Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাকেরগঞ্জ ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

ম্যাজিস্ট্রেটের ফৌজদারি ক্ষমতা প্রত্যাহার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে চার শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)সহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের ফৌজদারি ক্ষমতা প্রত্যাহার এবং সমাজসেবা অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রুলের চ‚ড়ান্ত নিষ্পত্তি করে গতকাল রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম জানান, বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানায় চার শিশুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় দেয়া রুল হাইকোর্ট চূড়ান্ত করেছেন। ৭ দফা নির্দেশনা দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে : (এক) চার শিশুকে গ্রেফতার ও থানা হেফাজতে আটক রাখাকে অবৈধ। (দুই) চার শিশুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা বাতিল। (তিন) বাকেরগঞ্জ থানার ওই সময়ের ওসিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। (চার) সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা। (পাঁচ) চার শিশুকে আটক করে প্রিজনভ্যানে করে আনা চার পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করে তাদের সাময়িক বরখাস্তকরণ। (ছয়) চার শিশুকে যশোরের পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনায়েত উল্লাহ ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার করে তাকে দেওয়ানি মামলার দায়িত্ব প্রদান। (সাত) শিশু আইন অনুযায়ী পুলিশের দায়িত্ব কর্তব্য গাইডলাইন আকারে প্রকাশ করে প্রত্যেক থানায় প্রচার করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ অক্টোবর রাতে যশোরের পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ৪ শিশুর জামিনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করে রাতেই শিশুদের এসি মাইক্রোবাসে করে তাদের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি চার শিশুকে যশোরের পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর ঘটনায় বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহকে তলব করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে চার শিশু ও তাদের অভিভাবকসহ বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়। রাত ৯টায় বিচারপতি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীম ভার্চুয়াল বেঞ্চ বসিয়ে ওই আদেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের এ আদেশ অবহিত হবার সঙ্গে সঙ্গে বরিশালের বিচারক চার শিশুকে জামিন দেন।
৬ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে চার শিশুকে আসামি করে গত বছরের ৬ অক্টোবর মামলা দেয়া হয়। এ মামলায় ওইদিনই চার শিশুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭ অক্টোবর তাদের বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ এক আদেশে ওই চার শিশুকে যশোর পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাদের যশোর পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এই সংবাদ বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের তৎকালিন ভার্চুয়াল বেঞ্চের নজরে আসে। রাতেই আদালত ভার্চুয়াল বেঞ্চ বসিয়ে আদেশ দেন। আদালতে শিশুদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফৌজদারি ক্ষমতা প্রত্যাহার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ