গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : নিয়মিত জোয়ারে ভাসছে বন্দরনগরীর আগ্রাবাদ-হালিশহরসহ বিশাল এলাকা। বসতবাড়ি, ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, আড়ত, গুদাম, হাসপাতাল থেকে শুরু করে সবকিছুই প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে ওইসব এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দা। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছে মন্দাভাব। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনও ব্যাহত হচ্ছে।
গত দুই দিনে ভারীবর্ষণ হয়নি। এরপরও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে এসব এলাকা। স্থানীয়রা বলছেন, মহেশখালের উপর নির্মিত বাঁধের কারণে কিছু কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যে উদ্দেশে অস্থায়ী এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা সফল হয়নি। বাঁধের ফলে দুই এলাকার লোকজনেরই ভোগান্তি বেড়েছে। অপরিকল্পিত এ বাঁধ দুই এলাকার জন্যই এখন বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, পানিবন্দি দক্ষিণ মধ্য হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে ঈদের একদিন আগে মহেশখালের উপর নির্মিত বাঁধের বাইপাস ও গেইট বাল্ব খুলে দেয়। এর আগে গত ২১ মে স্থানীয় লোকজন বাঁধটি কেটে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। ওই সময় পুলিশ বাধা দিতে চাইলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছুড়ে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাঁধের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, ঈদের দিন থেকে ছোটপুল, বেপারীপাড়া, শান্তিরবাগ আবাসিক এলাকা, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, সিডিএ আবাসিক এলাকা, আবিদরপাড়া, আনন্দিপুর, নয়াবাজার সড়ক, হালিশহর কে ও এল বøক, পোর্ট কানেক্টিং রোড, বড়পুল, আদর্শপাড়া, মুন্সিরপাড়া এবং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা কার্যত পানিবন্দি। জোয়ারের সময় পুরো এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে পানি উঠে গেছে। এতে করে চিকিৎসা সেবা বিঘিœত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছে রোগী ও চিকিৎসকেরা।
স্থানীয়রা বলছেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে বন্দর রিপাবলিক স্কুলের পাশে মহেশখালের উপর বন্দর কর্তৃপক্ষ যে বাঁধ নির্মাণ করে তার কারণেই তারা ভোগান্তিতে পড়েন। জোয়ারের পানি থেকে স্থানীয় লোকজনকে রক্ষায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে এ বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হলেও বাঁধটি এখন জনদুর্ভোগের আরো বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের দাবি, জোয়ারের সময় পানি দ্রæত প্রবেশ করলেও ভাটার সময় বাঁধের কারণে দ্রæত নামতে পারে না।
এদিকে, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে মহেশখালের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটি কার্যকর করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছে বিনিয়োগ বোর্ড। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দর নগরী চট্টগ্রাম শহরে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি হতে সৃষ্ট পানিবদ্ধতা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে প্রতিকূল এবং বিরূপ ধারণার সৃষ্টি করছে, যা দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে না। বছরে প্রায় ছয় মাস বিভিন্ন খাল দিয়ে প্রবেশ করা স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে শহরের অনেক এলাকা তলিয়ে যায়।
প্রতিবছর বেড়েই চলেছে এই পানির উচ্চতা। বন্দর সংলগ্ন মহেশখাল এরূপ একটি পয়েন্ট যার কারণে আগ্রাবাদ হালিশহর, গোসাইলডাঙ্গা, নিমতলা, পোর্ট আবাসিক এলাকার একটি অংশ জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষের স্বাভাবিক জীবন এবং ব্যবসা বাণিজ্য। এই আধুনিক যুগে জোয়ারের পানিতে একটি পোর্ট সিটির অনেক এলাকা তলিয়ে থাকা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।