Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মস্তিষ্কের স্বয়ংক্রিয়তা ও উদ্বেগ

চিন্তামুক্ত থাকার উপায়-১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

নতুন বছর আশা এবং উদ্বেগ উভয়ই এনে দেয়। নিজেদের এবং যাদের ভালোবাসি তাদের জন্য আমরা চাই সবকিছু আরও ভাল হোক। কিন্তু আমরা চিন্তিত থাকি যে খারাপ কিছু হতে পারে কিংবা ভবিষ্যতে কোন বিপদ আসতে পারে, এমন সব বিষয় নিয়ে। অনেকেই আবার অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়েও চিন্তা করেন। যেমন, কারা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারে বা আমাদের পৃথিবী টিকে থাকবে কি না।

দেখা যাচ্ছে যে, উদ্বেগ থেকেই মানুষের মনে বিরক্তি তৈরি হয়। আমাদের মস্তিস্ক ক্রমাগত ভবিষ্যত নিয়ে কল্পনা করে যা আমাদের প্রয়োজন হবে এবং সেটি পূরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন সব বিষয় বুঝতে সাহায্য করে। এবং কখনও কখনও এই প্রয়োজনগুলোর জন্য মানষিক বিরোধের সৃষ্টি হতে পারে। যেমন, কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিংবা সেগুলো পূরণে কতটা মূল্য দিতে হবে। উদ্বেগ হল, যখন সেই ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আমরা মশগুল হয়ে পড়ি এবং অন্য সবকিছু থেকে আমারা মনোযোগ হারিয়ে ফেলি। যাদের আমরা ভালবাসি তাদেরকে নিয়ে টেনশন, নিদ্রাহীন রাত, ব্যস্ততা এবং বিভ্রান্তি আমাদেরকে ঘিরে রাখে। উদ্বেগের প্রভাবগুলি অন্তহীন। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করার উপায় রয়েছে।

মেডিসিন এবং জনসংখ্যা এবং পরিমাণগত স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেমস কারমোডি বলেন, আমি চিকিৎসক এবং রোগী সবারই মন-দৈহিক নীতিগুলি গবেষণা করেছি এবং শিখিয়েছি। আমি খুঁজে পেয়েছি যে মনকে শান্ত করার অনেকগুলি পদ্ধতি রয়েছে এবং সেগুলোর বেশিরভাগই কয়েকটি সরল নীতির উপর নির্ভরশীল। সেগুলি বোঝা ও দৈনন্দিন জীবনে সেই কৌশলগুলো সৃজনশীলভাবে অনুশীলন চিন্ত মুক্ত থাকতে সহায়তা করবে।

আমরা সবাই সময়ের প্রবাহ অনুভব করি, যখন আমাদের মনোযোগ সম্পূর্ণভাবে কোন কাজে নিবদ্ধ থাকে। এ বিষয় নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা থেকে মানুষ যখন তাদের কাজে পূর্ন মনোযোগ দিতে পারে, তখন তাদের মনে আনন্দ বেড়ে যায়। অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, মানসিক শান্তি নষ্ট হওয়া সত্তে¡ও আমরা আমাদের মনকে সারাদিন ধরে কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে ছেড়ে দেই। বলে মনে হতে পারে যে আমরা সুখের ব্যয় সত্তে¡ও অর্ধ দিনের মতো কিছু ঘুরে দেখার জন্য আমাদের মন ছেড়ে যাই।

এর কারণ খুঁজে পাওয়া যায় আমাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ থেকেই। আমাদের মনোযোগ যখন কোন কাজে ব্যস্ত থাকেনা, অর্থাৎ অলস থাকে, তখন মস্তিষ্কের একটি অঞ্চলে ‘ক্রিয়া’ শুরু হয়। যেমন, স্বয়ংক্রিয় কোন সিস্টেমে হয়। কাজ না থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মস্তিষ্কের ওই এলাকা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই সিস্টেম অবচেতনভাবে আমাদের ভেতরে কাজ করে, আমাদের চাহিদা এবং আকাক্সক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ভবিষ্যত নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে।

মানব মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি করতে বিকশিত হয়েছে; অভাব এবং অন্যান্য হুমকির থেকে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর একটি খারাপ দিক রয়েছে, তা হলো ‘উদ্বেগ’। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু মানুষ তাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে একা থাকার চেয়ে ‘বৈদ্যুতিক শক’ বেশি পছন্দ করে।

চিন্তামুক্ত থাকার একটি উপায় ‘মাইন্ডফুলনেস’, আমাদের মনের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণের অনুশীলন, এটি সচেতনভাবে আমরা যা দেখি ও মানসিক চিন্তা-ভাবনার স্বয়ংক্রিয় ধারার বৈশিষ্ট্য অনুশীলন ও এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে সহায়তা করবে। সূত্র: এমআইসি। (আগামীকাল শেষ পর্ব)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মস্তিষ্ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ