মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেছেন, ‘ইসলামাবাদের সাথে আফগানিস্তানের যে কোনও সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রকে না জড়িয়ে বরং দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করা উচিত।’ রোববার শান্তি প্রচেষ্টার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-আফগানিস্তানের যৌথ ঘোষণার প্রেক্ষিতে তিনি এই কথা বলেন।
গত শনিবার দোহায় তালেবান ও আমেরিকার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার এবং ন্যাটো সেক্রেটারি-জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ। চুক্তির একটি ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যাতে উভয় পক্ষের কোন এলাকায় কোন কর্মকান্ডের জন্য অন্য পক্ষের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন না হয়।’
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি উল্লেখ করে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘তাদের সরাসরি পাকিস্তানের সাথে কথা বলা উচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং আমরা সর্বদা প্রতিবেশী থাকব।’ তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের সাথে আমার যদি সমস্যা হয় তবে আমি ওয়াশিংটনকে ভূমিকা নিতে বলব না।’
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বৈরিতা বজায় রয়েছে। আফগানিস্তান পাকিস্তানকে তালেবান নেতাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করে। কিন্তু ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আফগানিস্তানকে পাল্টা দোষারোপ করে। কাবুলও এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
কুরেশি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে এবং পাকিস্তান সেই বিশ্বাসের ঘাটতি মেটাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, দু্ই দেশের মধ্যে এমন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে যার মাধ্যমে আফগানিস্তান আমেরিকার দিকে ঝোঁকার পরিবর্তে যে কোন সমস্যা সরাসরি পাকিস্তানের কাছে উত্থাপন করতে পারে। তিনি জানান, দোহায় মার্কিন-তালেবান চুক্তি কখনই ঘটত না, যদি পাকিস্তান সবাইকে না বোঝাত যে আফগানিস্তানের ১৮ বছরের সংঘর্ষের সামরিক সমাধান নেই।
দোহার চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালময় খলিলজাদ ও তালেবান রাজনৈতিক প্রধান আবদুল গণি বড়দার স্বাক্ষর করেছেন। কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাওয়াতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মুহাম্মদ কোরেশি মার্কিন-তালেবান চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রতীকী অর্থে ও ভাবার্থে আফগানিস্তান ও এর আশপাশের অঞ্চলের জন্য এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।
শাহ মুহাম্মদ কোরেশি বলেন, এই শান্তি চুক্তিটি আফগানিস্তানে শান্তি ও পুনর্মিলন আনতে মার্কিন ও তালেবানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি এই চুক্তি বাস্তবায়নে কাতারের আমিরের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এই আগ্রগতির পর আফগানিস্তানের নিজেদের মধ্যে আপস-আলোচনা করাটা হবে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ। তিনি আশাবাদ জানান, আফগানিস্তান এই ঐতিহাসিক সুযোগ গ্রহণ করবে এবং আশপাশের অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই শান্তি আনতে কার্যকরভাবে রাজনৈতিকে সমঝোতায় আসবে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি দেয়ার ওপরও জোর দিয়ে বলেন, পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন শুরু করতে আফগানিস্তানের পূর্ণ সমর্থনের প্রয়োজন হবে।
পাকিস্তানে আফগান শরণার্থীদের বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আফগান সরকারকে এই শরণার্থীদের পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরে নেয়ার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে সহযোগিতা করার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দীর্ঘমেয়াদি শান্তি, স্থিতি, উন্নয়ন ও অর্জনে আফগানিস্তানের জনগণকে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, এই শান্তি চুক্তির অগ্রগামিতায় পাকিস্তান তার দায়িত্বের অংশটি পূর্ণভাবে পালন করেছে। পাকিস্তান একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, ঐক্যবদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তান গঠনে নিজেদের ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের সমর্থন অব্যাহত রাখবে। সূত্র: রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।