পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ডুবে আছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) পরিচালিত সৈয়দপুর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। খন্ডকালীন প্রশিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ কোর্সের কাঁচামাল ক্রয়, প্রচার ও বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন ব্যয়ে এসব দুর্নীতির হয়েছে। অভিযোগ উঠছে শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক হুসনে আরা খাতুন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা নুরেল হকের যোগসাজশে এসব দুর্নীতি ঘটেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে কেন্দ্রটিতে শুধুমাত্র চারটি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ কোর্স চালু রয়েছে। তার মধ্যে কম্পিউটার অফিস প্যাকেজ এন্ড ইন্টারনেট ব্রাউজিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্সটি গেল তিন বছর আগে এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন গত ছয় মাস আগে শুরু করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর জন্য চারজন প্রশিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক্যাল হাউজ ওয়্যারিং এন্ড মোটর ওয়্যান্ডিং বিষয়ের কোর্সের প্রশিক্ষক পদটিতে স্থায়ীভাবে একজন প্রশিক্ষক রয়েছে। ওই বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন মো. লুৎফর রহমান। বাকি তিনটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এসব পদে প্রশিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রচারণা কিংবা জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকায় কোন রকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয় না কখনই। কেন্দ্র পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিজেদের পছন্দের লোককে নিয়োগ দিতে অতি গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে থাকেন।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ৬ মাস ব্যাপী কম্পিউটার অফিস প্যাকেজ এন্ড ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর দ্বিতীয় (মর্নিং শিফট) প্রশিক্ষণ কোর্সের নিয়োগে এ রকম লুকোচুরির আশ্রয় গ্রহণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই পদে লোক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় ২৪ ডিসেম্বর। আর আবেদন জমাদনের শেষ সময় ছিল গত ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু সৈয়দপুর বিসিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নোটিশ বোর্ডে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছিল না। এ সময় সরকারি বিশেষ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বিভিন্ন কারিগরী কলেজ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, নীলফামারী জেলা প্রধান পোষ্ট অফিসের নোর্টিশ বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঝুলানোর কথা। কিন্তু উল্লিখিত সরকারি অফিসসমূহের নোটিশ বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ঝুলাতে দেখা যায়নি।
এদিকে, প্রশিক্ষণ কোর্স গুলো শুরু আগে ব্যাপকহাবে প্রচার ও বিজ্ঞাপনের জন্য একটি নির্দিষ্টহারে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ইলেকট্রিক্যাল হাউজ ওয়্যারিং এন্ড মটর ওয়্যান্ডিং বিষয়ে প্রশিক্ষণের চার মাস মেয়াদি দ্বিতীয় কোর্সটির প্রচার ও বিজ্ঞাপনের জন্য ৩ হাজার টাকা, কাঁচামাল ক্রয়ের বাবদ ৮ হাজার এবং বিবিধ ব্যয় মেটানোর জন্য এক হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর বাইরে অস্থায়ীদের প্রশিক্ষকদের প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন-ভাতা হিসেবে ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকে। এভাবে প্রতিটি কোর্সের জন্য পৃথক পৃথক হারে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
সূত্র জানায়, কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চারটি বিষয়ের প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য এক সঙ্গে একটি ছোট সাইজের যৎসামান্য লিফলেট প্রকাশ করেন। এছাড়াও অল্প সময় মাইকিং করে প্রচারের বরাদ্দকৃত পুরো অর্থ পকেটস্থ করা হয়। আর কাঁচামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রেও একই কৌশল অবলম্বন করা হয়। যদিও প্রশিক্ষণ কোর্স অনুযায়ী কোটেশনের ভিত্তিতে যথাযথ নিয়ম মেনে কাঁচামাল ক্রয়ের নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না।
এদিকে, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের বিষয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা না থাকার কারণে আসন সংখ্যা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থী মিলছে না। যদিও সবনিম্ন ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে প্রশিক্ষণ কোর্স শুরুর কথা। কিন্তু বেশির ভাগ সময় দেখা যায় গুটি কয়েক প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহন করছেন। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি সূত্র জানায়, প্রশিক্ষণ কোর্স টিকিয়ে রাখতে প্রশিক্ষকরা ভ‚য়া নাম অন্তর্ভূক্ত করেন। আর এ ক্ষেত্রে তারা নিজের পকেট থেকে কেন্দ্রের ভর্তি ও প্রশিক্ষণ ফি জমা দেন।
সৈয়দপুর বিসিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের না প্রকাশে একজন প্রশিক্ষক অভিযোগ করেন, গত ১ নভেম্বর থেকে তার প্রশিক্ষন কোর্স শুরু হয়েছে। চলতি বছরের আগামী ২৯ ফেব্রæয়ারি তা শেষ হবে। অথচ এখন পর্যন্ত তাকে কোন রকম কাঁচামাল প্রদান করা হয়নি। কিন্তু বিগত দিনে কোর্সের বিষয় অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ক্রয়ের পর তা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে সরবরাহ দেওয়া হতো।
এ বিষয়ে কথা হয় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা মো. নুরেল হক সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি দুই দফায় কেন্দ্রটির অতিরিক্ত দায়িত্ব রয়েছি।
বিসিক নীলফামারী শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক হুসনে আরা খাতুন ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা মো. নুরেল হক কেন্দ্র পরিচালনায় তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। তারা উভয়েই বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি পরিচালনায় সরকারিভাবে পাওয়া বরাদ্দ যথাযথভাবে ব্যয়ে করা হচ্ছে। এখানে কোন রকম অনিয়ম ও দুর্নীতি করার সুযোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।