চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
জাদু একটি কুফরি ও ধ্বংসের কাজ। বড় গোনাহের মধ্যে জাদু অন্যতম। জাদুর কারণে মানুষের নেক আমলগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। জাদুকরদের জন্য পরকালে কোনো অংশ নেই বলে কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। এটি কবিরা গোনাহ।
শয়তানের মূল মিশন হলো মানুষকে সত্য ও ন্যয়ের পথ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া। শয়তান এ মিশন বাস্তবায়নে জাদুকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করছে। সে কারণেই কুরআন-সুন্নায় জাদুকে কুফরি ও ধ্বংসকারী কাজ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জাদু করা শয়তানের কাজ।
মানুষের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে কিংবা আমিত্ব প্রকাশের উদ্দেশ্যে যদি কেউ জাদু বিদ্যা প্রয়োগ করে তাও কুফরি এবং তা বড় গোনাহের কাজ। এর ভয়াবহতাও মারাত্মক। কুরআন এবং হাদিসে তা থেকে বিরত থাকতে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
জাদু কুফরি কাজের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণে জাদুকর এবং জাদু করা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে দীর্ঘ বক্তব্য তুলে ধরেন-
তারা ঐ শাস্ত্র বা বিদ্যার অনুসরণ করলো, যা (হজরত) সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেননি; শয়তানরাই কুফর করেছিল।
তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।
তারা (হারুত-মারুত) উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না।
অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যা দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তাদ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে।
তারা ভালরূপে জানে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্মবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।(সুরা বাকারা : আয়াত ১০২)
বর্ণিত আয়াতে জাদুকে কুফরি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর কুফরি করা হলো কবিরা গোনাহ। আর জাদু কবিরা গোনাহ হওয়ার কারণেই যারা এ গোনাহে জড়িত হবে, তাদের জন্য পরকালে কোনো অংশ বা প্রতিদান নেই ।
হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জাদু থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। জাদুকে ধ্বংসকারী কাজসমূহের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কি?
তিনি বললেন- ১. আল্লাহর সাথে শরিক করা; ২. জাদু করা; ৩. উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করা; ৪. আর আল্লাহ যা হারাম করেছেন তথা- সুদ খাওয়া; ৫. ইয়াতিমের মাল খাওয়া; ৬.জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা; ৭. সতী-সাধ্বী সরলমনা নারীদের প্রতি অপবাদ দেয়া। (বুখারি)
এ হাদিসের আলোকেও জাদু ধ্বংসকারী কাজের মধ্যে একটি। এ কাজ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
সুতরাং মানুষের আমল ধ্বংসকারী কুফরি কাজ জাদু থেকে বিরত থাকা ঈমানের একান্ত দাবি। কেননা, যে কোনো জাদুই ইসলামের সাথে কুফরি ও কবিরা গোনাহের শামিল।
মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে জাদু থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। অন্তরে এ সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠায়ও জাদু বাধা। সেজন্য এটিকে হারাম ঘোষণা করলেন মহান আল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।