Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কিত খুলনার নেত্রীরা

৪ দিনের রিমান্ডে সাদিয়া

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

সাবেক শ্রমিক লীগ নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তার আটকের খবরে ঘুম হারাম হয়ে গেছে পাপিয়াখ্যাত খুলনার নেত্রীদের। সরকারি দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পদ-পদবী ব্যবহার করে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া বিতর্কিত নারী নেত্রীদের ওপর বেড়েছে নজরদারি। দল ক্ষমতাসীন হওয়ার সাথে সাথে কিছু হাইব্রিড নারী নেত্রী সরকারি দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পদ ও বিভিন্ন ভুইফোড় মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে দেহ ব্যবসা, বড় কর্তাদের সুন্দরী নারী সরবরাহ করে নিজের এবং পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনকারী কথিত নেত্রীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে।
খুলনার কয়েকটি আবাসিক এলাকা বিশেষ করে নিরালা, সোনাডাঙ্গা ১ম ফেজ ও ২য় ফেজ, টুটপাড়া, বয়রা, মুজগুন্নির কেডিএ আবাসিক, দৌলতপুরসহ বেশ কিছু এলাকার নারী নেত্রীদের ফ্ল্যাটে, বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন পার্টিতে সমাজপতিদের নিয়ে চলে আমোদ-ফুর্তি। রাত গভীর হলে নেত্রীদের বাসাবাড়িতে দামি দামি গাড়ি আসা যাওয়া ছিলো নিত্য-নৈমিত্যিক ব্যাপার। অনেক নেত্রীর ফ্ল্যাট বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপসহ মাদকের রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ অনেক দিনের।

এদিকে, শ্রমিক লীগ নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তা (৩২) এখন ‘টক অব দ্য খুলনা’। শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া দুইটায় খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল ইসলাম তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেফতারের পর গত মঙ্গলবার তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।

সূত্র মতে, স্থানীয় আওয়ামী লীগকে পাত্তা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি বাগিয়ে নিয়েছিলেন সাদিয়া। তবে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই তাকে বহিষ্কার করা হয়। স¤প্রতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ টিম বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় সাদিয়াকে গ্রেফতার করেছে। তার বাসা থেকে ১২ ভরি ৩ আনা চোরাই সোনা এবং সোনা বিক্রির ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ সরদার ও মৃত মোসাম্মদ ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় কন্যা সাদিয়া। বাবা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার পাশে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন।

দেড় যুগ আগে ঢাকার জুরাইন এলাকার ছেলে শুকুর আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। এ সময় শুকুর প্লট ও জমির ব্যবসা করতেন। সাদিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তবে কয়েক বছর আগে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন তিনি।
তবে নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করে যুগ্ম সম্পাদক জাহানারা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতার সঙ্গে সাদিয়ার সখ্য ছিল। নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার মজিদ সরণিতে অবস্থিত ‘গুহা ইন খুলনা’ রেস্টুরেন্টের ব্যবসা রয়েছে সাদিয়া-শুকুর দম্পতির। এটি খুলনার একমাত্র মাটির নিচে থাকা রেস্টুরেন্ট।

এদিকে নগরীর হরিণটানা থানার রাসেল সড়কে এ দম্পতির রয়েছে বহুতল ভবন। বাড়ির সামনে ১টি এবং গ্যারেজে ৪টি মোটরসাইকেল দেখা যায়। যার বেশিরভাগের রেজিস্ট্রেশন নেই। ভবনের নিচতলার ১টি ফ্ল্যাটে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক সরদার এবং অপরটিতে ভাড়াটিয়া রয়েছেন। পুরো বাড়ি সিসি ক্যামেরার আওতায়।
অন্যদিকে খুলনা মহানগর ও জেলায় বিভিন্ন অপকর্ম এবং তদবিরবাজ নেত্রীদের কোন নির্দিষ্ট আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের জীবনযাপন, সম্পদই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে তাদের ক্ষমতার দাপট। এ সকল নারী নেত্রীরা দলের নাম ভাঙিয়ে মালিক বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার, বহুতল বিল্ডিংয়ের। এদের মধ্যে মহিলা আ.লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, মানবাধিকার কর্মী, কথিত সংবাদ কর্মী, কিন্ডার গার্টেন পরিচালকসহ কয়েকজন নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। অপকর্মে লিপ্ত নারী নেত্রীরা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের বড় কর্তা ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শয্যা সঙ্গী হয়েছেন, কখনো সুন্দরী যুবতী মেয়ে বাসায় এনে তাদের মনোরঞ্জন করে রাতারাতি বদলে গিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। তাদের আয়ের সাথে ব্যয়ের কোন সাদৃশ্য নেই। ঢাকায় পাপিয়া গ্রেফতার হলেও খুলনার পাপিয়ারা রয়েছেন এখন ধরা ছোয়ার বাইরে। স্থানীয় আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তৃনমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা হাইব্রিড এসব মক্ষীরাণীখ্যাত নারী নেত্রীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

 



 

Show all comments
  • Ahmed Rumi ১৩ মার্চ, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
    এগিয়ে যাচ্ছে নারীবাদীরা! এগিয়ে যাচ্ছে দেশ! শুধুমাত্র ঢাকায়, প্রতি ঘন্টায় একটা করে ডিভোর্স হচ্ছে। বেগম রোকেয়া চেতনায় উদ্দীপ্ত ষোল বছরের মেয়েরা সহপাঠিনীর বিয়ে ঠেকিয়ে দিলেও নিজেদের সাড়ে চার লক্ষ বাৎসরিক এবরশন ঠেকাতে পারছে না। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর চোখের খোরাক হওয়ার চেতনায় বিভোর তরুনীরা নিজের ঘরে কাপড়ধোয়া রান্নাবান্নার মত বিষয়কে কেন্দ্র করে শুধু ঢাকাতেই ডিভোর্স নিচ্ছে প্রায় ৭০ শতাংশ। চেতনা. চেতনা.. চেতনা... চারদিকে শুধু চেতনা.... কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেতনার পিরামিড গড়ে তোলা তরুনীদের দিন শেষে নিজ কাঁধে উঠছে হতাশার হিমালয়। ফলাফল- শুধুমাত্র বিষ আর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা বছরে ১০ হাজার তরুণীর। এয়ারহোস্টেস তথা বিমানের ওয়েটার হওয়ার নাম যোগ্যতা আর নিজ ঘরে রান্না করাটা বুয়াগিরি! বসের ব্লেজার পড়িয়ে দেয়ার নাম পারফরমেন্স, শ্বশুর-শাশুড়ির গামছা এগিয়ে দেয়া পরাধীনতা। কাস্টমারদের গালাগাল খারাপ ব্যবহারকে হাসি মুখে সামাল দেয়ার নাম কোয়ালিটি, ক্লান্ত স্বামীর ধমক মানে আত্মমর্যাদার হনন! কি আর গিলতে বাকি জাতির? "দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়" স্লোগানে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের? ওরা তো বলছে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে .... আসলে কোন দিকে??
    Total Reply(0) Reply
  • শাহ জালাল ১৩ মার্চ, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
    Khulna jossore very famous now
    Total Reply(0) Reply
  • Maruf Uddin Nirub ১৩ মার্চ, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
    পাপিয়ার দিন শেষ সাদিয়ার বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • জিবনের শেষ চিঠি ১৩ মার্চ, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
    দুর খালি বিনোদন আর বিনোদন
    Total Reply(0) Reply
  • Nizamul Haque ১৩ মার্চ, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    ইদানীং সব বাঘিনী বিনোদন চলছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ