Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আস্থার সঙ্কটে পুলিশ

প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা মিতু হত্যা রহস্যের জট খুলছে না। মিলছে না বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তরও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আলোচিত এবং চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐকে ঘিরে যে ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে তা দূর করা না গেলে পুলিশের অনেক কাজই আস্থার সংকটে পড়বে। এই হত্যাকাÐের তদন্ত নিয়ে পুলিশের রহস্যময় আচরণ সারাধণ মানুষের মধ্যেও সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।
খুনের এক মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এরমধ্যে ধরা পড়েছে কিলিং স্কোয়াডে থাকা কয়েকজন। তবে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐ ঘিরে থাকা কিছু প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না পুলিশ। এরমধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী কে, কেন মিতুকে হত্যা করা হয়েছে, তার স্বামী বাবুল আক্তারকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কেন কিংবা কিলিং স্কোয়াডের দুই সদস্যইবা কেন মারা গেল বন্দুকযুদ্ধে- তার কোন জবাব নেই। উত্তর মিলছে না পুলিশের দাবি অনুযায়ী হত্যাকাÐের মূলহোতা প্রধান সন্দেহভাজন মুছার অবস্থান নিয়েও। তবে পুরো রহস্য বা এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার কথা যাদের, সেই পুলিশও কুলুপ এঁটেছে মুখে।
মূলহোতা আবু মুছাকে পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। স্ত্রী পান্নার দাবি তাকে ২২ জুন ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তাকে ঢাকায় নিয়ে বাবুল আক্তারের মুখোমুখিও করা হয়। যদিও তা অস্বীকার করে আসছে পুলিশ। তাই পুরো ঘটনা ঘিরে ধোঁয়াশাও কাটছে না। পান্না দাবি করেন মুছাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দিন পুলিশের সাথে নূর নবীও ছিল। তবে নবীকে ধরার বিষয়টিও পুলিশ বরাবরই অস্বীকার করে আসে। অথচ ঈদের দুইদিন আগে নবী ও রাশেদ পুলিশের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে মারা যায়।
গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে নির্মম হত্যাকাÐের শিকার হন মাহমুদা খানম মিতু। প্রথমে পুলিশ এই হত্যাকাÐের জন্য জঙ্গিদের দায়ী করে। পরে এই ঘটনায় জামায়াত-শিবির জড়িত থাকার বিষয়েও সন্দেহ করা হয়। এরমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। দুইজনকে ৭ দিন করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে হাটহাজারীর মুসবিয়া দরবারের খাদেম আবু নসর গুন্নুকে ত্রিশ লাখ টাকার বিনিময়ে পুলিশ এই মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
অপরজন মাদকাসক্ত যুবক শাহ জামাল রবিন। রিমান্ড শেষে পুলিশ জানায় তারা দুইজনের কেউ এই হত্যাকাÐে জড়িত নয়। পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেন এই হত্যাকাÐের মূলহোতা আবু মুছা। তার নেতৃত্বে খুনি চক্রের সদস্যরা মিতুকে খুন করে। তার সাথে হত্যা মিশনে অংশ নেয় ৮ জন। সে টাকার বিনিময়ে তাদের এই কাজে লাগায়। তবে কেন এবং কার নির্দেশে মুছা মিতুকে হত্যা করলো তার কোন জবাব দিচ্ছে না পুলিশ। পুলিশ কমিশনার মো: ইকবাল বাহার বলেন, মুছাকে ধরা গেলেই কেবল এসব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত হত্যাকাÐের প্রকৃত রহস্য সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু বলা যাবে না বলেও জানান তিনি।
হত্যা মিশনে সরাসরি অংশ নেয়া ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছে, মুছা মিতুকে জঙ্গিদের অর্থযোগানদাতা হিসাবে তাদের চিনিয়ে দেয় এবং তাকে হত্যা করতে বলে। মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ছিলেন সফল। অথচ তার স্ত্রী মিতুর মতো একজন সাধারণ গৃহবধূকে জঙ্গির অর্থদাতা অপবাদে কেন খুন করা হলো তারও কোন উত্তর নেই।
এদিকে মিতু হত্যাকাÐে অস্ত্র যোগানদাতা হিসাবে গ্রেফতার এহতেশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মনির হোসেনকে তিন দিনের রিমান্ডের অনুমতি পাওয়া গেলেও গতকাল পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়নি।a



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আস্থার সঙ্কটে পুলিশ

১২ জুলাই, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ