মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যতম মুসলিম স্থাপত্য হলো ইস্পাহানে অবস্থিত কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ । ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম শহরে ইতিহাসের কোন ক্ষণে ঐতিহাসিক এ মসজিদটির নির্মিত হয়, সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, এ মসজিদের অস্তিত্ব পঞ্চম হিজরির আগে থেকে। এটি বারোশ’ শতাব্দীতে পুনর্নির্মাণ করা হয়। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে ২০১২ সালে এই মসজিদ-স্থাপত্যটিকে ঘোষণা করেছে। গোটা মসজিদটি আইওয়ান নির্মাণশৈলীতে নির্মিত।
জানা যায়, ঐতিহাসিক এ মসজিদটি ইসফাহান শহরের পুরানো অংশে অবস্থিত। যেটি সাবজে ময়দান (সবুজ ময়দান) নামে পরিচিত। মসজিদটির প্রত্নতাত্ত্বিক খননকালে বেশ কিছু প্রাচীন দলিল ও দস্তাবেজের সন্ধান পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এসব দলিল দায়লামি, সেলজুক, মোঙ্গল এবং সাফাভি আমলের। ইসলামের বিভিন্ন যুগের স্থাপত্যরীতির সমন্বিত এক অপরূপ নিদর্শন এ মসজিদ। মসজিদে আগত দর্শকের দৃষ্টিতে ইসলামী ঐতিহ্যের বিভিন্ন স্মৃতি ও যুগ-পরম্পরা ভেসে উঠবে নিমিষেই।দর্শনার্থী যেন মুগ্ধ না হয়ে পারে না। মসজিদের আটটি প্রবেশ পথ রয়েছে। সবেচেয়ে পুরানো প্রবেশ পথটি হাতেফ সড়ক অভিমুখি। এ পথটির স্থাপত্য-শৈলীর সুনিপুঁণ কারুকাজে দর্শক মাত্রই মুগ্ধ হবেন। প্রবেশ পথের ডান পাশে ছোট ছোট প্লাটফর্ম রয়েছে। বাম পাশের স্তম্ভ শ্রেণি সেলজুক আমলের স্থাপত্য রীতিতে তৈরি। মসজিদের দক্ষিণ সিঁড়ির নাম ‘সুফফেহ সাহেব’। সিঁড়িটি ৬ষ্ঠ হিজরির বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত। তবে ভেতরে ও বাইরের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজগুলো সাফাভি আমলে করা হয়েছে। ‘হাসান বেগের সময়ে’ সিঁড়িসংলগ্ন সুদৃশ্য মিনারগুলো সংযোজন করা হয়েছে।
এর উঠানের দক্ষিণ একটি সুদৃশ্য গম্বুজ রয়েছে। নাম খাজা নিজামুল মুল্ক গম্বুজ। সেলজুক সুলতান মালিক শাহের উজির নিজামুল মুল্ক এটি নির্মাণ করেন। পঞ্চম হিজরিতে নির্মিত এ গম্বুজের পার্শ্ববর্তী স্থানে সেলজুক আমলের আরো কিছু স্তম্ভ রয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিম পাশের স্তম্ভটি শাহ আব্বাস সাফাভির আমলে তৈরি। মসজিদের পূর্ব সিঁড়ির নাম সুফফেহ শাগেরদ। ৬ষ্ঠ হিজরিতে সেলজুক আমলে এটি তৈরি করা হয়েছে। আরেকটি সিঁড়ি রয়েছে সুফফেহ ওমর। এটি কুতুবউদ্দিন মাহমুদ শাহের আমলে তৈরি করা হয়েছে। তিনি আল-মোজাফফর বংশের নৃপতি ছিলেন।
মসজিদের পশ্চিম সিঁড়ির নাম ‘সুফফেহ ওসতাদ’। এটিও ৬ষ্ঠ হিজরিতে নির্মিত। এর সিরামিক টাইলের কাজগুলো সাফাভি বংশের শাহ সুলতান হোসাইনের আমলে সম্পন্ন হয়। পশ্চিম সিঁড়ির উত্তর পাশে একটি ছোট মসজিদ রয়েছে। এটি তৈরি করেছিলেন মোঙ্গল শাসক ওলজাইতু।
মসজিদের উত্তর পাশের সিঁড়ি ‘সুফফেহ দরবেশ’। এটিও অবশ্য ৬ষ্ঠ হিজরিতে তৈরি। এর অভ্যন্তরে প্লাস্টারের কাজ ও নকশা সাফাভি সুলতান শাহ সুলায়মানের আমলে সম্পন্ন করা হয়। এর বাইরের টাইলে অলংকরণ হয় অনেক পরে ১৩৩৬/১৩৩৭ হিজরিতে।
ইসফাহান জামে মসজিদের উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো, সুদৃশ্য তাজউল মূল্ক গম্বুজ। সেলজুক আমলের স্থাপত্যকলার অপূর্ব নিদর্শন বয়েছে এ গম্বুজে। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ইসফাহানের এ মসজিদটি পরিদর্শনে আসেন। সহস্রাব্দের বিবর্তনে মসজিদটি যেমন ঐতিহাসিক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে, তেমনি ইরানের পর্যটন শিল্পের জন্যও হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।