রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ড্রেজিংয়ের ফলে পাল্টে গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গড়াই নদীর পানি প্রবাহের চিত্র। অপসারণ করা হচ্ছে ১২৪ লাখ ঘনমিটার বালু। ড্রেজিংয়ে গড়াই নদী ফিরে পাচ্ছে তার পুরোনো রূপ। ড্রেজিংয়ে প্রথম দিকে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কিলোমিটার। সে অংশে প্রায় ৬০ লাখ ঘনমিটার বালু ও পলিমাটি খননে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭ কোটি টাকা। সেখানে ইতিমধ্যে খনন হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ ঘনমিটার। পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় পুরো অঞ্চলের কৃষক বেশ খুশি। তাদের আশা এবার ফসল উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি হবে।
ড্রেজিংয়ের কারণে নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়েছে। গড়াইয়ের পানি বৃদ্ধির ফলে সুন্দরবনসহ এ অঞ্চলে নোনা পানির আগ্রাসন বন্ধ হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। কুষ্টিয়া ছাড়াও মাগুরা, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, যশোর ও খুলনা হয়ে সুন্দরবনে গিয়ে পড়েছে নদীটি। সুন্দরবন ছাড়াও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে নোনা পানির আগ্রাসন রুখতে বড় ভূমিকা রাখে গড়াইয়ের মিঠা পানি। এর ফলে আবহাওয়া, পরিবেশ জীব বৈচিত্রসহ অত্র অঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ব্যবস্তার উন্নতি হবে।
জানা যায়, সুন্দরবনসহ জীববৈচিত্র রক্ষায় গড়াই খনন প্রকল্প নেয়া হয় ১৯৯৬ সালে আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর। এরপর ২০০৯ সালের পর দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠন করার পর ফের গড়াই খনন প্রকল্পে শতকোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ড দেশীয় অর্থায়নে মেইনটেইনিং কাজ চালিয়ে নদীকে সচল রাখার চেষ্টা করে। সুন্দরবনকে রক্ষা ও নোনাপানির আগ্রাসন রুখতে সারাবছর মিঠাপানির প্রবাহ সচল রাখতে প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও দৃশ্যত তেমন কোনো ফল ফলেনি বলে জানায় পরিবেশবিদরা।
নদীকে আগের রুপে ফিরিয়ে আনতে ১৯৯৭ সালে সর্ব প্রথম তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গড়াই নদীর মুখে মাটি কেটে পরীক্ষামূলক নদী খননের কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, গড়াই নদীকে সচল রাখতে পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী গত বছরের ২৪ অক্টোবর উৎসবমুখর তালবাড়িয়া থেকে শুরু হয় খননকাজ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর ৬০ লাখ ঘনমিটার বালু অপসারণ করা হবে। জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও তার আগেই এ কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে খনন হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ ঘনমিটার। সংশোধনী লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ১৩.৩৩ কিলোমিটার অংশে ১২৪.৪৫ লাখ ঘনমিটার। এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।
প্রকৌশলীরা জানান, অনেক স্থানে মাটি ও বালু ফেলার জায়গা নেই। এতে খনন কাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে।
গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাজমীর হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে ৫ কিলোমিটার খননকাজ শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় অনেক বেশি চওড়া করে খননকাজ হচ্ছে। নদী থেকে বালু কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার দূরে ফেলা হচ্ছে। যাতে বৃষ্টিতে এ বালু নদীতে না আসে। পুরো খননকাজ শেষ হলে নদীর চিত্র অনেকটা বদলে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প পরিচালক মনিরুজ্জামান জানান, খননের ফলে গড়াই নদী এখন সচল। পরিকল্পিত খননের ফলে এবার চিত্র বদলে গেছে। পানিপ্রবাহ ও লেভেল বেড়েছে। এ নদী বাঁচলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জীব বৈচিত্রসহ পরিবেশ রক্ষা পাবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, গড়াই কুষ্টিয়াসহ আশপাশের জেলার প্রাণ। এ নদীর সঙ্গে সুন্দরবনের মিঠাপানির সম্পর্ক রয়েছে। তাই অতীতে যেসব অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তারই পরিপ্রেক্ষিতে এবার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।