যুগ ধরেই গলফের সঙ্গে যুক্ত সিদ্দিকুর রহমান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত অ্যামেচার গলফার হিসেবে এশিয়ায় ১২টি ইভেন্টে শিরোপা জিতেছেন তিনি। যার মধ্যে বাংলাদেশে পাঁচটি, দু’টি করে পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও নেপাল এবং একবার ভারতে শিরোপা জেতেন। ২০০৬ সালে পেশাদার গলফ জগতে প্রবেশ করেন সিদ্দিকুর। অংশ নেন ভারতের প্রফেশনাল গফল ট্যুরে। এরপর কেবলই এগিয়ে যাওয়ার পালা পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার এই গলফারের। ক্যারিয়ারে দু’টি এশিয়ান ট্যুরের ট্রফিও জেতেন ১৯৮৪ সালে জন্ম নেয়া সিদ্দিকুর। ২০১০ সালের ১ আগস্ট ব্রæনাই ওপেন এবং ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন এশিয়ান ট্যুর শিরোপা জেতেন তিনি। প্রথম পেশাদার গলফার হিসেবে লাল-সবুজের পতাকা উড়ান বিদেশে। এক সময় ‘বাংলার টাইগার উডস’ নামেও আখ্যায়িত হন।
সিদ্দিকুর সরাসরি রিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাওয়া দারুণ খুশী বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) উপ-মহাসচিব ও ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান মিকু। তিনি বলেন, ‘একাগ্রতা ও সাধনায় এটা অর্জন করেছে সিদ্দিকুর। বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সম্মান। আসলে অধিক পরিশ্রম এবং নিজের মেধার জোরেই সরাসরি অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে সিদ্দিকুর, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার এমন অর্জনে বিওএ এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই আনন্দিত।’
ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে আগামী ৫ আগস্ট বসছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিক গেমসের এবারের আসর। ক্রীড়ায় অনগ্রসর দেশগুলোর সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদরা ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার মাধ্যমে এই আসরে অংশ নেন। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের বিশ্ব সংস্থার মাধ্যমে ক্রীড়ায় অনগ্রসর দেশগুলোর মধ্য থেকে সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত করে তাদেরকে অলিম্পিকে খেলার সুযোগ করে দেয়ার জন্যই ওয়াইল্ড কার্ডের প্রচলন করে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। ওয়াইল্ড কার্ড পেয়ে ইতোমধ্যে রিও অলিম্পিকে যাওয়া নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের কৃতি শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকী, আরচ্যার শ্যামলী রায় এবং সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও সোনিয়া আক্তার টুম্পা। কিন্তু গলফার সিদ্দিকুর রহমান নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই সরাসরি অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। যা বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইতিহাস গড়ে গর্বিত সিদ্দিকুর
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ