Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঢামেকের ৭ দশক

প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দেশের চিকিৎসা শিক্ষার সেরা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ৭০ বছর পূর্ণ করেছে। গতকাল দেশের প্রাচীনতম এই মেডিকেল কলেজ ৭১তম বর্ষে পা দিয়েছে। ঢামেক অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আগামী ১৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করবেন কলেজের নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি মোট ১০২টি মেডিকেল কলেজ থাকলেও ঢামেককেই মেডিকেল শিক্ষার শীর্ষ পাঠস্থান। একটি উন্নতমানের মেডিকেল কলেজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটরি, হাসপাতাল ও রোগী (একাডেমিক, ছুক্লনিক্যাল ও ল্যাবরেটরিজ) সব কিছুরই সুব্যবস্থা রয়েছে এ কলেজটিতে।
’৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনসহ নানা ঐতিহাসক ঘটনার স্বাক্ষী ঢাকা মেডিকেল কলেজ। কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান। নিজে যদিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন তদুপরি ঢামেককে দেশের শ্রেষ্ঠ মেডিকেল কলেজ বলে স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি তিনি।
ঢামেকে বর্তমানে শুধু স্নাতক (এমবিবিএস) কোর্সই নয়, ৪৫টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। এমবিবিএস কোর্সটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্নাতকোত্তর কোর্স বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে ১ হাজার ২০০ ও স্নাতকোত্তর কোর্সে সহস্রাধিক দেশি বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। স্নাতক পর্যায়ে প্রতি বছর দেশি ১৯৭ এবং সার্ক ও নন-সার্ক কোটায় ২৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
আধুনিক পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালনার জন্য এখানে ৩৮০ জন শিক্ষক রয়েছেন। পাশাপাশি হাতে-কলমে শিক্ষাদানের জন্য আছে আধুনিক ল্যাবরেটরি ও যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় সকল শিক্ষা উপকরণ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, বর্তমান ঢামেক ভবনটি ব্রিটিশ আমলে সেক্রেটারিয়েট ভবন ছিল। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ভবনটি এর আর্ট অ্যান্ড লাইব্রেরি বিল্ডিং হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে ১০০ শয্যার আমেরিকান বেইজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধ শেষে আমেরিকানরা চলে যাওয়ার পর হাসপাতাল পড়ে থাকে। তখন ব্রিটিশ সরকার ঢাকা, করাচি ও তৎকালীন মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই) তিনটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ উদ্দেশে তৎকালীন ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. মেজর ডবিøউ জে ভারজিনসহ খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। তাদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৬ সালের ১০ জুলাই কলেজের গৌরবময় যাত্রা শুরু হয়। তবে সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ বহু ইতিহাসের স্বাক্ষী ঢামেকের পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে সেখানে বহুতল বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্বান্ত নিয়েছেন।
১৯৪৬ সালে প্রথম বর্ষ থেকে পঞ্চম বর্ষ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়। প্রথম বর্ষ ‘কে-ফাইভ’, দ্বিতীয় বর্ষ ‘কে-ফোর’, তৃতীয় বর্ষ ‘কে-থ্রি’, চতুর্থ বর্ষ ‘কে-টু’ ও পঞ্চম বর্ষকে ‘কে-ওয়ান’ হিসেবে ধরা হয়।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তখন শুধু ‘কে ফাইভ’ ছাড়া সব শিক্ষার্থী কলকাতা থেকে মাইগ্রেট হয়ে আসেন। শুরুর দিকে কলেজে এনাটমি ও ফিজিওলজি বিভাগ ছিল না। শিক্ষার্থীরা মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে ক্লাস করতো। এক মাস পর এনাটমিতে প্রফেসর পশুপতি ও ফিজিওলজির প্রফেসর হীরালাল সাহা যোগ দেন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম ক্লাস শুরু হয়।
কলেজের প্রথম শিক্ষকদের মধ্যে ফরেনসিক ডা. আনোয়ার আলী ও ডা. কাজী আবদুল খালেক, মিডওয়াইফারি অ্যান্ড গাইনোকোলজি প্রফেসর হাবিবউদ্দিন আহমেদ ও প্রফেসর হুমায়রা সাইদ, মেডিসিনের প্রফেসর নওয়াব আলী, প্রফেসর এ কে এম ওয়াহেদ, প্রফেসর এ কে এম শামসুদ্দিন ও সার্জারির চিকিৎসক মেজর এফ ডবিøউ ইলিসন, প্রফেসর ইভন নোভাক ও প্রফেসর গিয়াসউদ্দিন অন্যতম ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢামেকের ৭ দশক

১২ জুলাই, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ