পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ-সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারার সংশোধন বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি ১৬ এপ্রিল। সরকারের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
সরকারপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। পরে মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ আবেদন করি। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জঙ্গিসহ বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় বিদ্যমান আইনের সঙ্গে কোনো কোনো নির্দেশনা অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। সে বিষয়গুলো আদালতে তুলে ধরতে আমরা রিভিউ করেছি।
এর আগে ১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তার মৃত্যু হয়। প্রায়ই একই সময়ে সীমা চৌধুরী নামের এক তরুণী চট্টগ্রামের রাউজানে পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি মারা যান।
অন্যদিকে অরুণ চক্রবর্তী নামের এক যুবক রাজধানীর মালিবাগ থানায় পুলিশ হেফাজতে মারা যান। পুলিশ হেফাজতে রুবেলের মৃত্যুর পর বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে ১১ দফা সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (বøাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, অরুণ চক্রবর্তীর স্ত্রীসহ কয়েকটি সংস্থা ও কয়েকজন ব্যক্তি।
ওই রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল বিচারপতি মো. হামিদুল হক ও বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৬ মাসের মধ্যে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের জন্য ৭ দফা সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে আদালত ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায়ে বলেন, আইন সংশোধনের আগে এই ১৫ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ে আরও বলা হয়, ডিটেনশন (আটকাদেশ) দেয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না। কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে গ্রেফতারের ৩ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে কারাগারের ভেতরে কাচ দিয়ে নির্মিত বিশেষ কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবেন। জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারী পরীক্ষা করাতে হবে ইত্যাদি।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে ২০১৬ সালের ২৪ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৪ সদস্যের বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, ৫৪ ও ১৬৭ ধারার কয়েকটি বিষয় সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় হাইকোর্ট কয়েক দফা সুপারিশ করেছিলেন। এ ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন (মডিফিকেশন) থাকবে। ৫৪ ও ১৬৭ ধারা প্রয়োগের বিষয়ে একটি নীতিমালা (গাইডলাইন) করে দেয়া হবে।
এরপর ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপিল বিভাগের ৩৯৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই আপিল আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে সরকার। সেটিরই শুনানির তারিখ ধার্য হলো গতকাল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।