Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে ভারতীয়দের দাপট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:৪২ পিএম | আপডেট : ৪:৪৫ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

বাংলাদেশের বেসরকারি চাকরির বাজারে এখন ভারতীয়দের দাপট। বিশেষ করে তারা পোশাক, বায়িং হাউজ, আইটি এবং সেবা খাতে প্রাধান্য বিস্তার করে আছেন। এর পরেই শ্রীলঙ্কা চীনের অবস্থান। তবে মোট বিদেশির কমপক্ষে অর্ধেক ভারতীয়। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি ডয়সে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরা হয়। ‘বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে ভারতীয়দের দাপট’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি ইনকিলাব অনলাইন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
নানা কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতে ভারতীয়দের অবস্থান শক্ত। করোনা ভাইরাসের কারণে চীনাদের দাপট কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় ভারতীয়দের দাপট আরো বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গত ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে বাংলাদেশে মোট বিদেশি কর্মরত দুই লাখ ৫০ হাজার। তাদের মধ্যে বৈধ ৯০ হাজার। বাকিরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে আছেন। আর যারা বৈধভাবে আছেন তাদের মধ্যে ৫০ ভাগ কোনো অনুমতি না নিয়েই টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন। এই বিদেশিরা বছরে ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার করেন। টিআইবি বাংলাদেশে বিদেশিদের হিসাব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ২০১৮ সালে দেয়া ৮৫ হাজার ৪৮৬ জন বৈধ বিদেশির তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু বাস্তবে এই সংখ্যা বহুগুণ বেশি।
বাস্তব চিত্র আরো ভয়াবহ : বাংলাদেশে দু'টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে নানা কারণে পোশাক খাতে ভারতীয়দের অবস্থান শক্ত। এর মধ্যে পোশাক খাতে জিজাইনসহ আরো কয়েকটি বিষয়ে দক্ষ জনশক্তির অভাব আছে। আর পোশাকের বায়িং হাউজগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয়রা। ফলে পোশাক কারাখানাগুলো বায়ার পেতে তাদের কারখানায় মার্কেটিং এবং হিসাব বিভাগেও ভারতীয়দের নিয়োগ করে। তাদের মতে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে এক লাখেরও বেশি ভারতীয় কাজ করেন। অন্যদিকে বায়িং হাউজে এই সংখ্যা আরো আরো বেশি।
এর বাইরে আইটি খাতেও ভারতীয়দের দাপট। আরো অনেক সেবা খাত আছে যেখানে ভারতীয়রা কাজ করেন। এমনকি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম, বিজ্ঞাপন, কনসালটেন্সি এসব খাতেও ভারতীয়রা রয়েছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে কম করে হলেও পাঁচ লাখ ভারতীয় কাজ করে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশেরই কোনো ওয়ার্ক পারমিট নেই। তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় আসেন। আর তাদের বেতন অনেক বেশি। ট্যুরিস্ট ভিসায় যারা কাজ করেন তাদের আয়করা পুরো অর্থই অবৈধ পথে বাংলাদেশের বাইরে চলে যায়।
বাংলাদেশের আইটি খাতের একজন উদ্যোক্তা জানান, সফটওয়্যার ও ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ভারতীয় কৌশল ব্যবহারের কারণে ওই দেশের জনশক্তিকেও কাজ দিতে হয়। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে তাদের লোক রাখার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। আবার ট্রাভেল এজেন্টদের বড় একটি অংশ ভারতীয়দের নিয়ন্ত্রণে। তাই তাদের সফটওয়্যার ও তাদের লোক বলে কাজ হয়। এটা সরকারের পলিসির বিষয়। সরকার পলিসি ঠিক করলে তাদের দাপট কমবে।
বাংলাদেশের চাকরির বাজার নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হলো বিডিজবস ডটকম। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, কর্মরত বিদেশিদের মধ্যে ভারতীয়রাই শীর্ষে। তারপরে শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড। এদেরমধ্যে শতকরা ১০ ভাগেরও ওয়ার্ক পারমিট নেই। অধিকাংশই অবৈধভাবে কাজ করেন। তাদের পেমেন্টও এখানে করা হয়না। ভারতীয় হলে তার পেমেন্ট ভারতেই দেয়া হয়। যারা নিয়োগ করেন তারা এরকম একটা সিস্টেম গড়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশ থেকে কত রেমিটেন্স দেশের বাইরে যায় সেই হিসাবটি দেখলে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের সংখ্যা সম্পর্কে একটা ধারনা পাওয়া যায়। আর বাংলাদেশ থেকে ভারতেই বেশি রেমিটেন্স যায়। পোশাক খাতের আয়েরও বড় একটি অংশ তাদের টেকনিশিয়ান ও ডিজাইনাররা নিয়ে যান।
বিআইডিএসের অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ জানান, প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর এবার আমাদের রেমিটেন্সের টার্গেট ২০ বিলিয়ন ডলার। তাহলে আমরা যা আনতে পারি তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ আবার বিদেশি কর্মীদের দিয়ে দিতে হয়। এ থেকে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। এটা আমি বলছি বৈধ চ্যানেলের কথা। অবৈধভাবে কত যায় সেটা সরকার উদ্যোগ নিলে জানতে পারে। কিন্তু উদ্যোগ নেই। এই অর্থ সবচেয়ে বেশি যায় ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। আমার কাছে অবাক লাগে এখানে একাউন্টেন্ট, প্রশাসনিক কাজেও বাইরে থেকে লোক আনা হয়।



 

Show all comments
  • jack ali ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:১৯ পিএম says : 0
    Our Government don't know how to rule a country... Only they talk and boast they are developing our country defeating Europe.. We know what the government is doing to our beloved country... Our country just like a slum country. Our education system is crap... they produce just useless many graduates.. You cannot fit them any where...
    Total Reply(0) Reply
  • ash ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:৩০ পিএম says : 0
    ODER ... BER KORA KORA WICHITH !!
    Total Reply(0) Reply
  • দুঃখী বাংলাদেশি ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:৪৯ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের হিন্দুরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হইছে, এবং $১৬৩.০৯ বিলিয়ন ডলার ভারতে পাচার হইছে.
    Total Reply(0) Reply
  • SAIF ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:৫৭ পিএম says : 0
    very SAD to know it. Honorable PM what your ever you may try to do to escalate the country to up stem sorry to say it will be fail stap. because you can not secure any thing unless you remove your enemy of you competitors.
    Total Reply(0) Reply
  • সিরাজুদ্দৌলা ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:৪৮ পিএম says : 0
    ঘসেটি বেগমের চোদ্দ গুষ্টির বিচার হবে.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেসরকারি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ