Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘নির্লজ্জ!’ হোর্ডিং কাণ্ডে আদালতে মুখ পুড়ল যোগী সরকারের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ৫:০২ পিএম

রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিএএ প্রতিবাদীদের হোর্ডিং টাঙিয়ে মুখ পুড়ল উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের। ওই হোর্ডিংগুলি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। সব হোর্ডিং সরিয়ে আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রিপোর্ট দিতে হবে, নির্দেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনা ‘সাধারণ মানুষের গোপনীয়তায় অনুচিত হস্তক্ষেপ’। প্রশাসনের ‘নির্লজ্জ’ কর্মকাণ্ড বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা।

সোমবারের শুনানিতে সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত খড়গহস্ত ছিলেন ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর। সরকার পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘এই সব ছবি টাঙিয়ে আপনার গোপনীয়তা, শ্রদ্ধা ও স্বাধীনতা নষ্ট করেছেন। আপনাদের উচিত ওই হোর্ডিংগুলি সরিয়ে ভুল সংশোধন করা।’’ রায়ে বলা হয়েছে, এই মামলা এমন নয় যে, কোনও ব্যক্তি অন্য কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করেছে যাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যানারে দেওয়া হয়েছে। বরং সাংবিধানিক মূল্যবোধে আঘাত করেছে এবং প্রশাসনের নির্লজ্জ প্রদর্শন হয়েছে। এটা সরকারের অগণতান্ত্রিক কাজ, যাঁদের দায়িত্ব হল সব সময় জনগণের সঙ্গে সম্মান ও সৌজন্যমূলক আচরণ করা যা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষিত হয়।’’


তবে সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হয়, ‘‘জনস্বার্থে হস্তক্ষেপ করছে আদালত।’’ তার জেরে আরও ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ন্যায় বিচারের জন্যই আদালত। চোখের সামনে কারও সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার হলে কোনও আদালতই চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না।’’


এই হোর্ডিং ঘিরে হাইকোর্ট যে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ, তা বোঝা গিয়েছিল রবিবারই। ছুটির দিনেও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে শুনানির নজির খুব একটা নেই। অথচ সেই ঘটনাই ঘটেছিল গতকাল। সেই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর বলেছিলেন, ওই ঘটনায় ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার লখনউ শহরের
বড় রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৫৩ জনের ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙায় যোগীর প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। রয়েছে কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সাদাফ জাফরের নাম-ছবিও।

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই হোর্ডিংগুলি পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে। সিএএ প্রতিবাদীদের আন্দোলনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের জেরে বিপুল সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতিপূরণ এই সব অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা হবে বলেও প্রশাসন স্থির করেছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ