পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিজে আগুনে দগ্ধ। হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। সে যন্ত্রণা ছাপিয়ে বার বার নিজের সন্তানের খবর নিয়েছেন এই মা। সন্তানকে দেখার আকুতি জানিয়েছেন। তার ছোট্ট আদরের ধন যে ঘটনার দিনই মারা গেছে, তা তিনি জানতেন না। সন্তানকে দেখার আকুতির মধ্যে গতকাল তিনি নিজেই চলে গেলেন। রাজধানীর দিলু রোডে পাঁচতলা ভবনের অগ্নিকান্ডে ঘটনায় দগ্ধ জান্নাতুল ফেরদৌস গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এর আগেই গত বৃহস্পতিবার সকালে দগ্ধ হন জান্নাতুল ফেরদৌস ও তার স্বামী শহিদুল করমানি। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের বান ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আগুনে শহিদুলের শরীরের ৪৩ শতাংশ ও জান্নাতুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে জান্নাতুল ফেরদৌসকে আইসিইউতে স্থানাস্তর করা হয়।
ঢামেক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, তিনদিন পর জান্নাতুল ফেরদৌস গতকাল সকালে মারা যান। এছাড়াও তার স্বামী শহিদুল কিরমানীর শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। গতকাল সকালে তাকেও আইসিইউতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে, জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় তার ননদ শেখ রেশমা সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিকান্ডের পরপরই ভাবী ও ভাইকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে ছুটে আসি। সেখানে দেখতে পাই ভাবী ও ভাই যন্ত্রনায় ছটফট করছেন। শ্বাসকষ্ট অবস্থায় ভাবী বার বার বলছিলেন রুশদী কোথায়? তাকে আমি একটু দেখতে চাই। তবে তাকে রুশদীর মৃত্যুর খবর বলা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, ভাবীকে সান্তনা দিলে বললাম রুশদী ভালো আছে। চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে আসতে দেবে না। এখানে এলে রুশদীর ক্ষতি হবে। এর উত্তরে ভাবী অনেক কষ্ট করে বলছিলেন, তাহলে আমাকে নিয়ে চলো আমার সন্তানের কাছে।
কান্না জড়িত কণ্ঠে রেশমা বলেন, আমার ভাবীর ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তিনি একেবারেই চলে গেলেন রুশদীর কাছে।
উল্লেখ্য, নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে রাজধানীতে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তার স্বামী শহিদুল কিরমানিও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। পরে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) পাস করেন। কর্মজীবনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তিনি।
এদিকে, গতকাল জান্নাতুল ফেরদৌসের লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদীতে নেয়া হয়। সেখানে তার সন্তান রুশদীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।