Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে যত অর্জন

আজও অমলিন খুলনার সুখস্মৃতি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৬ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশকে টেস্ট খেলতে নামতে হবে কম্পমান আত্মবিশ্বাস নিয়েই। তবে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের আগে কিছু সুখস্মৃতির দ্বারস্থ হতে পারের মুমিনুল হক-মাহমুদউল্লাহ-তামিম ইকবালরা। যে সুখস্মৃতিগুলো নিশ্চিত করেই প্রেরণা জোগাবে রাওয়ালপিন্ডিতে ভালো কিছু করতে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এখনো টেস্ট জেতেনি। সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৫ সালে খুলনায় হারের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্ট ড্র করা। ২০০৩ সালে মুলতানের সেই প্রায় জিতে যাওয়া টেস্ট ম্যাচটি যদিও বড় আক্ষেপের কিন্তু পাকিস্তানের মাটিতে আরও একটি টেস্টের আগে সেটিই বড় কিছু করার মন্ত্র হোক না!

প্রথমবারের মতো লিড
পাকিস্তানের বিপক্ষেই প্রথমবারের মতো প্রথম ইনিংসে লিড নেয় বাংলাদেশ। সেটি ২০০৩ সালের সফরে পেশোয়ার টেস্টে। সেটি ছিল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পাকিস্তানের শোয়েব আখতার, শাব্বির আহমেদ, উমর গুল, দানিশ কানেরিয়াদের বোলিং দারুণভাবেই সামলেছেন। ১১৯ রানের ইনিংস খেলেন জাভেদ ওমর। অধিনায়ক বাশার দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফেরেন ৯৭ রানে। মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাট থেকেও এসেছিল ৭৭ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। এই তিন ব্যাটসম্যানের কারিশমাতে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ড তোলে ৩৬১ রান। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ২৯৫ রানে। মোহাম্মদ রফিক নেন ৫ উইকেট। হ্যাটট্রিক করে পাকিস্তানের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন অলক কাপালি।

সবচেয়ে কম ব্যবধানে হার
২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে যাত্রাটা খুব সুখকর হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংস ব্যবধানে হারতে হয়েছে অনেক টেস্টেই। হারতে হয়েছে বড় বড় ব্যবধানে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে ১ উইকেটের হারটি এখনো পর্যন্ত টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম ব্যবধানে হার। মুলতানে ইনজামাম-উল-হকের অনবদ্য অপরাজিত ১৩৮ রানের ইনিংস বাংলাদেশের জয় কেড়ে নিলেও ১ উইকেটের ব্যবধানে হার কিছুটা হলেও সান্ত¡না জোগায়।

তামিম-ইমরুলের সেই জুটি
২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। এ দুজনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল একটা সুন্দর শুরু। যাতে বাকি ব্যাটসম্যানরা সেই ‘শুরু’টাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবধানটা কিছুটা কমাতে পারেন। কিন্তু তামিম ও ইমরুল ওপেনিং জুটিতেই যে ৩১২ রান তুলে ফেলবেন—সেটা আর কে ভেবেছিল। এ জুটি দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিংয়ে এখনো পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ড হয়ে আছে। তামিম সেদিন দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন (২০৬)। ইমরুল করেছিলেন ১৫০। হারের শঙ্কা জাগানো সে টেস্টটি শেষ পর্যন্ত ড্র করেছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেটিই এখনো পর্যন্ত টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ড্র।

সর্বোচ্চ রান বাশারের
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে মুমিনুল-মাহমুদউল্লাহদের সঙ্গী হয়েছেন হাবিবুল বাশার। জাতীয় দলের অন্যতম নির্বাচক বাশার টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৫৫৪। এর মধ্যে ২০০৩ সালে পাকিস্তানের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজেই হাবিবুলের ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৭৯ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরি একটি, ফিফটি চারটি।

সাকিবের ডাবল
২০১১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে সাকিব আল হাসান খেলেছিলেন ১৪৪ রানের এক ইনিংস। শুধু তা-ই নয়, সে টেস্টেই আবার ৮২ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে এটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের সেরা পারফরম্যান্স হয়ে আছে। সে টেস্টে ৯৭ রানের একটা ইনিংস খেলেছিলেন শাহরিয়ার নাফীস।

কাপালির হ্যাটট্রিক
টেস্টে কোনো বাংলাদেশি বোলারের প্রথম হ্যাটট্রিকটি আসে পাকিস্তানের বিপক্ষেই। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে পেশোয়ার টেস্টে মাত্র ২.১ ওভার বোলিং করে মাত্র ৩ রান দিয়ে হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছিলেন লেগ স্পিনার-ব্যাটসম্যান কাপালি। পরপর তিন বলে সেদিন কাপালি ফিরিয়েছিলেন শাব্বির আহমেদ, দানিশ কানেরিয়া ও উমর গুলকে। এই হ্যাটট্রিকেই প্রথমবারের মতো প্রথম ইনিংসে লিড নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ