গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
মালেক মল্লিক : তথ্যপ্রযুক্তির বদলে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। বর্তমান সরকারের ¯েøাগান অনুযায়ী কম-বেশি সবখানেই লেগেছে ডিজিটালের ছোঁয়া। পিছিয়ে নেই বিচার বিভাগও। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিচার বিভাগে ডিজিটালাইজেশনের জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। উচ্চ আদালতে অনলাইন কার্যতালিকা, অনলাইন বেইল কনফারমেশন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ (পরীক্ষামূলক চালু), অনলাইন বুলেটিন, বিচার বিভাগীয় তথ্য বাতায়ন উল্লেখযোগ্য। এসব চালুর ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি যেমন কমছে, মামলা নিষ্পত্তির হারও বাড়ছে। সর্বশেষ নয়া উদ্যোগ হলো সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাইব্রেরিকে ই-লাইব্রেরিতে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কেবল প্রথম কোনো সুপ্রিম কোর্টের লাইব্রেরি ই-লাইব্রেরিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। এটা চালু হলে সুপ্রিম কোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিরা যে কোনো সময় যে কোনো বই এক ক্লিকেই পাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ই-লাইব্রেরি একটা বড় বিষয়। মাত্র প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি অতি দ্রæত এই কাজের সফলতা আসবে। প্রধান বিচারপতির একান্ত প্রচেষ্টায় এটা চালু হচ্ছে। এদিকে লাইব্রেরি চালু করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীরা। তারা বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তির বদলে সারা বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। বিচার বিভাগও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো সুপ্রিম কোর্টে ই-লাইব্রেরি। এটি বিচার বিভাগের জন্য যুগান্তরকারী পদক্ষেপ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বিচারকার্য আরো গতিশীল করতে বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নানা উদ্যোগ নেয়। বিশেষ করে জামিন জালিয়াতি প্রতিরোধে বেইল কনফারমেশন। আদালতে (বেইল কনফারমেশন) চালু হওয়ায় মাসের পর মাস কারাগারে সাজা ভোগ করতে হচ্ছে না আসামিদের। এর ফলে নি¤œ আদালতে কয়েকটি ভুয়া জামিন জালিয়াতির ঘটনা ও বিচার অঙ্গনে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমছে। এবার সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতিদের বিচারকার্য পরিচালনা করতে লাইব্রেরির বইয়ের জন্য অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। ফলে বিচারকার্যে এক ধরনের শ্লথ গতি নেমে আসে। এতে বিচারপ্রার্থীদের পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। এসব বিষয় চিন্তা করে ই-লাইব্রেরি চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ইতোমধ্যে হাইকোর্টের দুইজন বিচারপতি দিয়ে একটি কমিটি করে গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়। এটি চালু হলে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কেবল প্রথম কোনো সুপ্রিম কোর্টের লাইব্রেরি ই-লাইব্রেরিতে রূপান্তরিত হবে বলে জানা গেছে। ই-লাইব্রেরির আগে সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান জাজেস লাইব্রেরিটিকে প্রথমে অটোমেটেডের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি ই-লাইব্রেরির জন্য চলবে স্ক্যানিংয়ের কাজও। টেন্ডারসহ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগস্ট থেকে কোহা সফটওয়্যারের মাধ্যমে আটোমেটেডের কাজ শুরু হতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে। আর আটোমেটেডের কাজ শেষ হতে পারে এ বছরই। তবে সময় লাগতে পারে ই-লাইব্রেরির কাজ শেষ হতে। বর্তমানে ১ লাখের ওপরে বই রয়েছে জাজেস লাইব্রেরিতে। তবে প্রয়োজন হলে বিচারপতিরা যে কোনো বই তাৎক্ষণিক নিয়ে নেন। আবার অনেক সময় বিচারপতিরা বই কিনে বিল পাঠিয়ে দেন লাইব্রেরি শাখায়। কিন্তু লাইব্রেরি ব্যবহারকারীদের আইডেন্টিফিকেশন কার্ড না থাকায় কার নিকট কতটি বই রয়েছে তার হিসাব সঠিকভাবে রাখা যাচ্ছে না। আর বইগুলোতে সঠিক পদ্ধতিতে অ্যাসোসিয়েশন নাম্বার দেয়া না থাকায় প্রকৃত সংখ্যাও নিরূপণ করা যাচ্ছে না। জানা গেছে, অটোমেটেড হলে সুপ্রিম কোর্টে অবস্থানের সময় সংশ্লিষ্টরা নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কোন বই কোথায় আছে খুব সহজে সেটা জানতে পারবে। এছাড়াও অটোমেটেডের মাধ্যমে বইয়ের অবস্থান, সারকুলেশন, রিটার্ন এবং সটিংসহ যাবতীয় কাজ কম্পিউটারের মাধ্যমে খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে করা যাবে। আর ই-লাইব্রেরি হলে যে কোনো স্থান থেকেই পড়া যাবে বই। সে ক্ষেত্রে সবার জন্যই বই পড়ার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের পুরাতন ভবন এবং অ্যানেক্স ভবনে জাজেস লাইব্রেরির কার্যক্রম চলছে। তবে ই-লাইব্রেরির জন্য স্থায়ীভাবে অ্যানেক্স ভবনের ক্রিমিনাল আপিলের একটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।