Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত নারকেলগাছ

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

খুলনা শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ। ক্যাম্পাসে রয়েছে বেশ কিছু নারকেলগাছ। এর একটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি। ১৯৭২ সালে খুলনা সফরে এলে গাছটি লাগিয়েছিলেন তিনি।
কলেজের প্রধান ফটক পার হলেই দেখা মিলবে নারকেলগাছটির। ৪৮ বছরে গাছটি অনেক বড় হয়েছে। ফলও ধরেছে। গাছটির চারপাশ ঘিরে রাখা হয়েছে কালো পাথরের বেদি দিয়ে। পাশে আছে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ মূর্তি।
খুলনা সরকারি মহিলা কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে রোপনকৃত নারকেলের চারাটি এখন পূর্ণাঙ্গ গাছে পরিণত হয়েছে। গাছটি থেকে ১৩টি চারাও তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে।
পাশপাশি বঙ্গবন্ধুর এই স্মৃতিকে দেখতে প্রতিনিয়ত খুলনার বয়রাস্থ সরকারি মহিলা কলেজে আসছেন দর্শনার্থীরা। যার কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ নারকেল গাছটিকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। নারকেল গাছটি নিয়মিত পরিচর্যা করছেন খুলনার হর্টিকালচার সেন্টার। এছাড়া নারকেল গাছটি ঘিরে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’ তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মরহুম প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানসহ কয়েজন নেতা-কর্মী এসেছিলেন সরকারি মহিলা কলেজে। এই সময় তিনি নারকেল গাছের চারা রোপন করেন। তৎকালীন সময়ে কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন আনোয়ারা বেগম রানু। বর্তমান কলেজ চত্ত্বরে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তেই দেখা মিলবে নারকেল গাছটি। গাছটির চারপাশে টাইলস এবং এসএস পাইপের সুদর্শন চত্ত¡র। তার পাশেই রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। যা ২০১১ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক উদ্বোধন করেন। চারা রোপনের পর থেকে তেমন পরিচর্যা না হলেও ২০০৮ সাল থেকে গাছটিকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে কাজ শুরু করে কলেজ কতৃপক্ষ। বর্তমানে গাছটির পরিচর্যায় রয়েছে হর্টিকালচার সেন্টার। তাদের পরামর্শ মত মৃতপ্রায় গাছটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। গাছটির ফল থেকে ১৭টি চারা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ৪টি চারা মারা গেছে। আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট, সরকারি বিএল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এগুলো বিতরণ করা হবে।
খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর টি এম জাকির হোসেন বলেন, গাছটি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো। সে দৃশ্য একটি সাদা-কালো ছবিতে সংরক্ষন করে রাখা হয়েছে। যে ছবিতেই ফুটে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর নারকেলগাছ লাগানোর চিত্র।
তিনি আরো জানান, পঁচাত্তর-পরবতী সময়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা হয়নি। অযত্ম আর অবহেলায় ছবিগুলো অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। ছবিগুলো পাওয়ার পর তা বাঁধাই করে রাখা হয়েছে। ছবিগুলোতে তৎকালীন অধ্যক্ষ আনোয়ারা বেগম ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানও রয়েছেন।
তিনি বলেন, কলেজে যোগ দেওয়ার পর জানতে পারি, ওই নারকেলগাছটি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো। তারপর থেকেই এটার যত্ম নেওয়ার ব্যবস্থা করি। গাছটি দেখে কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।’ আমরা গাছের ফল থেকে চারা তৈরি করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করার জন্য প্রস্তুত করেছি। এছাড়া গাছটিকে ঘিরে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা করছি। তিনি দাবি করেন, খুলনায় একমাত্র এই কলেজটিতেই বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে রোপনকৃত নারকেল রয়েছে।
বাংলা বিভাগের মাস্টার্ষ শেষ বর্ষের ছাত্রী আজমেরী খাতুন বলেন, কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা গর্বিত। বঙ্গবন্ধুর কিছুটা হলে আমরা ছোয়া পেয়েছি। দর্শন বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী শাবনূর নাহার বলেন, নারকেল গাছটি সবাইকে আকর্ষণ করে। যে কোন দিবসসহ দর্শনার্থীরা নারকেল গাছটি দেখতে এখানে আসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধু

৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ