বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশালের গৌরনদীতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে পবিত্র কোরআন অবমাননা ও ইসলাম ধর্মকে কটুক্তি করায় বিক্ষুব্দ ছাত্রÑছাত্রী ও স্থানীয় মুসলিম জনতার হামলার শিকার হয়েছে উজ্জল কুমার রায় (৫০) নামের এক শিক্ষক। আমজনতার বিক্ষোভের মুখে পুলিশ রোববার রাতে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল মেদাকুল গ্রামের বি.এম.এস ইনস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক উজ্জল কুমার রায় রোববার সকালে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের ক্যামিষ্ট্রি ক্লাসে প্রটিন নিয়ে আলোচনাকালে মুসলিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মাছে প্রটিন আছে, গরুর মাংসে প্রটিন আছে, কচ্ছপে প্রটিন আছে। তবে গরুর মাংসের চাইতে কচ্ছপে প্রটিন বেশী আছে। তোমরা গরুর মাংস বাদ দিয়ে কাছিম (কচ্ছপ) খাবে, এতে ভিটামিন বেশী। ওয়াজ মাহফিলে তোমরা যে গরু জবাই করে খাও এটা ভন্ডামী, কোরআন ভূয়া।
পবিত্র কোরআন ও ইসলাম ধর্মকে নিয়ে এ রকম অনেক আপত্তিকর কথা তিনি মুসলিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ শিক্ষর্থীরা রোববার বিকেলে বাড়ি ফিরে তাদের অবিভাবকদেরকে ঘটনা জানালে তারাও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী, অবিভাবক ও এলাকাবাসী মিলে রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার মেধাকুল বাজারের কাছে ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালালে সে দৌড়ে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। সেখানে বিক্ষুব্ধরা হামলা চালালে ওই শিক্ষক দোকানের পেছন থেকে বেড়িয়ে পার্শ্ববর্তি খাল সাতরে পাড় হয়ে মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানা এলাকায় আশ্রয় নেয়। এরপর কালকিনি থানা পুলিশের সহয়তায় গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক ওই এলাকা থেকে শিক্ষক উজ্জল রায়কে উদ্ধার ও আটক করে।
অপর দিকে এ ঘটনার জের ধওে সোমবার সকাল থেকেই এলাকার ধর্মপ্রান মুসল্লীসহ সর্বস্তরের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা মিলে ওই শিক্ষকের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা প্রকার ক্ষোভ প্রকাশ করায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহয়তায় ঘটনার উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার পাশাপাশি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখে।
সোমবার বিকেলে এ নিয়ে ওই বিদ্যালয় মাঠে এক শান্তি ও সম্প্রীতি বৈঠক বসে। বৈঠকে গৌরনদী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ হারিছুর রহমান, গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রব হাওলাদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ হোসেন সুন্সী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নুর আলম সেরনিয়াবাত, গৌরনদী থানার ওসি (তদন্ত) তদন্ত মোঃ মাহবুবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল বারি বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে পৌর মেয়র ঘোষণা দেন যে আলোচনর মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করেছি। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও ঘটনা তদন্তে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে আর যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।